বাবরের আত্মজীবনী -র নাম, ভাষা, গ্ৰন্থটির বিষয়, গ্ৰন্থটির বৈশিষ্ট্য, প্রাণবন্ত চিত্র, বাবরের কাব্যমোদী মন, গ্ৰন্থটির শেষ অংশ, বাবরের বর্ণনা সঠিক নয়, বাবরের আত্মজীবনীর গুরুত্ব সম্পর্কে বেভারিজের অভিমত ও ঐতিহাসিক লেনপুল-এর অভিমত সম্পর্কে জানবো।
মোগল সম্রাট জহিরউদ্দিন মহম্মদ বাবরের আত্মজীবনী ‘বাবরনামা’ বা ‘তুজুক-ই-বাবরী’ প্রসঙ্গে ‘বাবরনামা’ গ্ৰন্থের ভাষা, ‘বাবরনামা’ গ্ৰন্থের বিষয়বস্তু, ‘বাবরনামা’ গ্ৰন্থের বৈশিষ্ট্য, ‘বাবরনামা’ গ্ৰন্থে প্রাণবন্ত চিত্র, বাবরের আত্মজীবনী গ্ৰন্থের শেষ অংশ, বাবরের আত্মজীবনী গ্ৰন্থের গুরুত্ব।
বাবরের আত্মজীবনী (Autobiography of Babur in Bengali)
ঐতিহাসিক গ্রন্থ | তুজুক-ই-বাবরী |
ভাষা | তুর্কি |
বৈশিষ্ট্য | সারল্য, স্পষ্টবাদিতা ও প্রাঞ্জলতা |
লেখক | বাবর |
ভূমিকা :- তুর্কি ভাষায় রচিত বাবরের আত্মজীবনী তুজুক-ই-বাবরী’ বা ‘বাবরনামা’ এক অসাধারণ সাহিত্যকীর্তি। মোগল সম্রাট বাবর যে জগতে বাস করতেন বা যাদের সঙ্গলাভ করেছিলেন গ্রন্থটি তারই এক বিশ্বস্ত ও প্রাঞ্জল বিবরণ এবংসমকালীন যুগের একটি মূল্যবান ইতিহাস।
বাবরের আত্মজীবনীর গ্রন্থটির বিষয়বস্তু
এই গ্ৰন্থটি পরিসংখ্যান সমন্বিত বিশদ বিবরণে পূর্ণ। তিনি যা করেছিলেন তার একটি সামগ্রিক ও জীবন্ত চিত্র তিনি এই গ্রন্থে তুলে ধরেছেন।
বাবরের আত্মজীবনীর গ্রন্থটির বৈশিষ্ট্য
সারল্য, স্পষ্টবাদিতা ও প্রাঞ্জলতা গ্রন্থটির অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। কোনও কথা গোপন না করে তিনি অকপটে নিজ দোষ-ত্রুটি, ব্যক্তিগত সাফল্য, ব্যথা-বেদনা, বন্ধুপ্রীতি—সবই এই গ্রন্থে তুলে ধরেছেন।
বাবরের আত্মজীবনী যেন এক প্রাণবন্ত চিত্র
বিভিন্ন দেশ ও জাতির চরিত্র, আচার-আচরণ, পোশাক-পরিচ্ছদ, লতাগুল্ম, বৃক্ষাদি, পশুপক্ষী, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড়, উপত্যকা, নদ-নদী-জঙ্গল সব কিছুর এক প্রাণবন্ত চিত্র গ্রন্থ-মধ্যে উপস্থিত।
বাবরের কাব্যমোদী মন
এই গ্রন্থের মধ্যে ফুটে উঠেছে বাবরের কাব্যামোদী, প্রকৃতিপ্রেমিক ও স্পর্শকাতর একটি মন।
আত্মজীবনী গ্ৰন্থটির শেষ অংশ
বইটির শেষ অংশে ১৫২৫-২৯ খ্রিষ্টাব্দের ঘটনাবলীর কথা লিখিত হয়েছে। এই অংশেই বর্ণিত হয়েছে তার দিল্লি অভিযান, পানিপথের প্রথম যুদ্ধ, ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা ও তার প্রাথমিক বিস্তারের কথা।
বাবরের বর্ণনা সঠিক নয়
ভারত সম্পর্কে বাবরের বর্ণনা সর্বদা সঠিক নয়। এ দেশের অনেক কিছুই তিনি জানতেন না। এ দেশের মানুষের চেহারা, পোশাক-পরিচ্ছদ তাঁর ভালো লাগে নি। দিল্লি-আগ্রার মতো সমৃদ্ধ শহর তাঁকে আকর্ষণ করতে পারে নি।
বাবরের আত্মজীবনী গ্রন্থটির গুরুত্ব
ভারত সম্পর্কে বাবরের বর্ণনা সঠিক না হলেও তুজুক-ই-বাবরী-র ঐতিহাসিক গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না। যেমন –
(১) বেভারিজের অভিমত
ঐতিহাসিক শ্রীমতী বেভারিজ (Beveridge) বলেন যে, “বাবরের আত্মজীবনী সেই সব অমূল্য গ্রন্থগুলির মতো—যেগুলি সর্বকালের জন্য এবং তা সন্ত অগাস্টাইন ও রুশোর কনফেসন্স’ (Confessions) এবং গিবন ও নিউটন -এর ‘স্মৃতিকথা’-র সম-পর্যায়ভুক্ত।”
(২) লেনপুলের অভিমত
ঐতিহাসিক লেনপুল-এর মতে, “বাবরের প্রতিষ্ঠিত রাজবংশ ও তার গৌরব বিলুপ্ত হয়েছে, কিন্তু তাঁর স্বরচিত জীবনস্মৃতিআজও অমর ও অক্ষয়।”
উপসংহার :- বর্তমানে মধ্য, পশ্চিম ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্তত ২৫টি দেশে এই বইটি বা তার কিছু অংশ স্কুলস্তরে পাঠ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ঢাকার বাংলা একাদেমি থেকে প্রকাশিত বইটির বাংলা অনুবাদও এখন সহজলভ্য।
প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “বাবরের আত্মজীবনী” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যে কোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।
সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।
(FAQ) বাবরের আত্মজীবনী সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
তুজুক-ই-বাবরী।
তুর্কি ভাষায়।
বাবরনামা।