চাণক্য শ্লোক বা নীতি কোন্ স্থানে বাস করা উচিত নয়? -এ বিষয়ে সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি আপনি যদি অধ্যায় ভিত্তিক চাণক্য শ্লোকগুলি
চাণক্য শ্লোক
আপনি যদি অধ্যায় ভিত্তিক চাণক্য শ্লোকগুলি দেখতে চান তাহলে নিচের Table টি Follow করুণ।
অধ্যায় | শ্লোক |
---|---|
প্রথম | ৩৪ টি |
দ্বিতীয় | ৩৪ টি |
তৃতীয় | ৩৪ টি |
চতুর্থ | ৩৪ টি |
পঞ্চম | ৩৪ টি |
ষষ্ঠ | ৩৪ টি |
সপ্তম | ৩৪ টি |
দুঃখ বিষয়ক সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
মূর্খ শিষ্যোপদেশেন দুষ্টাস্ত্রীভরণেন চ।
দুঃখিতে সংপ্রয়োগেন পণ্ডিতোহপ্যসীদতি।।
বঙ্গানুবাদ
মূর্খ শিষ্যে যে করে উপদেশ বর্ষণ।
দুষ্টা ভার্যারে যে করে পালন।।
দুঃখ তাঁর রহে চিরন্তন।
মিথ্যা নয় এই কথা পণ্ডিত বচন।।
সরল ব্যাখ্যা
মূর্খ শিষ্যকে উপদেশ দান করে কোন লাভ হয় না, মুর্খ উপদেশের মর্ম উপলব্ধি করতে পারে না, দুষ্টা স্ত্রী ভরণ-পোষণ করাও সেইরূপ দুঃখজনক।
মৃত্যুর আশঙ্কাযুক্ত গৃহ সম্পর্কিত সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
দুষ্টা ভাৰ্য্যা শঠং মিত্রং ভৃত্যশ্চোত্তরদায়কঃ।
সসর্পে চ গৃহে বাসো মৃত্যুরেব ন সংশয়।।
বঙ্গানুবাদ
কথায় কথায় যে ভৃত্য করে উত্তরদান।
দুষ্টা ভাষা, কপটী বন্ধু যথা করে অধিষ্ঠান।।
সে গৃহ সর্প সহ বাসের সমান।
মৃত্যুর আশঙ্কা তথা চির বিদ্যমান।।
সরল ব্যাখ্যা
যে গৃহে দুষ্টা ভার্যা, কপটী বন্ধু এবং সর্বদা উত্তর দানকারী ভৃত্য অবস্থান করে সে গৃহ কালসর্প সহ বাস করার সমতুল্য, কারণ তথা সর্বদাই মৃত্যুর আশঙ্কা বিদ্যমান থাকে।
আত্মরক্ষা বিষয়ক সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
আপদর্থে ধনং রক্ষেদ্দারান্ রক্ষেদ্ধনৈরপি ।
আত্মানং সততং রক্ষেৎ দারৈরপি ধনৈরপি ।
বঙ্গানুবাদ
অসময় বিবেচনায় কর ধন সঞ্চয়,
পত্নী রক্ষা করাও কর্তব্য-বিষয় ৷৷
কিন্তু সর্বাগ্রে আত্মরক্ষা সার-
আত্মায় না রক্ষিলে দুঃখ যে অপার ।।
সরল ব্যাখ্যা
অসময়ের কথা ভেবে ধনরক্ষা বা অর্থসঞ্চয় করা উচিত এবং পত্নীকেও রক্ষা করা স্বামীর কর্তব্য। কিন্তু আত্মরক্ষা করা তদপেক্ষা শ্রেয়, অর্থ ও পত্নী রক্ষা অপেক্ষা আত্মরক্ষা শ্রেয়।
কোন্ স্থানে বাস করা উচিত নয়? -এ বিষয়ে সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
কোন্ স্থানে বাস করা উচিত নয়? এ বিষয়ে চাণক্যের ২ টি শ্লোক রয়েছে। শ্লোকগুলি নিম্নরূপ-
কোন্ স্থানে বাস করা উচিত নয়? -এ বিষয়ে সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি- ১
চাণক্য শ্লোক
যস্মিন্ দেশে ন সম্মানো ন বৃত্তির্ন চ বান্ধবাঃ ।
ন চ বিদ্যগমোহপ্যস্তি বাসং তত্র ন কারয়েৎ ।
বঙ্গানুবাদ
যথা সম্মান, বিদ্যা, বন্ধু, জীবিকা নাহি লাভ হয় ।
সে স্থান পরিত্যজ্য জানিবে নিশ্চয় ।
সরল ব্যাখ্যা
যে স্থানে বা যে দেশে সম্মান, বন্ধু বা বিদ্যালাভ হয় না, জীবিকা অর্জনেরও কোন সুযোগ থাকে না, সে স্থান বাসের অযোগ্য ।
কোন্ স্থানে বাস করা উচিত নয়? -এ বিষয়ে সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি- ২
চাণক্য শ্লোক
ধণিকঃ শ্রোত্রিয়ো রাজা নদী র্বৈদস্ত পঞ্চমঃ ।
পঞ্চ যত্র ন বিদ্যতে ন তত্র দিবসং বসেৎ।
বঙ্গানুবাদ
যে দেশে রাজা নাই, বৈদ্য নাই, ধনী নাই
না আছে বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ ।
সে দেশ বাসের অযোগ্য-
বাসযোগ্য নহে কদাচন ॥
সরল ব্যাখ্যা
যে দেশে বা যে স্থানে ঋণদানকারী ধনী ব্যক্তি, বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ, জলদানকারী নদী, বৈদ্য, প্রশাসন ব্যবস্থা চালাইবার জন্য কোন রাজা নাই – সে দেশ বা স্থান বাসযোগ্য নয়। বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ না থাকলে শিক্ষালাভ হয় না, রাজা বা প্রশাসক না থাকলে দেশে অরাজক অবস্থা হয়, নদী না থাকলে জলাভাবে কষ্ট পেতে হয়, বৈদ্য না থাকলে চিকিৎসার সুযোগ থাকে না, ঋণদানকারী ধনী না থাকলে অর্থাভাবের সময় ঋণ পাওয়া যায় না।
কাহার সহিত বাস করা উচিত নয় -এ বিষয়ে সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
লোকযাত্রা ভয়ং লজ্জা দাক্ষিণ্যং ত্যাগশীলতা ।
পঞ্চ যত্র ন বিদ্যন্তে ন কুৰ্য্যাত্তত্ৰ সংগতিম ॥
বঙ্গানুবাদ
শক্তি, ত্যাগ, ভয়, লজ্জা, দয়া- এই পাঁচ যার নাই,
থাকিও না কভু সুধী-তাঁহারি ঠাঁই ।।
সরল ব্যাখ্যা
যার শক্তি, ভয়, লজ্জা, ত্যাগ, দয়া নাই, তার সঙ্গে কখনও বাস করা উচিত নয়। কারণ ঐরূপ ব্যক্তি কোনো প্রয়োজনেই লাগে না ।
উপযোগিতা ও স্বরূপ সম্পর্কিত সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
জানীয়াৎ প্রেষণে ভৃত্যান্ বান্ধবান্ ব্যসনাগমে ।
মিত্র চাপতকালে তু ভাৰ্য্যা চ বিভবক্ষয়ে ।। १
বঙ্গানুবাদ
কার্যধারা ভৃত্যের পাইবে পরিচয় ।
আত্মীয় সেই তব, যে থাকে দুঃখের সময় ।।
বিপদকালে যে থাকে সেই বন্ধুজন ।
পত্নীকে চিনিতে পার, যখন হইবে নির্ধন
সরল ব্যাখ্যা
কার্য দ্বারাই ভৃত্যের সার্থকতা প্রমাণিত হয়, দুঃখের সময়েই আত্মীয়-স্বজনকে চেনা যায়, বিপদকালে বন্ধুর পরিচয় পাওয়া যায়, আর ধনহীন অবস্থায় পত্নীর সম্যগ্ রূপ জানা যায়।
প্রকৃত বন্ধু বিষয়ক সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
উৎসবে ব্যসনে প্রাপ্তে দুর্ভিক্ষে শত্রুসঙ্কটে ।
রাজদ্বারে শ্মশানে চ যঃ তিষ্ঠতি স বান্ধবঃ ॥
বঙ্গানুবাদ
আনন্দে, দুঃখে, দুর্ভিক্ষে, রাজদ্বারে, শত্রুসঙ্কটে
শ্মশানযাত্রাকালে যে রহে বিদ্যমান ।
সেই তো প্রকৃত বন্ধু – জানিবে ধীমান ॥
সরল ব্যাখ্যা
আনন্দের সময়, রোগ-দুঃখে, অকাল-সময়ে, শত্রু সঙ্কটে, রাজদ্বারে (মামলা-মোকদ্দমায়) ও শ্মশানযাত্রার সময়ে – যিনি সর্বদা সহায়তার হস্ত প্রসারিত করেন – তিনিই প্রকৃত বন্ধু।
যাহা নিশ্চিত তাহাই গ্রহণীয় -এ বিষয়ে সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
যো ধ্রুবানি পরিত্যাজ্য অধ্রুবং পরিসেবতে।
ধ্রুবানি তস্য নশ্যন্তি অধ্রুবং নষ্টমের হি ৷৷
বঙ্গানুবাদ
হাতের জিনিস ফেলে দিয়ে – অনিশ্চিতের পিছে ধায় ।
অতি লোভের ফলে সে জন সকলি হারায় ।।
সরল ব্যাখ্যা
যিনি নিশ্চিত জিনিস পরিত্যাগ করে – অনিশ্চিতের (যার স্থিরতা নাই, অর্থাৎ পাওয়া যাইবে কিনা) – পিছনে গমন করেন – তিনি নিশ্চিত কি অনিশ্চিত উভয়ই হারান
স্ত্রীর কুল বা বংশ সম্পর্কিত সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
বরয়েদ্কুলজাং প্রাজ্ঞা বিরূপামপি কন্যকাম্ ।
রূপশীলাং ন নীচস্য সদ্দশে কুলে ৷৷
বঙ্গানুবাদ
সুরূপা হইলেও, নীচকুল জাত কন্যা সদা করিবে বর্জন ।
সমকুল শ্ৰেয় সদ্য, কুরূপা হইলেও উত্তমকুলা, সাদরে করিবে গ্রহণ ৷৷
সরল ব্যাখ্যা
সমান সমান কূলের কন্যা বিবাহ করা ভাল, কুরূপা উত্তম কুলজাত কন্যা সর্বদা গ্রহণীয়, কিন্তু রূপসী নীচকুল জাত কন্যা বর্জনীয়। নীচকুল জাত কন্যা সচরাচর নীচমনা হয়।
কে বিশ্বাসভাজন নয় -এ বিষয়ে সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
নদীনাং শস্ত্রপাণীনাং নখিনাং শৃঙ্গিনাং তথা ।
বিশ্বাস নৈব কর্ত্তব্যঃ স্ত্রীষু রাজকুলেষু চ ।।
বঙ্গানুবাদ
নখ বা শিং আছে যার, রাজকুল অথবা শস্ত্রধারী,
বিশ্বাসভাজন নহে কেহ – তথা নদী ও নারী ॥
সরল ব্যাখ্যা
নখ বা শিং-যুক্ত প্রাণী, রাজা বা রাজ কর্মচারী, শস্ত্রধারী, নদী ও নারী – ইহাদের কাহাকেও বিশ্বাস করা উচিত নয়।
গ্রহণীয় বিষয়ক সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
বিষাদপ্যয়মৃতংগ্রাহ্যমমেধ্যাদপি কাঞ্চনম্
নীচাদ্প্যুত্তমাং বিদ্যাং স্ত্রীরত্নং দুষ্কুলাদপি ৷৷ ১২
বঙ্গানুবাদ
বিষ হইতে অমৃত, নীচব্যক্তি হইতে উত্তম বিদ্যা
দুষ্কুল হইতে স্ত্রী-রত্ন করিবে গ্রহণ।
অপবিত্র স্থান হইতেও-
স্বর্ণ যথা করিও আহরণ ॥
সরল ব্যাখ্যা
বিষ হইতে অমৃত, অপবিত্র দ্রব্যসমূহের মধ্যে স্বর্ণ, নীচ ব্যক্তি হইতে শ্রেষ্ঠ বিদ্যা এবং দুষ্কুল হইতেই উত্তমা স্ত্রীরত্ন সর্বদা গ্রহণীয়। মন্দ হইতে ভাল কিছু সংগ্রহ করা উচিত।
সুখের সংসার ও স্বর্গসুখ বিষয়ক সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
যস্য পুত্রো বশীভূতো ভাৰ্য্যা ছন্দানুগামিনী ।
বিভবে যস্য সন্তুষ্ট স্তস্য স্বৰ্গ হহৈব হি || ১৩
বঙ্গানুবাদ
পত্নী যার অনুগামিনী, বাধ্য অতি পুত্র যার ।
অর্থে যিনি সন্তুষ্ট, ধরায় স্বর্গ সুখ তার ৷৷ ১৩
সরল ব্যাখ্যা
পুত্র যাঁহার বাধ্য, পত্নী যাঁহার অনুগামিনী এবং যিনি যে অর্থ পাইয়াছেন। (বা পাইতেছেন) তাহাতেই সন্তুষ্ট—তিনি পৃথিবীতেই স্বর্গ সুখ উপভোগ করেন।
সাধনার ফল সম্পর্কে সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
ভোজ্যং ভোজনশক্তিশ্চ রতিশক্তির্বরাঙ্গনা ।
বিভব দানশক্তিশ্চ নান্নস্য তপসঃ ফলম্ ৷৷ ১৪
বঙ্গানুবাদ
ধনবতা, উত্তমা নারীলাভ
তথা উত্তম ভোজন
দানশক্তি, রতিশক্তি, ভোজন শক্তি
আর স্বল্প সাধনায় না হয় কখন ৷
সরল ব্যাখ্যা
উত্তম ভোজন, ধনবত্তা, উত্তমা নারীলাভ, দানশক্তি, ভোজনশক্তি, তথা রতিশক্তি—যে কেহই লাভ করিতে পারে না। কারণ এইগুলি লাভ করা বিশেষ পরিশ্রম সাপেক্ষ অথবা সাধনার ফল । এইগুলি লাভ করা সহজসাধ্য নয়, সকলের পক্ষে লাভ করাও সম্ভব নয়।
স্ত্রীলোকের দোষ সম্পর্কিত সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
অমৃতং সাহসং মায়া ত্বমতিলোভতা ।
অশৌচত্বং নির্দয়ত্বং স্ত্রীণাং নোয়া স্বভাবজাং ।।
বঙ্গানুবাদ
অতি সাহস, মিথ্যা, ছলনা, মূর্খতা, অতিলোভ অপবিত্রতা আর নির্দয় আচরণ স্ত্রীলোকের স্বভাব দোষের বিবরণ ॥
এই সপ্ত তথ্য সত্য—
সরল ব্যাখ্যা
স্ত্রীলোকগণের সাতটি স্বভাব দোষ — মিথ্যাবাদিতা, অতি সাহস, ছলনা, মূর্খতা, অতি লোভ, অপবিত্রতা ও নির্দয় আচরণ। (স্ত্রীলোকদের বাহিরের রূপটি সত্য নয়, স্বভাবতঃই তাহারা এই সপ্তদোষের অধিকারিণী ) – সময়ভেদে স্ত্রীলোক যত নির্দয় হইতে পারে, পুরুষ তত নির্দয় হইতে পারে না। সেইজন্যই নারীগণ রহস্যময়ী।
সু-পুত্র, সু-বন্ধু, সু-পত্নী, সু-পিতা বিষয়ক সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
তে পুত্ৰ যে পিতুর্ভক্তাঃ স পিতা যন্ত্ৰ পোষকঃ ।
তন্মিত্র যত্র বিশ্বাসঃ সা ভাৰ্য্যা যত্র নিবৃত্তিঃ ॥
বঙ্গানুবাদ
পিতৃভক্ত যারা, যথার্থই পুত্র তারা— সেই পিতা, সু-পিতা—যিনি পুত্রে করেন পালন । সুখদানকারিণী তিনি, যিনি সার্থকা পত্নী, সেইতো প্রকৃত বন্ধু—যিনি বিশ্বাসভাজন ৷৷
সরল ব্যাখ্যা
সুপুত্র তাহারাই, যাহারা পিতৃভক্ত । সু-পিতা তিনি, যিনি পুত্রদের আদরের | সহিত পালন করেন, প্রকৃত বন্ধু তিনিই – যাহাকে বিশ্বাস করা চলে, সুপত্নী তিনি—যিনি সুখ প্রদান করেন।
কোন্ বন্ধুকে পরিত্যাগ করা উচিত? বিষয়ক সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
পরোক্ষে কার্যাহস্তারং প্রত্যক্ষে প্রিয়বাদিনম
বচয়েদতাদৃশং মিত্রং বিষকৃত্তং পরোমুখম ॥
বঙ্গানুবাদ
সম্মুখে প্রিয়ভাষী, পরোক্ষে কার্য নষ্ট করে ।
ভেতরে বিষ যার, মুখে মধু ঝরে।
তেমন বন্ধু, বুদ্ধিমান সদা ত্যাগ করে ৷ ১৭
সরল ব্যাখ্যা
যে বন্ধু সম্মুখে প্রিয়ভাষী, কিন্তু অন্তরালে বা পরোক্ষে কার্য নষ্ট করে এবং যার ভিতরে বিষ অথচ মুখে মধু (দুগ্ধ) ঝরে— তেমন বন্ধু সর্বদা পরিত্যাজ্য ।
কোন্ বন্ধুকে বিশ্বাস করা উচিত নয়? বিষয়ক সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
ন বিশ্বসেৎ কুমিত্রে চ মিত্রে চাপি ন বিশ্বসেৎ ।
কদাচিৎ কুপিতং মিত্রং সৰ্ব্বগুহ্যং প্রকাশয়েৎ ৷৷
বঙ্গানুবাদ
কুমিত্রকে বিশ্বাস করা কভু ভাল নয় ।
ক্রোধ বশে যে মিত্র গুপ্ত কথা প্ৰকাশয় ৷
তাঁহাদের বিশ্বাস করা কভু না উচিত হয় ।।
সরল ব্যাখ্যা
কুমিত্রকে কখনই বিশ্বাস করা উচিত নয়, এতদ্ব্যতীত সাধারণ বন্ধুকেও বিশ্বাস করা উচিত নয়—কারণ ক্রোধ বশে সে যে-কোন সময় গুপ্ত কথা প্রকাশ করিয়া পারে।
মনের কথা মনে রাখাই ভাল বিষয়ক সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
মনসা চিন্তিতং কার্য্যাঃ বচসা ন প্রকাশয়ে।
মন্ত্রেণ রক্ষয়েদ গূঢ়ং কাৰ্য্যঞ্চাপি নিযোজয়েৎ ৷৷ ১৯
বঙ্গানুবাদ
মন্ত্রগুপ্তি অতি ভাল — মনের কথা মনেই রাখ ধরে।
কার্য সিদ্ধ না হ’লে
প্রকাশ পেলে হাসিবে অপরে ৷
সরল ব্যাখ্যা
মন্ত্রগুপ্তি ভাল। মনের কথা মুখে কখনও প্রকাশ করা উচিত নয় । কারণ মনের কথা প্রকাশ হইলে— শত্রুগণ পূর্ব হইতে তাহা জানিয়া বাধার সৃষ্টি করিতে পারে। উপরন্তু মনের কথা বড়াই করিয়া জাহির করার পর—যদি তাহা কার্যতঃ সিদ্ধ না করা | যায়, তখন অপর লোকেরা উপহাস করিয়া থাকে।
কষ্টকর বিষয়ক সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
কষ্টঞ্চ খলু মূর্খত্বং কষ্টং চ খলু যৌবনম্ ।
কষ্টাৎ কষ্টতরং চৈব পরগেহে নিবাসনম্ ৷৷ ২০
বঙ্গানুবাদ
মূর্খতা কষ্টকর । কষ্টকর যৌবন-দহন ।
সর্বাপেক্ষা কষ্ট পায়, পরগৃহে থাকে যে জন ৷৷
সরল ব্যাখ্যা
মূর্খতা কষ্টকর, যৌবনের জ্বালা সহ্য করাও কষ্টকর। কিন্তু পরগৃহে বোঝাস্বরূপ হইয়া বাস করা অত্যধিক কষ্টকর। সব সময়ই গঞ্জনা সহ্য করিতে হয়।
সর্বত্র সকল কিছু নাহি পাওয়া যায় বিষয়ক সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
শৈলে শৈলে ন মাণিক্যং মৌক্তিকং ন গজে গজে ।
সাধবো নহি সৰ্ব্বত্র চন্দনং ন বনে বনে ৷৷
বঙ্গানুবাদ
প্রত্যেক গজেই থাকে না মুক্তা
সকল বনেই থাকে না চন্দন ।
প্রত্যেক পর্বতে থাকেনা মাণিক
সর্বাত্র থাকেনা তথা সজ্জন ৷৷
সরল ব্যাখ্যা
সকল বনেই চন্দন কাঠ পাওয়া যায় না, প্রত্যেক গজেই গজমোতি থাকে না, প্রত্যেক পর্বতেই মাণিক্য থাকে না, ঠিক তদ্রূপ প্রত্যেক স্থানেই সজ্জন ব্যক্তি অবস্থান করে না।
সভায় শোভনীয় নয় বিষয়ক সংস্কৃত চাণক্য শ্লোক বা নীতি
চাণক্য শ্লোক
মাতা শত্রুঃ পিতা বৈরী যেন বালো ন পাঠতঃ ।
ন শোভতে সভামধ্যে হংসমধ্যে বক যথা ।।
বঙ্গানুবাদ
যেই পিতা মাতা শত্রুসম—
সন্তানে না করয়ে পঠন-পাঠন ।
হংস মধ্যে বক যথা—
সভা মধ্যে শোভেনা কখন ৷৷
সরল ব্যাখ্যা
যেই পিতা-মাতা শত্রুর সমতুল্য হইয়া সম্ভানগণের বিদ্যাশিক্ষার ব্যবস্থা করে। না, হংসমধ্যে বক যেমন শোভা পায় না, সেই সকল পিতা-মাতার সন্তান সভামধ্যে তদ্রূপ কখনই শোভনীয় হইতে পারে না।
অগ্নি বিনাই শরীর কি অবস্থায় দগ্ধ হয়?
চাণক্য শ্লোক
কাম্ভাবিয়োগঃ স্বজনাপমানো
ঋণস্য শেষঃ কুপসা সেবা ।
বিনারগ্রিমেতে প্রদহস্তি কায়ম্ ৷৷ ২৩
বঙ্গানুবাদ
স্ত্রী যদি মারা যায়, অপমান করে যদি আত্মীয়-স্বজন ।
দরিদ্রভাবো বিষমা সভা চ ।
ঋণ, দারিদ্রা, দুষ্ট-সভা আর দুষ্ট রাজার সেবন ।
অগ্নি বিনাই সৃষ্টি করে দেহে তীব্র দহন ।
সরল ব্যাখ্যা
স্ত্রীবিয়োগ, আপন জন কর্তৃক অপমান, দারিদ্রা, ঋণ, দুষ্ট লোকের সভায় যোগদান এবং দুষ্ট রাজার কর্মে লিপ্ত হইলে অগ্নি বাতীতই শরীর প্রজ্বলিত হইয়া থাকে
নাশ প্রাপ্ত হয়
চাণক্য শ্লোক
নদীতীরে চ যে বৃক্ষাঃ পরগেছে কামিনী
মন্ত্রিহীনাশ্চ রাজানঃ শীঘ্রং নশ্যন্ত্যশংশয়ম ।।
বঙ্গানুবাদ
নদীতীরে থাকে যদি গাছ
পরগৃহে থাকে যদি স্ত্রীধন ।
মন্ত্রিহীন যদি থাকে রাজা বিনষ্ট হইবে শীঘ্র—সত্য বচন ৷৷
সরল ব্যাখ্যা
নদী তীরবর্তী বৃক্ষসমূহ, মন্ত্রিহীন রাজা, এবং পরগৃহবাসী স্ত্রী—শীঘ্রই বিনষ্ট হইয়া থাকে । কারণ নদী তীরবর্তী বৃক্ষের স্থায়িত্ব থাকে না, নারীকে নজরে নজরে না রাখিলে বেহাত হইবার সম্ভাবনা, মন্ত্রিবিহীন রাজা রাজ্য প্রশাসনে সমর্থ হয় না।
শোভন
চাণক্য শ্লোক
সমানে শোভতে প্রীতিঃ রাজ্ঞ সেব চ শোভতে ।
বাণিজ্যং ব্যবহারেষু স্ত্রী দিব্যা শোভতে গৃহে ৷৷ ২৫
বঙ্গানুবাদ
রাজার সেবা করা শোভন
তথা সমানে সমানে প্রীতি শোভা পায় ব্যবহারে বাণিজ্য—শোভে
গৃহেতে স্ত্রীরত্ব শোভা পায় ৷৷
সরল ব্যাখ্যা
সমানে সমানেই সখ্যতা ভাল। রাজার সেবা করাও শোভন। ব্যবহার দ্বারাই বাণিজ্য বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় বা শোভা পায়। সুন্দরী স্ত্রী ঘরেতেই শোভা বর্ধন করে।