হুমায়ুনের চরিত্র ও কৃতিত্ব প্রসঙ্গে ব্যক্তি হুমায়ুন, বিদ্যানুরাগী হুমায়ুন, রচনাকার হুমায়ুন, আবুল ফজলের অভিমত, সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক হুমায়ুন, চিত্রশিল্পের অনুরাগী হুমায়ুন, ধর্মবিশ্বাস, হিন্দুদের প্রতি নীতি এবং যোদ্ধা ও প্রশাসক হিসেবে হুমায়ুনের কৃতিত্ব সম্পর্কে জানবো।
মোগল সম্রাট হুমায়ুনের চরিত্র ও কৃতিত্ব প্রসঙ্গে ব্যক্তি হুমায়ুন, বিদ্যানুরাগী হুমায়ুন, রচনাকার হুমায়ুন, সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক হুমায়ুন, চিত্রশিল্পের অনুরাগী হুমায়ুন, হুমায়ুনের ধর্মবিশ্বাস, হিন্দুদের প্রতি হুমায়ুনের নীতি, হুমায়ুনের চরিত্রের মূল্যায়ণ, যোদ্ধা ও প্রশাসক হিসেবে হুমায়ুনের কৃতিত্ব।
হুমায়ুনের চরিত্র ও কৃতিত্ব (Character and Achievements of Humayun)
বিষয় | হুমায়ুনের চরিত্র ও কৃতিত্ব |
রাজত্বকাল | ১৫৩০-৪০ এবং ১৫৫৫-১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দ |
পূর্বসূরি | বাবর |
উত্তরসূরি | আকবর |
ভূমিকা :- ভারত ইতিহাসের অন্যতম ব্যর্থ শাসক হুমায়ুন নানা গুণের অধিকারী ছিলেন। ফেরিস্তা-র মতে, চরিত্রের সদগুণাবলীর দিক থেকে তিনি ছিলেন অতুলনীয়।
ব্যক্তি হুমায়ুন
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন কর্তব্যপরায়ণ পুত্র, প্রেমময় স্বামী, স্নেহময় পিতা ও হৃদয়বান নরপতি। আত্মীয়-স্বজন, জ্ঞাতি, বন্ধু-বান্ধব, সৈনিক ও কর্মচারীদেরপ্রতি ছিল তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসা ও মমত্ববোধ।
বিদ্যানুরাগী হুমায়ুন
তিনি ছিলেন বিদ্বান ও বিদ্যোৎসাহী। তুর্কি, আরবি ও ফারসি ভাষায় তাঁর যথেষ্ট ব্যুৎপত্তি ছিল। এছাড়া জ্যোতিষ, গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, দর্শন ও ইসলামিয় ধর্মতত্ত্বে তাঁর গভীর পাণ্ডিত্য ছিল।
রচনাকার হুমায়ুন
তিনি গজল, মসনভী ও রুবাই রচনা করতেন। তাঁর একটি কাব্যগ্রন্থের নাম ‘দিওয়ান-ই-হুমায়ুন’।
আবুল ফজলের অভিমত
ঐতিহাসিক আবুল ফজল বলেন যে, “হুমায়ুন আলেকজাণ্ডার -এর মতো উদ্যমী এবং অ্যারিস্টটল -এর মতো জ্ঞানী ছিলেন।”
সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক হুমায়ুন
তাঁর রাজসভা ছিল সাহিত্যচর্চার অন্যতম কেন্দ্র। দেশ-বিদেশের বহু কবি ও জ্ঞানী-গুণী-পণ্ডিতরা এখানে সমবেত হতেন। মোল্লা ইলিয়াস, খাজা হিজরি জামি, খুদামীর, সাহাবুদ্দিন কাফা, জৌহর প্রমুখ তাঁর রাজসভা অলঙ্কৃত করতেন।
চিত্রশিল্পের অনুরাগী হুমায়ুন
চিত্রকলার প্রতিও তাঁর যথেষ্ট অনুরাগ ছিল। তিনি পারস্যের বেশ কয়েকজন চিত্রশিল্পীকে ভারতে নিয়ে আসেন।
ধর্মবিশ্বাস
নিষ্ঠাবান সুন্নি মুসলমান হলেও তাঁর কোনও ধর্মীয় গোঁড়ামি ছিল না। তাঁর প্রধানা মহিষী হামিদাবানু, বিশ্বস্ত অনুচর বৈরাম খাঁ, এবং তাঁর চরম বিপদের দিনে আশ্রয়দাতা পারস্যের সুলতান সকলেই ছিলেন শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত।
হিন্দুদের প্রতি নীতি
তিনি ‘সুফি’ মতবাদের দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন এবংফকির-দরবেশদের সঙ্গে ধর্মীয় আলোচনা করতেন। কিন্তু হিন্দুদের প্রতি ব্যবহারে তিনি যুগধর্মের ঊর্ধে উঠতে পারেন নি। হিন্দুদের ওপর অত্যাচার না চালালেও তিনি কিন্তু “জিজিয়া’ বা অন্যান্য বৈষম্যমূলক কর প্রত্যাহার করেন নি।
যোদ্ধা ও প্রশাসক
তিনি একজন সুদক্ষ যোদ্ধা ও রণনীতিজ্ঞ ছিলেন, কিন্তু সেনাপতি বা প্রশাসক হিসেবে তিনি কোনও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে যেতে পারেন নি। অন্যদিকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী শেরশাহ মাত্র পাঁচ বছর রাজত্ব করলেও তিনি একটি সুষ্ঠু প্রশাসনিক ব্যবস্থা স্থাপন করে যান, যার গুরুত্ব কখনোই অস্বীকার করা যায় না।
উপসংহার :- হুমায়ুন নিজে ব্যর্থ হলেও তাঁর পুত্র আকবর মোগল সাম্রাজ্যকে নতুন পথে পরিচালিত করেন। এদিক থেকে হুমায়ুন সত্যই ‘ভাগ্যবান’ ছিলেন।
প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “হুমায়ুনের চরিত্র ও কৃতিত্ব” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যে কোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।
সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।
(FAQ) হুমায়ুনের চরিত্র ও কৃতিত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
ভাগ্যবান।
মোগল সম্রাট জহিরুদ্দিন মহম্মদ বাবর।
শের-ই-মণ্ডল পাঠাগারের সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে।
আকবর।