বি. এ. জেনারেল (1st Semister) ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়: প্রস্তর ও তাম্র-প্রস্তর যুগ থেকে ৫ নাম্বারের অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন – গৈরিক বর্ণের মৃৎপাত্র সম্পর্কে টীকা দেওয়া হল।
গৈরিক বর্ণের মৃৎপাত্র সম্পর্কে টীকা
প্রশ্ন:- টীকা লেখ- গৈরিক বর্ণের মৃৎপাত্র।
উত্তর:- সিন্ধুসভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলির সঙ্গে নিকটবর্তী ও পাশ্ববর্তী এলাকাতেও তামার ব্যবহার ছড়িয়ে পড়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত হয়েছিল গৈরিক মৃৎপাত্র সংস্কৃতি। গিরিমাটি রঞ্জিত মৃৎশিল্পের নামানুসারে গৈরিক মৃৎশিল্প নামকরণ করা হয়েছে। এই সংস্কৃতির উদ্ভব ঘটেছিল উচ্চ ও মধ্য গাঙ্গেয় উপত্যকায়। রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা ও পাঞ্জাবে এই সংস্কৃতির নিদর্শন পাওয়া গেছে।
গিরিমাটি রঞ্জিত মৃৎপাত্র বেশি পরিমাণে পাওয়া গেছে উত্তর প্রদেশের লালকিলা, নাসিরপুর, অহিচ্ছত্র, প্রভৃতি স্থানে। রেডিও কার্বণ ১৪ পদ্ধতি দ্বারা এর সময়কাল নির্ণয় করা হয়েছে খ্রিস্টপূর্ব ২৮০০-১৫০০ অব্দ। এই সমস্ত উল্লেখিত স্থানগুলি থেকে কয়েক মিটার পুরু বালিময় বাদামি রঙের গৈরিক মৃৎপাত্রগুলি পাওয়া গেছে। অনুমান করা হয় গঙ্গা, যমুনা প্রভৃতি নদীতে বন্যার ফলে সঞ্চিত পলিমাটি থেকে সৃষ্টি হয়েছে এই পলিস্তর।
এই ধরনের যে সব মৃৎপাত্র পাওয়া গেছে সেগুলি হল হাঁড়ি, গামলা, থালা, বোতল, গ্লাস ইত্যাদি। আবার ঐতিহাসিকরা মনে করেন ঐ সমস্ত মৃৎপাত্রগুলি মাটির নীচে দীর্ঘদিন ধরে চাপা পড়ে থাকার ফলে নোনা ধরার কারণে সেগুলি গিরিমাটি রঞ্জিত রূপলাভ করেছে। এই মৃৎ পাত্রগুলি নির্মাণে কাদামাটির সাথে সাথে পোড়ামাটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। গৈরিক মৃৎপাত্র ব্যবহারকারী মানুষরা ধান, বার্লি, ছোলা ও খেসারি ডালের সঙ্গে পরিচিত ছিল।