তুমি কি আর্থিক উন্নতি, বিনিয়োগ ও সম্পদ বিষয়ে গতানুগতিক ধারণা বদলাতে চাও তাহলে রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড থেকে ৫ শিক্ষা নিন।
রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড থেকে ৫ শিক্ষা
আমেরিকান ব্যবসায়ী এবং লেখক রবার্ট তোরু কিয়োসাকির লেখা ‘রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড’ বইটি ১৯৯৭ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। বইটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে ব্যক্তিগত আর্থিক উন্নতির বইয়ের ক্যাটাগরিতে বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রীত হিসেবে স্বীকৃত। বইটি পড়লে আর্থিক উন্নতি, বিনিয়োগ ও সম্পদ বিষয়ে গতানুগতিক ধারণা বদলে দেবে।
সম্পদ এবং দায়বদ্ধতার পার্থক্য বুঝুন
বইটির লেখক কিয়োসাকি বলেছেন বেশির ভাগ মানুষ সম্পদ এবং দায়বদ্ধতার পার্থক্য বুঝতে পারেন না। সম্পদ হলো এমন জিনিস, যার ফলে টাকা তৈরি হয়। যেমন: রিয়েল এষ্টেট, স্টক এবং ব্যবসা। অন্যদিকে দায়বদ্ধতা হলো এমন জিনিস, যা আপনার পকেট থেকে টাকা বের করে। দেয়। যেমন: বাড়ি গাড়ির ঋণ, ক্রেডিট কার্ডের ঋণ প্রভৃতি। যেমন: কেউ যদি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি কেনেন, তাহলে সেটি তাঁর। সম্পদ নয়, সেটি একটি দায় কেমন। এর থেকে কোনো আয় আসছে না। যে টাকা আসছে, এ ঋণের কিস্তি দিয়ে সব খরচ হয়ে যাচ্ছে ফলে এটি সম্পাদ না হয়ে দায় হয়ে যাচ্ছে।
আর্থিক শিক্ষা গ্রহণ করুন
এই বইয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো আর্থিক সাফল্যের জন্য আর্থিক শিক্ষা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক শিক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও অনেকের আর্থিক শিক্ষা থাকে না। ফলে শিক্ষিত হলেও অনেকের জীবন থেকে দরিদ্রতা যায় না। বইটিতে ধনী বাবা এবং গরিব বাবার কথা বলা হয়েছে। গরিব বাবা সুশিক্ষিত ছিলেন এবং চাকরি করে বেতন পাওয়ায় বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি আজীবন গরিব থাকেন। অন্যদিকে প্রাতিষ্ঠানিক কম শিক্ষিত হলেও তাঁর ধনী বালা আর্থিকভাবে বেশি শিক্ষিত ছিলেন। তিনি সম্পদ গড়ে তুলতে এবং আর্থিকভাবে স্বাধীন হওয়ার জন্য অর্থ বিনিয়োগ ও ব্যবসা চালাতে বিশ্বাস করতেন।
টাকার জন্য কাজ করবেন না
গরিবরা শুধু টাকার জন্য কাজ করেন, অন্যদিকে ধনীরা শুধু টাকার জন্য কাজ করেন না। তাঁরা এমন কাজ করেন, যা থেকে দক্ষতা অর্জন হয়। আপনি যদি শুধু বেতনের জন্য কাজ করেন, তাহলে ইঁদুরের দৌড় থেকে কখনোই বের হতে পারবেন না। প্রকৃত সম্পদ অর্জন করতে পারবেন না। তবে, আপনি যদি নতুন দক্ষতা বিকাশের জন্য কাজ করেন, তাহলে আপনি ধীরে ধীরে আরও প্রতিভাবান হয়ে উঠবেন। একই সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে নিজের জন্য অর্থ উপার্জনের নতুন সুযোগ তৈরি করবেন। ওই দক্ষতা দিয়ে বিভিন্ন রকম আয়ের উৎস তৈরি করতে পারবেন।
আর্থিক ঝুঁকি নিন
ধনী হওয়ার জন্য আর্থিক ঝুঁকি নিতে হবে। আপনি যদি সবার মতো একই পথ অনুসরণ করেন, তাহলে আপনি সবার মতো ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে যাবেন। জীবনে আর্থিকভাবে সফল হতে পারবেন না। আপনি ভিন্ন কিছু পেতে চাইলে আপনাকে ভিন্ন কিছু করতে হবে। ধনীরা নতুন জিনিস চেষ্টা। করে এবং তাদের পাশ কাটিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে বিভিন্ন সুযোগ অন্বেষণ করে। আপনি যদি প্রচুর মুনাফা অর্জন করতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই উচ্চ ঝুঁকি নিতে হবে।
খরচকে নিয়ন্ত্রণ করুন
কত টাকা মাসে আয় করলেন তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো খরচ শেষে মাসে কত টাকা আপনার সঞ্চয় থাকল। উদাহরণস্বরূপ, আপনি মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করে সব টাকা খরচ করে ফেলার চেয়ে ৩০ হাজার টাকা আয় করে মাস শেষে ১০ হাজার। টাকা সঞ্চয় থাকলে সেটি উত্তম একমাত্র ওই টাকাই আপনার জীবনে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে, যে টাকা। আপনি সঞ্চয় করেন। ধনী হওয়ার প্রথম পদক্ষেপ হল টাকা আয় করা। তবে আপনাকে শুধু বেশি টাকা আয় করা শিখলে চলবে না। সেই টাকা কীভাবে ব্যবহার করতে হবে, সে দক্ষতা থাকতে হবে।