স্বাধীন ভারত সরকার দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে?

দশম শ্রেণীর ইতিহাস অষ্টম অধ্যায়-উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব (১৯৪৭-১৯৬৪) হতে স্বাধীন ভারত সরকার দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা আলোচনা করা হল।

Table of Contents

স্বাধীন ভারত সরকার দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে

প্রশ্ন:- স্বাধীন ভারত সরকার দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে?

ভূমিকা:- ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতের স্বাধীনতা লাভের আগে ভারতীয় ভূখণ্ডে অবস্থিত ব্রিটিশদের প্রত্যক্ষ শাসনের বাইরে অন্তত ৫৬৫টি রাজ্যের অস্তিত্ব ছিল। এগুলি দেশীয় রাজ্য নামে পরিচিত।

ভারতের স্বাধীনতা আইন

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ‘ভারতের স্বাধীনতা আইন’ অনুসারে দেশীয় রাজ্যগুলি স্বাধীন থাকার অথবা ভারত ও পাকিস্তানের যে-কোনো একটি রাষ্ট্রে যোগ দেওয়ার অধিকার পায়।

ভারতের উদ্যোগ

ভারতের অখণ্ডতা, জাতীয় সংহতি, নিরাপত্তা, অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ প্রভৃতির প্রয়োজনে অধিকাংশ দেশীয় রাজ্য ভারত নিজের অন্তর্ভুক্ত করার বলিষ্ঠ উদ্যোগ গ্রহণ করে। ‘দেশীয় রাজ্য দপ্তর’-এর দায়িত্বে থাকা ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল এই বিষয়ে কঠোর নীতি গ্রহণ করেন।

সাফল্য ও সমস্যা

ভারতের সক্রিয় উদ্যোগের ফলে স্বাধীনতা লাভের মাত্র ৩ সপ্তাহের মধ্যে অধিকাংশ দেশীয় রাজ্য ভারতে যোগ দেয়। তবে জুনাগড়, কাশ্মীর ও হায়দ্রাবাদ ভারতে যোগদানে অনাগ্রহ দেখালে ভারতের অখণ্ডতা ও ঐক্য সমস্যার সম্মুখীন হয়।

জুনাগড়ের অন্তর্ভুক্তি

হিন্দু-অধ্যুষিত দেশীয় রাজ্য জুনাগড় পাকিস্তানে যোগ দিতে চাইলে প্রজাবিদ্রোহের চাপে সেখানকার নবাব পাকিস্তানে পালিয়ে যান। ভারতীয় সেনা জুনাগড়ে প্রবেশ করে এবং গণভোটের মাধ্যমে সেখানকার মানুষের সম্মতির দ্বারা জুনাগড় ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়।

কাশ্মীরের অন্তর্ভুক্তি

মুসলিম-অধ্যুষিত কাশ্মীরের হিন্দু মহারাজা হরি সিং কাশ্মীরের স্বাধীনতা রক্ষায় তৎপর হলে পাক সেনা ও হানাদারবাহিনী কাশ্মীরে ঢুকে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। এই অবস্থায় হরি সিং ‘ভারতভুক্তির দলিল’-এ স্বাক্ষর করলে কাশ্মীর ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়।

হায়দ্রাবাদের অন্তর্ভুক্তি

হায়দ্রাবাদ নিজের স্বাধীন অস্তিত্ব রক্ষার উদ্দেশ্যে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র আমদানি করে এবং রাজ্যের অভ্যন্তরে ও সীমান্ত এলাকায় হিন্দুদের ওপর তীব্র নির্যাতন শুরু করে। ফলে হায়দ্রাবাদে ভারতীয় সেনার অভিযান শুরু হয়। হায়দ্রাবাদ আত্মসমর্পণে বাধ্য হলে রাজ্যটি ভারতের দখলে আসে।

বিশেষ ভূমিকা

অধিকাংশ দেশীয় রাজ্যকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করানোর ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের কঠোর নীতি, স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সচিব ভি পি মেননের কূটকৌশল ও গভর্নর জেনারেল লর্ড মাউন্টব্যাটেনের সহযোগিতা বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল।

উপসংহার:- স্বাধীনতা লাভের পর অধিকাংশ দেশীয় রাজ্য ভারতের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ফলে ভারত রাষ্ট্রের ভৌগোলিক আয়তন, জনবল, প্রাকৃতিক সম্পদ প্রভৃতি যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়। এই সবের ওপর ভর করে ভারত শীঘ্রই এশিয়ার অন্যতম শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস অষ্টম অধ্যায়: উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব (১৯৪৭-১৯৬৪)

৮.১. দেশীয় রাজ্যগুলির ভারত-ভুক্তির উদ্যোগ ও বিতর্ক

(১৯৪৭ এবং ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের দুটি মানচিত্র ব্যবহার করে আলোচ্য পরিপ্রেক্ষিতে ভারত রাষ্ট্রের পরিবর্তিত আন্তঃ ও বহির্সীমানা চিহ্নিত করতে হবে)

টুকরো কথা

কাশ্মীর প্রসঙ্গ
হায়দ্রাবাদের অন্তর্ভুক্তি

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য ঘটনাগুলির সময় সারণি)

৮.২. ১৯৪৭ সালের পরবর্তী উদবাস্তু সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ ও বিতর্ক

(৮.২.ক.) উদ্বাস্তু সমস্যার সমাধান ও বিতর্ক
(৮.২.খ.) আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথায় দেশভাগ

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য ঘটনাগুলির সময়সারণি)

৮.৩. ভাষার ভিত্তিতে ভারতে রাজ্য পুনর্গঠনের উদ্যোগ ও বিতর্ক

(১৯৪৮ এবং ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের দুটি মানচিত্র ব্যবহার করে আলোচ্য পরিপ্রেক্ষিতে ভারত রাষ্ট্রের পরিবর্তিত আন্তঃমানচিত্র চিহ্নিত করতে হবে)

টুকরো কথা

রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন ও আইন (১৯৫৫-১৯৫৬)

সংবিধানে স্বীকৃত ভাষাসমূহ (১৯৬৪ পর্যন্ত)

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য ঘটনাগুলির সময়সারণি)

Leave a Comment