২০২৫ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাস বিষয়ে সম্পূর্ণ সিলেবাসের সাজেশন্ ভিত্তিক পিডিএফ নোটস্ নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করুণ (দাম প্রতি ক্লাস ৯৯ টাকা)।

👉Chat on WhatsApp

ঔপনিবেশিক শাসনকালে বাংলায় নমঃ শূদ্র আন্দোলনের পরিচয়

দশম শ্রেণীর ইতিহাস সপ্তম অধ্যায়-বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে ঔপনিবেশিক শাসনকালে বাংলায় নমঃ শূদ্র আন্দোলনের পরিচয় দেওয়া হল।

Table of Contents

ঔপনিবেশিক শাসনকালে বাংলায় নমঃ শূদ্র আন্দোলনের পরিচয়

প্রশ্ন:- ঔপনিবেশিক শাসনকালে বাংলায় নমঃ শূদ্র আন্দোলনের পরিচয় দাও।

ভূমিকা :- ঔপনিবেশিক শাসনকালে বাংলার হিন্দু জনগোষ্ঠীর একটি বড়ো অংশই ছিল নিম্নবর্ণের দলিত হিন্দু। এই সময় বাংলার দলিত হিন্দুদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই ছিল নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ভুক্ত। ১৮৭২ থেকে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সারা বাংলাজুড়ে নমঃশূদ্র আন্দোলন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

নমঃ শূদ্র আন্দোলনের কারণ

ঔপনিবেশিক শাসনকালে বিভিন্ন কারণেবাংলায় নমঃশূদ্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।যেমন –

(১) সামাজিক অমর্যাদা

উচ্চবর্ণের হিন্দুরা নমঃশূদ্রদের অস্পৃশ্যবলে মনে করত এবং তাদের ঘৃণার চোখে দেখত।

(২) সীমাহীন দারিদ্র্য

নমঃশূদ্রদের নিত্যসঙ্গী ছিল দারিদ্র্য। কৃষিকাজ ছিল তাদের প্রধান পেশা। তাছাড়া তারা মাছ ধরা, তাঁত বোনা, অন্যের বাড়ি ও জমিতে দিনমজুরের কাজ করা প্রভৃতি অত্যন্ত কম আয়ের পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিল।

(৩) অর্থনৈতিক শোষণ

দরিদ্র নমঃশূদ্রদের ওপর জমিদার ও সরকারের তীব্র অর্থনৈতিক শোষণ চলত।

(৪) সার্বিক দুর্দশা

অশিক্ষা, অচিকিৎসা, সামাজিক অমর্যাদা নমঃশূদ্রদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল।

আন্দোলনের পথে যাত্রা

নমঃশূদ্র সম্প্রদায় নিজেদের আর্থসামাজিক দুরবস্থা দূর করার উদ্দেশ্যে সামাজিক আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন হরিচাঁদ ঠাকুর, গুরুচাঁদ ঠাকুর, রাজেন্দ্রনাথ মণ্ডল, মুকুন্দবিহারী মল্লিক, বিরাটচন্দ্র মণ্ডল, যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল, প্রমথরঞ্জন ঠাকুর প্রমুখ নমঃশূদ্র নেতা।

আন্দোলনের সূচনা

ফরিদপুর-বাখরগঞ্জ অঞ্চলে ১৮৭২-৭৩ খ্রিস্টাব্দে একটি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নমঃশূদ্র আন্দোলনের সূচনা হয়। এখানে এক বিশিষ্ট নমঃশূদ্র নেতার মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে উচ্চবর্ণের লোকজন আসতে অস্বীকার করলে নমঃশূদ্ররা উচ্চবর্ণের সঙ্গে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। তারা উঁচু জাতের কৃষিকাজ, ঘর ছাওয়া বা অন্যান্য কাজ করতে অস্বীকার করে।

মতুয়া ধর্মের প্রসার

নমঃশূদ্র নেতা শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর তাঁর অনুগামীদের মধ্যে ‘মতুয়া’ নামে ধর্মীয় ভাবধারার প্রচার করে নমঃশূদ্রদের ধর্মীয় আদর্শে ঐক্যবদ্ধ করেন। মতুয়া ধর্মকে কেন্দ্র করে নমঃশূদ্র আন্দোলন সক্রিয় হয়ে ওঠে।

চেতনার জাগরণ

হরিচাদ ঠাকুর ও তাঁর পুত্র গুরুচাঁদ ঠাকুর উপলব্ধি করেন যে, নমঃশূদ্রদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য তাদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার খুবই জরুরি। তাই তাঁরা আন্দোলনের বার্তা গ্রামগঞ্জের নমঃশূদ্রদের মধ্যে প্রচার করেন। তাঁরা সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নমঃশূদ্রের যাত্রাগান, পালাগান প্রভৃতি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করেন। এর ফলে নমঃশূদ্রদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়।

নমঃশূদ্র সংগঠন

নমঃশূদ্র ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, ‘উন্নয়নী সভা’ (১৯০২ খ্রি.),’নিখিলবঙ্গ নমঃশূদ্র সমিতি (১৯২৬ খ্রি.), ‘বেঙ্গল ডিপ্রেসড ক্লাসেস অ্যাসোসিয়েশন’ বা ‘বঙ্গীয় দলিত শ্রেণি সমিতি’ (১৯২৬ খ্রি.) প্রভৃতি সংগঠনের উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে নমঃশূদ্রদের সম্মেলনের আয়োজন হয়।

রাজনৈতিক দাবি

নমঃশূদ্ররা ক্রমে রাজনৈতিকভাবেও বিভিন্ন দাবিদাওয়া জানাতে থাকে।তারা নিজেদের সাম্প্রদায়িক প্রতিনিধিত্বের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানায়।লন্ডনে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে (১৯৩০-৩২ খ্রি.) আইনসভায় বেশিসংখ্যক দলিত প্রতিনিধি গ্রহণের দাবি জানানো হয়। আম্বেদকরের পৃথক নির্বাচনের দাবি এবং সরকারের ‘সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা’ নীতিকে তারা সমর্থন করে।

উপসংহার :- নমঃশূদ্রদের দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে বাংলার দলিতরা বেশ কিছু রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার লাভ করতে সক্ষম হয়। তবে দেশভাগেরপর নমঃশূদ্ররা পূর্ব পাকিস্তানে সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের শিকার হলে এবং পশ্চিমবঙ্গে নিঃস্ব-রিক্ত উদ্‌বাস্তু জীবনের সম্মুখীন হলে তাদের আন্দোলনে ভাটা পড়ে।

দশম শ্রেণীর ইতিহাস (সপ্তম অধ্যায়) বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস সপ্তম অধ্যায়- বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।

দশম শ্রেণী ইতিহাস সপ্তম অধ্যায়-বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

৭.১. বিশ শতকের ভারতে নারী আন্দোলনের চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

(৭.১.ক.) বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন
(৭.১.খ.) অহিংস অসহযোগ আন্দোলন
(৭.১.গ.) আইন অমান্য আন্দোলন
(৭.১.ঘ.) ভারত ছাড়ো আন্দোলন
(৭.১.ঙ.) সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন
(৭.১.চ.) দীপালি সংঘ
(৭.১.ছ.) প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার
(৭.১.জ.) কল্পনা দত্ত
(৭.১.ঝ.) বীণা দাস

টুকরো কথা

আজাদ হিন্দ ফৌজের নারীবাহিনী

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য আন্দোলনগুলির সময়সারণি)

৭.২. বিশ শতকের ভারতে ছাত্র আন্দোলনের চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

(৭.২.ক.) বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন
(৭.২.খ.) অহিংস অসহযোগ আন্দোলন
(৭.২.গ.) আইন অমান্য আন্দোলন
(৭.২.ঘ.) ভারত ছাড়ো আন্দোলন
(৭.২.ঙ.) সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন
(৭.২.চ.) অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি
(৭.২.ছ.) বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স
(৭.২.জ.) সূর্য সেন
(৭.২.ঝ.) রশিদ আলি দিবস

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য আন্দোলনগুলির সময়সারণি)

৭.৩. বিশ শতকের ভারতে দলিত রাজনীতি ও আন্দোলনের বিকাশ

(৭.৩.ক.) দলিত-অধিকার বিষয়ে গান্ধি-আম্বেদকর বিতর্ক
(৭.৩.খ.) বাংলায় নমঃশূদ্র আন্দোলন

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য আন্দোলনগুলির সময়সারণি)

Leave a Comment