সময় ব্যবস্থাপনার পাঁচটি কৌশল
‘সময়ের মূল্য’ রচনা পড়েন নি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। মানুষের জীবন ও মৃত্যুর যেমন নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে, তেমনি বেঁচে থাকাকালীন জীবনের সব কাজের জন্য প্রতিটি মহূর্ত ও সময়ের নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে। ‘সময় গেলে সাধন হবে না’- এমন একটি বিখ্যাত গানও রয়েছে। তাই সময় ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে হতে হবে কৌশলী। সময় ব্যবস্থাপনার পাঁচটি কৌশল নিয়েঈ আজকের এই লেখা।
পোমোডোরো পদ্ধতি
এই পোমোডোরো পদ্ধতি হলো বিশ্বের জনপ্রিয় সময় ব্যবস্থাপনার কৌশল। মানুষের কর্মক্ষমতা সঠিকভাবে ব্যবহারের জন্য এ পদ্ধতিতে একটি মডেল দাঁড় করানো হয়েছে। পদ্ধতিটিতে কোনো কাজকে ২৫ মিনিটের ব্যবধানে বিভক্ত করা হয়, যাকে পোমোডোরো মডেল বলা হয়। মডেলটিতে প্রতি ২৫ মিনিট পর ৫ মিনিটের বিরতি থাকে। এমন ৪টি পোমোডোরো শেষ হওয়ার পর আপনি ১৫-২০ মিনিটের দীর্ঘ বিরতি নিতে পারেন। পোমোডোরো মডেল মস্তিষ্ককে ক্লান্ত হওয়া থেকে দূরে রাখতে সক্ষম। মডেলটি শিক্ষার্থীদের জন্য, বিশেষ করে অধ্যয়নের সময় মন সতেজ করার জন্য ঘন ঘন বিরতির সঙ্গে একাগ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
টাইম ব্লকিং
টাইম ব্লকিং হলো একটি শিডিউলিং পদ্ধতি, যেখানে দিনটিকে নির্দিষ্ট কাজ বা ক্রিয়াকলাপের জন্য বিভিন্ন অংশে ভাগ করে নেওয়া যায়। প্রতিদিনই প্রত্যেকের নির্দিষ্ট কিছু কাজ থাকে। আপনি কোন সময়ে কোন কাজটি করবেন, তা লিখে রাখলে কাজের কাঠামোগত মান বজায় থাকে। তা ছাড়া এমন কাজের তালিকা কাজের প্রতি স্পৃহা বাড়ায়। আপনি কোন কাজে কত সময় ব্যয় করবেন, তার লিখিত রূপ টেবিলের সামনে টাঙিয়ে রাখতে পারেন বা মোবাইলের নোট কিংবা ক্যালেন্ডারে সময় নির্ধারণ করে রাখা যায়। তালিকা অনুযায়ী কাজ না হলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। অনুশীলনের ফলে একসময় এমন অভ্যাস হয়ে যাবে।
আইজেনহাওয়ার ম্যাট্রিক্স
আইজেনহাওয়ার ম্যাট্রিক্স হলো গুরুত্ব অনুসারে সবচেয়ে জরুরি কাজগুলো সাজিয়ে ফেলা এবং সে অনুযায়ী কার্যক্রম শেষ করা। এ পদ্ধতি যে কোনো মানুষকে, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি গুরুত্বহীন কাজে সময় নষ্ট করা এড়াতে শেখায়। পদ্ধতিটি অনুশীলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সময় ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ভালো ধারণা পান এবং কোন কাজে কত সময় দেওয়া যেতে পারে, সে ব্যাপারে সচেতন হন। এতে বিভ্রান্তিকর কার্যক্রম হ্রাস পায় এবং সঠিক সময়ে কাজ শেষ করা যায়।
ডিজিটাল ক্যালেন্ডার বা নোটবুক ব্যবহার
মোবাইলের নোটপ্যাড কিংবা ক্যালেন্ডার ব্যবহার করুন। এতে আপনার সময় বেঁচে যেতে পারে। ট্রেলাইলের ক্যালেন্ডারে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিলে কাজ শুরু এবং শেষে ক্যালেন্ডার রিমাইন্ডার দেয়। ফলে অনুমান করা যায় যে আপনার কর্মদক্ষতা অনুযায়ী কতটুকু কাজ এগিয়ে নিতে পেরেছেন কিংবা পারেন নি। ফলে সঠিক সময়ে নির্দিষ্ট কাজ করার প্রবণতা দেখা যায় এবং অবশ্যই তা যে কোনো ব্যক্তিকে আনন্দিত করে। পাশাপাশি নতুনভাবে কাজ করার প্রতি উৎসাহিত করতে পারে।
স্মার্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা
স্মার্ট লক্ষ্যগুলো হলো নির্দিষ্ট, পরিমাপযোগ্য, অর্জনযোগ্য, প্রাসঙ্গিক ও সময়সীমা। একজন শিক্ষার্থীর কাজের সঠিক কাঠামো ও সঠিক মানদণ্ড পরিমাপক হিসেবে কাজ করে। প্রতিটি মানদণ্ড একটি স্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করে। ফলে শিক্ষার্থীরা কাজের জন্য বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা তৈরি করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, অনেক বই সামনে রাখলে অবসাদের প্রবণতা বেশি থাকে। নির্দিষ্টভাবে যে বই বা সিলেবাস শেষ করতে হবে, সেটি সামনে রাখলে পড়ার প্রতি আগ্রহ বেশি কাজ করে। এতে নির্দিষ্ট কাজের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় থাকে।