বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাণী
ভূমিকা :- বাংলা সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার উপন্যাস ও ছোট গল্পে পল্লী বাংলার প্রকৃতি ফুটে উঠেছে। তিনি তাঁর ছোট গল্প ও উপন্যাসে উল্লেখযোগ্য কিছু উক্তি বা বাণী ব্যবহার করেছেন। সেই বাণী গুলিই আজ আমরা জানবো।
মানুষ কি চায় — উন্নতি, না আনন্দ? উন্নতি করিয়া কি হইবে যদি তাহাতে আনন্দ না থাকে? আমি এমন কত লোকের কথা জানি, যাহারা জীবনে উন্নতি করিয়াছে বটে, কিন্তু আনন্দকে হারাইয়াছে। অতিরিক্ত ভোগে মনোবৃত্তির ধার ক্ষইয়া ভোঁতা — এখন আর কিছুতেই তেমন আনন্দ পায় না, জীবন তাহাদের নিকট একঘেয়ে, একরঙা, অর্থহীন। মন শান-বাঁধানো — রস ঢুকিতে পায় না।
একশত বৎসর একসঙ্গে থাকিলেও কেহ হয়তো আমার হৃদয়ের বাহিরে থাকিয়া যায়, যদি না কোনো বিশেষ ঘটনায় সে আমার হৃদয়ের কবাট খুলিতে পারে।
যে জিনিস যত দুষ্প্রাপ্য মানুষের মনের কাছে তাহার মূল্য অনেক বেশি। এ কথা খুবই সত্য যে, এই মূল্য মানুষের মনগড়া একটি কৃত্রিম মূল্য, প্রার্থিত জিনিসের সত্যকার উৎকর্ষ বা অপকর্ষের সঙ্গে এর কোন সম্বন্ধ নাই। কিন্তু জগতের অধিকাংশ জিনিসের উপরই একটি কৃত্রিম মূল্য আরোপ করিয়াই তো আমরা তাকে বড় বা ছোট করি।
জীবন বড় মধুময় শুধু এইজন্য যে, এই মাধুর্যের অনেকটাই স্বপ্ন ও কল্পনা দিয়া গড়া। হোক না স্বপ্ন মিথ্যা, কল্পনা বাস্তবতার লেশশূন্য; নাই বা থাকিল সবসময় তাহাদের পিছনে স্বার্থকতা; তাহারাই যে জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ, তাহারা আসুক, জীবনে অক্ষয় হোক তাহাদের আসন; তুচ্ছ স্বার্থকতা, তুচ্ছ লাভ।
মানুষের আয়ু মানুষের জীবনের ভুল মাপকাঠি। দশ বছরের জীবন সে উপভোগ করেছে দেড় বছরে।
এই জনহীন প্রান্তর, এই রহস্যময়ী রাত্রি, অচেনা নক্ষত্রে ভরা আকাশ, এই বিপদের আশঙ্কা – এইতো জীবন। শান্ত নিরাপদ জীবন নিরীহ কেরানীর জীবন হতে পারে – তার নয়।
মা ছেলেকে স্নেহ দিয়া মানুষ করিয়া তোলে, যুগে যুগে মায়ের গৌরবগাথা তাই সকল জনমনের বার্তায় ব্যক্ত। কিন্তু শিশু যা মাকে দেয়, তাই কি কম? সে নিঃস্ব আসে বটে, কিন্তু তার মন-কাড়িয়া-লওয়া হাসি, শৈশবতারল্য, চাঁদ ছানিয়াগড়া মুখ, আধ আধ আবোল-তাবোল বকুনির দাম কে দেয়? ওই তার ঐশ্বর্য, ওরই বদলে সে সেবা নেয়, রিক্ত হাতে ভিক্ষুকের মতো নেয় না।”
এসব ভবিষ্যতের মেয়ে, অনাগত দিনের আগমনী এদের অলক্তরাগরক্ত চরণধ্বণিতে বেজে উঠেছে, কেউ কেউ শুনতে পায়। আজ গ্রাম্য সমাজের পুঞ্জীকৃত অন্ধকারে এইসব সাহসিকা তরুণীর দল অপাঙক্তেয়–প্রত্যেক চন্ডীমন্ডপে গ্রাম্য বৃদ্ধদের মধ্যে ওদের বিরুদ্ধে ঘোঁট চলচে, জটলা চলচে, কিন্তু ওরাই আবাহন করে আনচে সেই অনাগত দিনটিকে।
কিন্তু মানুষের জীবনে এমন সব অদ্ভুদ ঘটনা ঘটে তা উপন্যাসে ঘটাতে গেলে পাঠকরা বিশ্বাস করতে চাইবে না, হেসেই উড়িয়ে দেবে।
জ্যোৎস্না আরো ফুটিয়াছে, নক্ষত্রদল জ্যোৎস্নালোকে প্রায় অদৃশ্য, চারিধারে চাহিয়া মনে হয় এ সে পৃথিবী নয় এতদিন যাহাকে জানিতাম, এ স্বপ্নভূমি, এই দিগন্তব্যাপী জ্যোৎস্নায় অপার্থিব জীবেরা এখানে নামে গভীর রাত্রে, তারা তপস্যার বস্তু, কল্পনা ও স্বপ্নের বস্তু, বনের ফুল যারা ভালবাসে না, সুন্দরকে চেনে না, দিগ্বলয়রেখা যাদের কখনো হাতছানি দিয়া ডাকে নাই, তাদের কাছে এ পৃথিবী ধরা দেয় না কোনো কালেই।
বুঝি না কেন এক-এক জাতির মধ্যে সভ্যতার কী বীজ লুক্কায়িত থাকে, তাহারা যত দিন যায় তত উন্নতি করে─ আবার অন্য জাতি হাজার বছর ধরিয়াও সেই একস্থানে স্থাণুবৎ নিশ্চল হইয়া থাকে? বর্বর আর্যজাতি চার-পাঁচ হাজার বছরের মধ্যে বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, কাব্য, জ্যোতির্বিদ্যা, জ্যামিতি, চরক-সুশ্রুত লিখিল, দেশ জয় করিল, সাম্রাজ্য পত্তন করিল, ভেনাস দ্য মিলোর মূর্তি, পার্থেনন, তাজমহল, কোলোঁ ক্যাথিড্রাল গড়িল, দরবারি কানাড়া ও ফিফথ সিম্ফোনির সৃষ্টি করিল─ এরোপ্লেন, জাহাজ, রেলগাড়ি, বেতার, বিদ্যুৎ আবিষ্কার করিল─ অথচ পাপুয়া, নিউগিনি, অস্ট্রেলিয়ার আদিম অধিবাসীরা, আমাদের দেশের ওই মুণ্ডা, কোল, নাগা, কুকিগণ যেখানে সেখানেই কেন রহিয়াছে এই পাঁচ হাজার বছর?
করুনা ভালোবাসার সবচেয়ে মূল্যবান মশলা, তার গাঁথুনি বড় পাকা হয়।
দুঃখ জীবনের বড় সম্পদ; দৈন বড় সম্পদ; শোক, দারিদ্র, ব্যার্থতা বড় সম্পদ, মহৎ সম্পদ। যে জীবন শুধু ধনে মানে সার্থকতায়, সাফল্যে, সুখে-সম্পদে ভরা, শুধুই যেখানে না চাইতে পাওয়া, শুধুই চারিধারে প্রাচুর্যের, বিলাসের মেলা,
যে জীবন অশ্রুকে জানে না অপমানকে জানে না, আশাহত ব্যার্থতাকে জানে না সে জীবন মরুভুমি সে সুখসম্পদ-ধনসম্পদ ভরা ভয়ানক জীবনকে
আমরা যেন ভয় করতে শিখি।
যুগে যুগে অপরাজিত জীবন-রহস্য কি অপূর্ব্ব মহিমাতেই আবার আত্মপ্রকাশ করে!
বর্ষার দিনে এই ইছামতীর কূলে কূলে ভরা ঢলঢল রূপে সেই অজানা মহাসমুদ্রের তীরহীন অসীমতার স্বপ্ন দেখতে পায় কেউ কেউ..কত যাওয়া-আসার অতীত ইতিহাস মাখানো ঐ সব মাঠ, ঐ সব নির্জন ভিটের ঢিপি–কত লুপ্ত হয়ে যাওয়া মায়ের হাসি ওতে অদৃশ্য রেখায় আঁকা। আকাশের প্রথম তারাতা তার খবর রাখে হয়তো।
বুড়ি সে কথা হজম করিয়া লইল। এরূপ অনেক কথাই তাহাকে দিনের মধ্যে দশবার হজম করিতে হয়। সেকালের ছড়াটা সে এখনো ভোলে নাই –
লাথি ঝাঁটা পায়ের তল,
ভাত কাপড়টা বুকের বল।
বিপদে পড়িবার ভয়েই লোকে ভয় পায়। কিন্তু বিপদের মধ্যে পড়িলে তখন আর সে ভয় থাকে না।
Niren had not seen her properly before. She had very lovely eyes. He had not before seen such a beautiful expression in any one’s eyes, except perhaps those of her brother Opu. They were big and sleepy. They had the same drowsy quality which was hidden in the deep fresh greenness of the mango and bokul trees that lined the paths in the village. The dawn that would quicken them had not yet come; and the heavy sleep that precedes waking still brooded over them. Yes, it was dawn they made him think of; dawn, when sleeping eyes first open, dawn when maidens walk down to the river’s edge, and every window gives forth the odor of incense; dawn, that cool ambrosial hour when the waters of awakening flow cool and fresh through house after house.
रोशनी और अँधेरे की अपरूप माया से जंगल परियों के सोए हुए देश की भाँति रहस्य का घूँघट ओढ़ लेता है। कहीं से हवा का सनसनाता हुआ झोंका अमलतास के डाल को हिला कर और कुंदरू की झाड़ियों की फुनगियों को लजाकर चला जाता है।
বইখানা খুলিতেই একদল কাগজ-কাটা পোকা নিঃশব্দে বিবর্ণ মার্বেল কাগজের নিচে হইতে বাহির হইয়া ঊর্ধ্বশ্বাসে যেদিকে দুই চোখ যায় দৌড় দিল। অপু বইখানা নাকের কাছে লইয়া গিয়া ঘ্রাণ লইল, কেমন পুরোনো গন্ধ! মেটে রঙের পুরু পুরু পাতাগুলোর এই গন্ধটা তাহার বড় ভালো লাগে
জীবনকে খুব কম মানুষেই চেনে। জন্মগত ভুল সংস্কারের চোখে সবাই জীবনকে বুঝিবার চেষ্টা করে, দেখিবার চেষ্টা করে, দেখাও হয় না, বোঝাও হয় না। তাছাড়া সে চেষ্টাই বা ক’জন করে?
সে নিজে বেশ বুঝতে পারে, এই এক বৎসরে তাহার মনের প্রসারতা এত বাড়িয়া গিয়াছে, এমন একটা নতুনভাবে সে জগৎটাকে, জীবনটাকে দেখিতে আরম্ভ করিয়াছে…
সে এটুকু বেশ বোঝে, কলেজে পড়িয়া ইহা হয় নাই, কোনো প্রফেসরের বক্তৃতাতেও না- যাহা কিছু হইয়াছে, এই বড় আলমারি ভরা লাইব্রেরিটার জন্য, সে তাহার কাছে কৃতজ্ঞ। সে যতক্ষণ লাইব্রেরিতে থাকে, ততক্ষণ তাহার খাওয়াদাওয়ার কথা তত মনে থাকে না। এই সময়টা এক একটা খেয়ালের ঘোরে কাটে। খেয়ালমত এক একা বিষয়ে প্রশ্ন জাগে মনে, তাহার উত্তর খুজিতে গিয়া বিকারের রোগীর মত অদম্য পিপাসায় সে সম্বন্ধে যত বই পাওয়া যায় হাতের কাছে- পড়িতে চেষ্টা করে।
আসল কথা, মনের আনন্দই মানুষের জীবনের অস্তিত্বের সব চেয়ে বড় মাপ কাঠি। আমি দশ মাইল গিয়ে যে আনন্দ পেলাম, তুমি যদি হাজার মাইল গিয়ে সেই আনন্দ পেয়ে থাকো তবে তুমি আমি দুজনেই সমান। দশ মাইলে আর হাজার মাইলে পার্থক্য নেই।
কান্টের মতো দার্শনিক একটা ছোট্ট শহরে ছিলেন জার্মানির, এত বড় চিন্তা করবার খোরাক পেয়েছিলেন সেখানে থেকেই। শহরে না থাকলেই লোক পুরোনো হয় বলে মনে কর কেন? নতুন আর পুরোনো অত্যন্ত সাধারণ ধরনের শ্রেণীবিভাগ। নতুন মাত্রেই ভালো নয়, পুরোনো মাত্রই মূল্যহীন নয়।
এ এক আলাদা জীবন, যারা ঘরের দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ থাকিতে ভালোবাসে না, সংসার করা যাদের রক্তে নাই, সেই সব বারমুখো, খাপছাড়া প্রকৃতির মানুষের পক্ষে এমন জীবনই তো কাম্য। কলিকাতা হইতে প্রথম আসিয়া এখানকার এই ভীষন নির্জনতা ও সম্পূর্ণ বন্য জীবনযাত্রা কি অসহ্য হইয়াছিল, কিন্তু এখন আমার মনে হয় এই ভাল, এই বর্বর রুক্ষ বন্য প্রকৃতি আমাকে তার স্বাধীনতা ও মুক্তির মন্ত্রে দীক্ষিত করিয়াছে, শহরের খাঁচার মধ্যে আর দাঁড়ে বসিয়া থাকিতে পারিব কি ? এই পথহীন প্রান্তরের শিলাখন্ড ও শাল পলাশের বনের মধ্য দিয়া এই রকম মুক্ত আকাশতলে পরিপূর্ণ জ্যোৎস্নায় হু- হু ঘোড়া ছুটাইয়া চলার আনন্দের সহিত আমি দুনিয়ার কোনো সম্পদ বিনিময় করিতে চাহি না।
এ এক আলাদা জীবন, যারা ঘরের দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ থাকিতে ভালোবাসে না, সংসার করা যাদের রক্তে নাই, সেই সব বারমুখো, খাপছাড়া প্রকৃতির মানুষের পক্ষে এমন জীবনই তো কাম্য।
मुनि जी जब कभी चिन्ता करते हैं तो ईश्वर की चिन्ता करते हैं, और उन्हें किसी की आस नहीं है। ठलुआ आदमी ताश और पाशे के विषय में सोचता है। धनी धन की चिन्ता करता है और निन्यानवे के फेर में पड़ा रहता है। योगी जगन्नाथ की और फकीर मक्के की चिन्ता करता है। गृहस्थ किसी तरह अपने ठाठ बनाए रखने की बात सोचता है। माँ शिशु की चिन्ता करती है और पशु पेट भरने की फ़िक्र में रहता है।
তবে ঘরকে একেবারে মন থেকে তাড়াতে হয়। ঘর মনে থাকলে পথ ধরা দেয় না। ঘর দুদিনের বন্ধন, পথ চিরকালের।
शर-शय्या पर लेटे हुए बूढ़े वीर भीष्म के मुमुर्ष आेंठों पर, तीखे बाणों में पृथ्वी फोड़कर अर्जुन ने भोगवती की धारा की सृष्टि की थी।
एक तरुण वीर की उदारता का फायदा उठाकर किसी मँगते ने उसके अक्षय कवच-कुंडल माँग लेने के लिए हाथ पसार रखा है।
प्रथम यौवन में सरयूतट के कुसुमित कानन में मृगया करते समय राजा दशरथ ने मृग के भ्रम में पानी खोजने वाले एक दरिद्र बालक को मार डाला था।
উপসংহার :- বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথের পাঁচালী শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। শুধু এই উপন্যাসেই নয় তার অন্যান্য উপন্যাস ও ছোট গল্পের প্লট ছিল বাংলার প্রকৃতি ও বাস্তব জীবন। আর এই বাস্তবকে জীবন্ত করে ফুটিয়ে তুলতে ব্যবহার করেছেন উল্লেখযোগ্য সব উক্তি।