বিশিষ্ট সমাজসংস্কারক ও নারী শিক্ষার অগ্রদূত ছিলেন চারুশীলা দেবী। উনিশ ও বিশ শতকের সন্ধিক্ষণে তিনি বাংলার নারীদের শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নারী কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি তিনি সমাজে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগে নেতৃত্ব দেন। তাঁর প্রচেষ্টা শুধু নারী শিক্ষা নয়, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা ও ন্যায়ের পক্ষে কাজ করার মধ্যেও প্রতিফলিত হয়।
সমাজসংস্কারক চারুশীলা দেবী
ঐতিহাসিক চরিত্র | চারুশীলা দেবী |
জন্ম | ১৮৮৩ খ্রি |
পরিচিতি | সমাজসংস্কারক, নারী শিক্ষার প্রবক্তা, সমাজকর্মী |
কাজের ক্ষেত্র | নারী শিক্ষা, সমাজসেবা, নারী অধিকার |
গুরুত্বপূর্ণ অবদান | নারী শিক্ষার প্রসার, সমাজে নারীর মর্যাদা বৃদ্ধিতে ভূমিকা |
সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক | বিভিন্ন নারী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য ও নেতৃত্ব প্রদান |
লেখালেখি | নারী জাগরণ ও সমাজ সংস্কার বিষয়ে প্রবন্ধ ও বক্তৃতা |
প্রভাব | বাঙালি নারী সমাজে আত্মমর্যাদা ও শিক্ষার গুরুত্ব বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি |
মৃত্যু | ঐতিহাসিক নথিপত্রে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ নেই |
চারুশীলা দেবী
ভূমিকা :- চারুশীলা দেবী ছিলেন বাংলার নবজাগরণ-এর এক অগ্রগণ্য নারী ব্যক্তিত্ব, যিনি নারী শিক্ষার প্রসার এবং সমাজ সংস্কারে অসাধারণ ভূমিকা পালন করেন। উনিশ ও বিশ শতকের সন্ধিক্ষণে যখন নারীরা এখনও অবরোধবাসিনী, তখন তিনি দৃঢ় কণ্ঠে নারীর অধিকার, মর্যাদা ও শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, সমাজের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয় নারীদের উন্নয়ন ছাড়া। এই উপলব্ধি থেকেই তিনি নিজেকে নারীকল্যাণমূলক নানা কর্মসূচি ও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করেন। চারুশীলা দেবীর জীবন ও কর্মকাণ্ড সেই সময়ের নারীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও জাগরণ সৃষ্টি করে, যা পরবর্তীকালে নারীবাদের পথ নির্মাণে সহায়ক হয়। তাঁর কাজ আজও নারী অধিকার ও সমাজ সংস্কারের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে।
চারুশীলা দেবীর জন্ম
১৮৮৩ সালে মেদিনীপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন চারুশীলা দেবী। দেশ তাঁদের মেদিনীপুরেই।
শিক্ষয়ত্রী চারুশীলা দেবীর পিতামাতা
তার পিতার নাম রাখালচন্দ অধিকারী এবং মায়ের নাম কুমুদিনী দেবী।
সমাজসংস্কারক চারুশীলা দেবীর শিক্ষা
চারুশীলা দেবী ছিলেন ভূদেব মুখোপাধ্যায়ের প্রথম ছাত্রী। শিশুবয়স থেকেই তিনি ছিলেন পাঠপ্রিয় এবং স্বাতন্ত্র্যপ্রিয়।
নারী সংগ্রামী চারুশীলা দেবীর বিবাহ
মাত্র বরোবছর বয়সে তাঁর বিবাহ হয়েছিল মেদিনীপুরের বীবেন্দ্রকুমার গোস্বামীর সঙ্গে।
ক্ষুদীরাম বসু ও চারুশীলা দেবীর যোগাযোগ
শৈশবে পিতৃমাতৃহীন অগ্নিশিশু ক্ষুদিরাম থাকতেন মেদিনীপুর শহরের উপকণ্ঠে হবিবপুরে তাঁর দিদির কাছে। তিনি প্রায়ই চারুশীলা দেবীর বাড়িতে আসতেন। তাঁকে ক্ষুদিরাম এত ভালবাসতেন যে, মাঝে মাঝে দিদির বাড়ি থেকে চলে এসে তাঁর কাছে থাকতেন। ক্ষুদিরাম ছিলেন চারুশীলা দেবী অপেক্ষা কয়েক বছরের ছোট। ১৯০৫ সালে ক্ষুদিরাম বিপ্লবী দলে যোগদান করেন। চারুশীলা দেবীকেও একদিন ক্ষুদিরাম রক্ততিলক পরিয়ে স্বদেশীর প্রতিজ্ঞা করিয়ে নেন।
গ্রেপ্তার ক্ষুদীরাম বসু
এই প্রতিজ্ঞার পর ১৯০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একদিন মেদিনীপুরের পুরানো কেল্লার এক প্রদর্শনীর দরজার মুখে দাঁড়িয়ে ক্ষুদিরাম ‘বন্দে মাতরম’ নামে একটি পুস্তিকা বিলি করছিলেন। পুলিস ক্ষুদিরামের হাতে পুস্তিকা দেখে সেগুলি কেড়ে নিতেই ক্ষুদিরাম পুলিসকে মেরে বসলেন। ফলে তিনি গ্রেপ্তার হন।
চারুশীলা দেবীর বাড়িতে ক্ষুদীরাম বসুর আত্মগোপন
মেদিনীপুরে বিপ্লবীদের প্রধান সমর্থক ও সাহায্যদানকারী রাজা নরেন্দ্রলাল খান অকাতরে টাকা দিয়ে এই মামলা পরিচালনা করান। অবশেষে ক্ষুদিরাম মুক্তি পেলেন। তারপর ১৯০৮ সালে মজঃফরপুরে ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যা করতে যাওয়ার আগে ক্ষুদিরাম চারুশীলা দেবীর বাড়ীতে কিছুদিন বাস করেছিলেন।
সমাজসংস্কারক চারুশীলা দেবীর আত্মগোপন
ক্ষুদিরামের মামলার সময় পুলিস চারুশীলা দেবীর খোঁজ করতে থাকে। তিনি তখন আত্মগোপন করে রইলেন। এরই কয়েকবছর পর তিনি বিধবা হন।
মেদিনীপুরে নারীজাগরণ
১৯২১ সালে অসহযোগ আন্দোলন-এর সময় মহাত্মা গান্ধী, দেশবন্ধু প্রমুখ মেদিনীপুরে যান। ঐ সময় তাঁদের প্রেরণায় মেদিনীপুরে নারীজাগরণ দেখা দেয়। চারুশীলা দেবীও একটি মহিলা সমিতি গঠন করেন।
কলকাতায় চারুশীলা দেবী
১৯১২ সালে তিনি কলকাতায় ট্রেনিং পড়তে আসেন। তারপর মেদিনীপুরে ফিরে গিয়ে পুনরায় মহিলাদের মধ্যে গঠনমূলক কাজ করতে থাকেন।
বক্তা চারুশীলা দেবী
১৯৩০ সালে লবণ আইন অমান্য-এর সময় তিনি আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। নরঘাটে একটা জনসভা আহ্বান করা হয়েছিল, বক্তা চারুশীলা দেবী, জ্যোতির্ময়ী গাঙ্গুলী প্রভৃতি। এই মিটিং ভেঙে দেবার জন্য মেদিনীপুরের ম্যাজিস্ট্রেট পেডি সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী নিয়ে উপস্থিত হন। পেডি আদেশ দিলেন, “১৪৪ ধারা জারী আছে, মিটিং করো না।”
জ্যোতির্ময়ী দেবীর আহ্বান
- (১) বিপ্লবী জ্যোতির্ময়ী দেবী পুলিসের বাধা অগ্রাহ্য করে জনতাকে আহ্বান করে বললেন, “যাঁরা বুকের রক্ত দিতে প্রস্তুত আছেন তাঁরা এই সভায় এগিয়ে আসুন, যাঁরা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবেন তাঁরা ফিরে যান।” এই আহ্বান শুনে সাবিত্রী নামে তমলুকের এক সালঙ্কারা পরমাসুন্দরী ষোড়শী পতিতা নারী এসে বললেন, “আমরা বুকের রক্ত দেব কিন্তু পৃষ্ঠপ্রদর্শন করব না।”
- (২) তাঁর পশ্চাতে প্রায় আটশত গ্রাম্য মেয়ে ও বৌ কোলে পিঠে সন্তান নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং বললেন যে, তাঁরাও এই সভা রক্ষা করবার জন্য জীবন বিসর্জন করবেন। তাঁরা পুরুষদের ঘিরে দাড়িয়ে রইলেন। অতি অল্প সময়ের মধ্যে সভা সাঙ্গ ক’রে তাঁরা সকলে মিলে লবণ-তৈরীর ক্ষেত্রের দিকে অগ্রসর হন। সশস্ত্র পুলিস-বাহিনী এই সময় জনতার উপর লাঠিচার্জ করে।
বিস্মিত ও বিচলিত জনসাধারণ
একটি দশবছরের বালকের চোখে, ম্যাজিস্ট্রেট পেডি নিজেই আঘাত হেনে রক্তাক্ত করে ফেলেন। তৎক্ষণাৎ ঐ পতিতা নারী সাবিত্রী ছুটে এসে নিজের পরনের খদ্দরের শাড়ী ছিঁড়ে তার চোখ বেঁধে কোলে নিয়ে বসলেন। এ দৃশ্য সেদিন মেদিনীপুরের জনসাধারণকে বিস্মিত ও বিচলিত করে তুলেছিল। পেডি সেদিন সেখানে প্রায় একঘণ্টা লাঠিচার্জের হুকুম জারী রেখেছিলেন।
সভার আয়োজনে চারুশীলা দেবী
পরের দিন জ্যোতির্ময়ী গাঙ্গুলী ও চারুশীলা দেবীরা কাঁথি, কালীনগর ইত্যাদি স্থানে গিয়ে পুনরায় সভার আয়োজন করেন এবং জনসাধারণকে আইন অমান্য আন্দোলনে যোগদান করতে আহ্বান করেন।
চারুশীলা দেবীর সামনে পল্লীগ্রামের নারীদের সাহসের ছবি
- (১) বে আইনী লবণ তৈরী করার অপরাধে কর্মী ঝাড়েশ্বর মাঝির কারাদণ্ড হয়। তাঁর মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে চারুশীলা দেবী, জ্যোতির্ময়ী দেবী জানতে পারলেন যে, তাদের প্রায় আটশত মণ ধান পুলিস মাঠের মধ্যে ঢেলে ফেলে পুড়িয়ে দিয়েছে। কিছু ধান পুকুরে ফেলেছে। স্বয়ংসম্পূর্ণ এই আদর্শ কৃষক পবিবারের সমস্ত কৃষিজাত সম্পদ ও কৃষির বাগান পুলিস নষ্ট করে দিয়েছে। চরকা, তৈজসপত্র, গৃহদেবতা সবই তারা ধ্বংস করে গেছে।
- (২) তারা আরো দেখলেন যে, ঝাড়েশ্বর মাঝির মা দুই টুকরো বস্ত্রখণ্ডে কোনোরকমে লজ্জা নিবারণ করে আছেন। ছেলে দুটি কৌপীন পরেছেন। চারুশীলা দেবী ও জ্যোতির্ময়ী গাঙ্গুলীকে বৃদ্ধা বীর নারী বললেন, “আমার আটশত মণ ধান নষ্ট করেছে, আবার ষোলোশত মণ ধান হবে। আমার কিছু ক্ষতি হয় নি। আবার আমি সভা করব। একটা ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে, এখনো দুটো ছেলে মা বলে ডাকে। লবণ আইন অমান্য আমি তো করবই।”
- (৩) এই অনমনীয় নারীর উক্তিতে সেদিন মেদিনীপুরের পল্লীগ্রামের নারীদের সাহসের ছবি ফুটে ওঠে চারুশীলা দেবী, জ্যোতির্ময়ী দেবীর চোখে।
চন্দ্রাকরে চারুশীলা দেবীর সভা
তারা বে-আইনী সভা আহ্বান করতে করতে অগ্রসর হন। চন্দ্রাকরে গিয়ে চারুশীলা দেবী এরূপ একটি সভায় বক্তৃতা করবার সময় লাঠিচার্জ হয়। নরঘাটের মতোই এবারেও মেদিনীপুরের দুঃসাহসী নারীরা নেত্রীদের আহ্বানে লাঠিচার্জকে অগ্রাহ্য করে সভা অনুষ্ঠিত করেন।
শ্রমিক ইউনিয়নে চারুশীলা দেবী
চারুশীলা দেবীর নামে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা বের হয়। তিনি পলাতক অবস্থায় খড়গপুরে এসে শ্রমিক ইউনিয়নের এক সভা আহ্বান করেন, সত্যাগ্রহীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে। সেখানে হাজার হাজার লোকের জনতাকে উত্তেজিত দেখে পুলিস তাঁকে গ্রেপ্তার করতে সাহস পায় নি।
চারুশীলা দেবী কর্তৃক অন্নদা চৌধুরীর হাতে সংগৃহীত টাকা প্রদান
এরপর সংগৃহীত টাকা নিয়ে তিনি কাঁথি রওনা হন। যে বাসে তিনি ওঠেন সেই বাসে এবং সঙ্গের আরো কয়েকটা বাসে ছিল শুধু পুলিস। চারুশীলা দেবী সংগৃহীত পাঁচশত টাকা ও গহনা নিয়ে ড্রাইভারের পাশে বসে রইলেন অসীম দুঃসাহসে। রাত প্রায় দু’টায় কাঁথি পৌঁছে তিনি সেই অর্থ ও গহনা নেতা অন্নদা চৌধুরীর হাতে তুলে দিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন।
সমাজসংস্কারক চারুশীলা দেবীর কারাদণ্ড
৭ই অগাস্ট একটা বে-আইনী শোভাযাত্রা পরিচালনা করার সময় মেদিনীপুর শহরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর প্রতি ছয়মাস কারাদণ্ডের আদেশ হয়। মেদিনীপুর জেলের ভিতরে গিয়ে বিধবাদের নিজ হাতে রান্নার অধিকারের জন্য তিনি অনশন করেন। কর্তৃপক্ষ অবশেষে তাঁর দাবি মেনে নিতে বাধ্য হন।
চারুশীলা দেবীর বাড়িতে চুরি
১৯৩০ সালে মেদিনীপুরে বিপ্লবীদের বাড়ি তিনমাসের জন্য বাজেয়াপ্ত করা হয়। কার্যকলাপের ফলে চারুশীলা দেবীর বাজেয়াপ্ত থাকা কালে তাঁর বাড়ীর জিনিসপত্র, গহনা ও কাপড়চোপড় ইত্যাদি প্রায় সত্তরহাজার টাকা মূল্যের জিনিস চুরি যায়।
আইন অমান্য আন্দোলনে চারুশীলা দেবী
১৯৩১ সালের শেষে তাঁকে একমাসের জন্য জেলে রাজবন্দী হিসাবে আটক রাখা হয়। মুক্তি পেয়ে তিনি ১৯৩২ সালের আইন অমান্য আন্দোলনে যোগদান করেন এবং দেড়বছরের কারাদণ্ড লাভ করেন। এবারে বাইরে আসার পর তিনি পাবনা যান। সেখানে এক সভায় রাজদ্রোহমূলক বক্তৃতা দেওয়াতে ১৯৩৩ সালে তাঁর পুনরায় একমাসের কারাদণ্ড হয়। কারাভোগের পর ফিরে এলেন তিনি মেদিনীপুরে ।
চারুশীলা দেবীকে বহিষ্কারের আদেশ
১৯৩৩ সালেই মেদিনীপুরের ম্যাজিস্ট্রেট বাজকে বিপ্লবীরা হত্যা করেন। তখন চারুশীলা দেবীকে মেদিনীপুর জেলা থেকে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয় আটবছরের জন্য। তিনি পুরী চলে যান। ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট কর্তৃক পিউনিটিভ পুলিসের ট্যাক্স আদায় করবার জন্য তাঁর বাড়ী ও জমি নিলাম হয়ে যায়। পরে গভর্নমেন্টের পক্ষ থেকে ওই আটবছরের বহিষ্কারের আদেশ প্রত্যাহার করা হয় এবং তিনি ১৯৩৮ সালে কলকাতায় চলে আসেন।
শিক্ষয়িত্রী চারুশীলা দেবী
গৃহহারা, বাস্তুহারা ও কপর্দকশূন্য অবস্থায় তিনি কলকাতার রাস্তায় সাত দিন ঘুরে বেড়ান। তখন কলকাতা কর্পোরেশনের এডুকেশন অফিসার শৈলেন ঘোষ তাঁকে কর্পোরেশনের শিক্ষয়িত্রীর কাজ গ্রহণ করতে অনুরোধ করেন। বৃদ্ধবয়স পর্যন্ত তিনি এই শিক্ষয়িত্রীর কাজে নিযুক্ত ছিলেন। তাঁর অনমনীয় দৃঢ়তা কোথাও তাঁকে মাথা নত করতে শেখায়নি।
চারুশীলা দেবীর মৃত্যু
ঐতিহাসিক নথিপত্রে চারুশীলা দেবীর মৃত্যুর তারিখ সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ নেই।
উপসংহার :- চারুশীলা দেবী ছিলেন এক সংগ্রামী নারী, যিনি তার সময়ের সামাজিক রীতিনীতি ও বাধা অতিক্রম করে নারী শিক্ষার প্রসার ও নারী অধিকার রক্ষার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তিনি যে শুধু একজন সমাজসংস্কারক ছিলেন তা নয়, তিনি নারী সমাজের আত্মজাগরণের প্রতীক হিসেবে ইতিহাসে স্থান পেয়েছেন। তাঁর উদ্যোগ ও আদর্শ বাংলার নারী সমাজে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে সহায়ক হয়। চারুশীলা দেবীর জীবন আমাদের শেখায় যে দৃঢ় মনোবল, সচেতনতা ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। তাঁর আদর্শ ও কর্ম আজও নারীর ক্ষমতায়ন ও সমতার সংগ্রামে প্রেরণার উৎস হয়ে আছে।
(FAQ) চারুশীলা দেবী সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
চারুশীলা দেবী ছিলেন উনিশ ও বিশ শতকের প্রভাবশালী সমাজসংস্কারক এবং নারী শিক্ষার প্রবক্তা, যিনি বাঙালি নারীদের শিক্ষায় ও সমাজে মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তিনি নারী শিক্ষা, নারী অধিকার, সমাজসেবা ও সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
তিনি নারীদের শিক্ষিত করে তোলার মাধ্যমে সমাজে তাদের অবস্থান দৃঢ় করার চেষ্টা করেন এবং বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে সমাজে নারী-পুরুষের সমতার পক্ষে কাজ করেন।
তিনি বিভিন্ন নারী কল্যাণমূলক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং মাঝে মাঝে নেতৃত্বের ভূমিকাও পালন করেন (যদিও নির্দিষ্ট সংগঠনের নাম অনেক সময় নথিভুক্ত নয়)।
চারুশীলা দেবীর মৃত্যুর নির্দিষ্ট তারিখ বা বছর পাওয়া যায় না, তবে তাঁর কর্মজীবন উনিশ শতকের শেষভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।