২০২৫ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাস বিষয়ে সম্পূর্ণ সিলেবাসের সাজেশন্ ভিত্তিক পিডিএফ নোটস্ নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করুণ (দাম প্রতি ক্লাস ৯৯ টাকা)।

👉Chat on WhatsApp

প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসে চৈনিক সাহিত্য উপাদানের গুরুত্ব

বি. এ. জেনারেল (1st Semister) ইতিহাস প্রথম অধ্যায়: প্রাচীন ও আদি মধ্যযুগে ভারতের ইতিহাসের উপাদান থেকে ৫ নাম্বারের অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন – প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসে চৈনিক সাহিত্য উপাদানের গুরুত্ব আলোচনা করা হল।

প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসে চৈনিক সাহিত্য উপাদানের গুরুত্ব আলোচনা

প্রশ্ন:- প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস অনুধাবনে চৈনিক সাহিত্য উপাদানের গুরুত্ব আলোচনা কর।

উত্তর:- মৌর্য পরবর্তী ভারত সম্পর্কে বহু মূল্যবান তথ্য চৈনিক লেখক ও পরিব্রাজকদের বিবরণ থেকে জানা যায়। চীনা ঐতিহাসিক ফ্যান-ই -এর রচনা থেকে কুষাণ রাজাদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। সুমা-কিয়েন খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতকে রচিত তাঁর ‘ইতিহাস’ গ্রন্থে ভারত সম্পর্কে বহু মূল্যবান তথ্য উল্লেখ করেছেন। তাকে চীনের হেরোডোটাস বলা হয়।

চীনা পরিব্রাজক ফা-হিয়েন গুপ্তসম্রাট দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের আমলে ভারতে এসেছিলেন। তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম ‘ফো কুয়ো কি’। তিনি প্রায় ১৫ বছর ভারতে ছিলেন। তিনি মধ্যদেশ অর্থাৎ উত্তর ভারতে পরিভ্রমণ করে একটি তথ্যপূর্ণ বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন। তিনি উত্তর-পশ্চিম ভারত, মধ্যভারত এমনকি গাঙ্গেয় উপত্যকা পর্যন্ত ভ্রমণ করেন ও গৌতম বুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলি পরিদর্শন করেন। বাংলার তাম্রলিপ্ত বন্দর থেকে তিনি সমুদ্রপথে স্বদেশে ফিরে যান। তাঁর রচনায় সামাজিক ও ধর্মীয় তথ্যের বাহুল্যতা থাকলেও রাজনৈতিক তথ্যের অভাব দেখা যায়। তিনি গুপ্ত সম্রাট দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের নাম পর্যন্ত উল্লেখ করেননি। তাঁর রচনাতে বৌদ্ধধর্ম সংক্রান্ত বিষয়গুলি বেশী প্রাধান্য পেয়েছে।

হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালে ভারত ভ্রমণে আসেন হিউয়েন সাঙ। তিনি দীর্ঘকাল ভারতে অবস্থান করেন। ভারতের বিভিন্ন স্থান ভ্রমণ করেন। এই অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে তিনি ‘সি-ইউ-কি’ বা ‘পশ্চিমীদেশের স্মৃতি’ নামক গ্রন্থ রচনা করেন। এই গ্রন্থ থেকে সমসাময়িক ভারত ও ভারতবাসী সম্পর্কে বহু সংবাদ জানা যায়। তবে বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কেই তাঁর আগ্রহ বেশি ছিল। ফলে তাঁর রচনায় বৌদ্ধরাজা হর্ষবর্ধনের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখা যায়। পরিব্রাজক ই-সিং ভারতে অবস্থান করেছিলেন ৬৭৩-৬৯৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। তাঁর বিবরণ থেকেও ভারত-ইতিহাসের অনেক কথা জানা যায়।

বৈদ্ধধর্মের ইতিহাস রচনার কাজে চীনা পর্যটকদের বিবরণগুলির মূল্য যথেষ্ট। এই প্রসঙ্গে তিব্বতীয় পণ্ডিত লামা তারানাথ রচিত ‘ভারতে বৌদ্ধ ধর্মের জন্ম’ গ্রন্থটি উল্লেখযোগ্য। এই গ্রন্থ থেকে হর্ষবর্ধন, শশাঙ্ক এবং পাল রাজাদের সম্পর্কে বহু তথ্য পাওয়া যায়। এই গ্রন্থে অজাতশত্রুর সময় থেকে মগধের মুকুল দেবের সময় পর্যন্ত ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায়। চীনা পর্যটকরা অনেকেই ভারতীয় ভাষা শেখেন এবং প্রতিবেশী ভারতে দীর্ঘকাল থাকেন। তাঁরা ভারতের বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কে বেশী আগ্রহী ছিলেন। বৌদ্ধধর্মের ইতিহাস রচনার জন্য তাদের রচনাসমূহ মূল্যবান উপাদান হিসাবে বিবেচিত হয়।

Leave a Comment