সফলতার জন্য চাই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি

সফলতার জন্য চাই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি

যেকোনো পরিস্থিতিতে সফলতা পেতে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি লালন করা খুবই প্রয়োজনীয়। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সমস্যা নয়, সমাধানের প্রতি মনোযোগী হয়। জীবনে চলার পথে নানা রকম বাধা সামনে আসে। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে অভ্যস্ত হলে সহজেই বাধা অতিক্রম করে সফলতার পথে এগিয়ে যাওয়া যায়।

অতিমাত্রায় চিন্তা পরিহার করুন

কোনো বিষয়ে অতিমাত্রায় চিন্তা করার কারণেই নেতিবাচক চিন্তা চলে আসে। কোনো কাজ করার সময় যদি শুধু ব্যর্থতার কথা মনে আসে, তাহলে বুঝতে হবে নেতিবাচক চিন্তা আপনাকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। এই নেতিবাচক চিন্তা থেকেই কাজটি মাঝপথে ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা আসে। এই নেতিবাচক চিন্তা থেকেই অনেকে নতুন কাজ শুরু করার উৎসাহ পান না, যা আমাদের সাফল্যকে ব্যাহত করে। তাই কোনো ব্যাপারে অতিচিন্তা করবেন না। অতিচিন্তা দূর করতে কোনো কাজের সর্বোচ্চ খারাপ অবস্থা কী হতে পারে তা ভেবে নিন। এরপর অবস্থা উত্তরণের জন্য যা করা দরকার তা করুন।

ইতিবাচক মানুষের সঙ্গে থাকুন

এখন ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি অভ্যাস করার একটি উপায় হলো, এমন মানুষের চারপাশে অবস্থান করা যারা জীবন সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি লালন করেন। যারা আপনাকে অনুপ্রেরণা দেন। আপনার কল্যাণ কামনা করেন। আর দূরে থাকতে হবে নেতিবাচক মানুষের থেকে। অন্য সব যোগ্য মানুষের মতো আপনার মধ্যেও যোগ্যতা ও মেধা রয়েছে। যারা নিচে টেনে ধরে তাদের সঙ্গে থাকলে পতন ঘটবেই। জীবনের পরিসর অনেক ছোট। কাজেই এসব নেতিবাচক মানুষের চারপাশে থেকে সময় নষ্ট করবেন না।

‘যদি এমন হয়’ ভাবা ত্যাগ করুন

‘যদি এমন হয়’ – কথাটি মনে উদয় হলেই তা না বোধক শব্দ হয়ে যায়। এই সন্দেহ এমন এক পরিস্থিতিতে নিয়ে যায়, যেখানে কোনো সম্ভাবনা থাকে না। শুধু সন্দেহ না করে ভেবে দেখুন বাস্তবে এ ঘটনা ঘটার কোনো বাস্তব কারণ রয়ে গেছে কি না। যদি থেকে থাকে, তাহলে সেটি সমাধানের চেষ্টা করুন।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন

স্বাস্থ্য ঠিক না থাকলে কোনো কাজই সুসম্পন্ন করা যায় না। ক্লান্ত শরীর ও মস্তিষ্ককে পূর্ণ উদ্যোম এবং কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে দেয় ঘুম। তাই নিয়মিত গভীর ঘুম অতিজরুরি। আবার নিয়মিত ব্যায়াম আপনাকে আরও বেশি কর্মক্ষম করে তুলবে। আত্মত্মনিয়ন্ত্রণ, মনোযোগ বৃদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে ঘুম ও ব্যায়ামের বিকল্প নেই।

ছোটখাটো বিজয় উদযাপন

চূড়ান্ত সফলতা হলো, ছোট ছোট অসংখ্য সফলতার একটি মালা। চূড়ান্ত সফলতার আগে যে ছোট ছোট সফলতা আসে সেগুলো উদযাপন করা উচিত। এর ফলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। কাজে মনোযোগ বাড়ে। নেতিবাচকতা ঘিরে ধরতে পারে না। এগুলোর উদযাপন আপনাকে আরও উজ্জীবিত করে।

নিজেকে ক্ষমা করুন

প্রত্যেক মানুষই কখনো না কখনো ব্যর্থতার শিকার হয়। সবারই ভুল হয়। এ নিয়ে অনুতাপ করবেন না। অতীতের ব্যর্থতাকে বেশি বেশি স্মরণ করলে মন নেতিবাচকতার কবলে পড়ে। এ থেকে মুক্তির উপায় হলো, ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া ও নিজেকে ক্ষমা করা। ভুল তখনই মূল্যবান হয়, যখন এর থেকে শিক্ষা নিতে পারবেন। অনুতাপে না ভুগে নিজেকে ক্ষমা করে দিন। নিজেকে ক্ষমা করতে না পারলে ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাসে ক্ষয় ধরবে। তখন নিজের ওপর নিজেই আস্থা রাখতে পারবেন না।

হাল ছাড়বেন না

কোনো কাজে মানুষ যখন নেতিবাচক হয়ে যায় তখন সে হাল ছেড়ে দেয়। আর ইতিবাচক মানুষ কখনোই হাল ছাড়ে না। যতক্ষণ হাল না ছাড়বেন ততক্ষণ আপনাকে কেউ পরাজিত করতে পারবে না। হাল ছাড়ার আগে নিজকে তিনটি প্রশ্ন করবেন, এটিই কি আপনার সর্বোচ্চ শক্তি? যারা আপনার পরাজয় দেখতে চায় তাদের কী জবাব দেবেন? যারা আপনার সফলতা চায় তাদের কী জবাব দেবেন? নিজেকে এই তিনটি প্রশ্নের মুখোমুখি করলেই দেখবেন, কাজটি করার অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন।

নিখুঁত কাজ আশা করবেন না

কোনো কাজই নিখুঁত হয় না। প্রকৃতিগতভাবেই কোনো কিছুই নিখুঁত নয়। তাই কোনো কিছু নিখুঁত পেতে চাইলে কেবল সময়ের অপচয়ই হবে আর মানসিক পীড়া বাড়বে। তাই সফল হতে গুণগত মানসম্পন্ন কাজ করুন কিন্তু নিখুঁত হতে বা নিখুঁত হতে চাইবেন না।

কৃতজ্ঞ হোন

যা নেই তা দিয়ে আপনি কিছুই অর্জন করতে পারবেন না। যা আছে আপনাকে তা নিয়েই লড়াই করতে হবে। সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে হবে। তাই যা আপনার আছে সেজন্য কৃতজ্ঞ হোন। যা নেই তার জন্য আপনি তখন সংগ্রাম করতে পারবেন।

Leave a Comment