নিজের পথ নিজেই তৈরি করুন

আপনার নিজের পথ নিজেই তৈরি করুন

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের নাগরিক জ্যাকব মরগান। তিনি একাধারে লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। লেখালেখির করেছেন বিশ্বের বিখ্যাত গণমাধ্যমে। জ্যাকবের লেখা একাধিক বই বেস্ট সেলারের খেতাব অর্জন করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সেমিনারে তরুণদের জন্য পরামর্শমূলক বক্তব্য দেন জ্যাকব মরগান। এমনই একটি বক্তব্য এখানে তুলে ধরা হলো।

জ্যাকব মরগানের বক্তব্য

ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে আর দশজনের মতো আমিও অনেক ভুল করতাম। সঠিক নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আমার কোনো পরামর্শদাতা ছিল না। তাই আমি নিজে যা ঠিক বলে মনে করতাম, সেটা করতেই অভ্যস্ত ছিলাম। কিন্তু এটা করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যেত, আমি যেটাকে একটা দুর্দান্ত বা সেরা কাজ মনে করতাম, শেষ পর্যন্ত সেটা আমার সঠিক নির্বাচন ছিল না বলে প্রমাণ হতো। কিন্তু আমি যদি ক্যারিয়ারবিষয়ক পরামর্শগুলো শুনে কাজ করতাম, তাহলে কিছুটা বাড়তি কষ্ট ও চাপ থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারতাম। এ কারণে আমার অভিজ্ঞতা থেকে তরুণদের উদ্দেশে সেরা পাঁচটি ক্যারিয়ার টিপস তুলে ধরছি।

কাজের বিভিন্ন সম্ভাবনাকে পরীক্ষা করে দেখুন

আপনার ক্যারিয়ারের শুরুতে আপনি ঠিক কী করতে চান, তা আপনাকে জানতেই হবে – বিষয়টা এমন নয়। আসলে এটা খুঁজে বের করা খুব সহজ বা একেবারেই সাধারণ ব্যাপার নয়। কোনো কাজে বা বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার আগে বিভিন্ন সম্ভাবনার স্বাদ নিন। সম্ভাবনাগুলোকে পরীক্ষা করুন এবং বিভিন্ন কাজের চেষ্টা করে দেখুন। আপনি যে কাজই করেন না কেন, তা উপভোগ করা গুরুত্বপূর্ণ। তাই এটা কখনোই মনে করবেন না, মূল পরিকল্পনা তথা ক্যারিয়ার নিয়ে আগে আপনি যেটা করতে চেয়েছিলেন বা ভেবেছিলেন তাতেই আপনাকে লেগে থাকতে হবে। মূলত, যে কাজ আপনাকে আনন্দ দেয় না, তা ত্যাগ করে ভিন্ন অপশন পরীক্ষা করা উচিত। তারপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কোন দিকে যাবেন।

নিজের ক্যারিয়ারের পথ তৈরি করুন

একটা সময় এমন ছিল, তরুণ পেশাদাররা কোনো একটা করপোরেট কোম্পানির নিম্ন-স্তরের কাজ শুরু করতেন এবং সেই একই কোম্পানির করপোরেট সিঁড়িতে অন্যদের দেখানো পথেই কাজ করতেন। কিন্তু সেই দিন এখন আর নেই। সবাই আপনাকে যে টেমপ্লেট বা পথ অনুসরণ করতে বলে, আপনাকে সেটাই অনুসরণ করতে হবে – বিষয়টা এমন নয়। বরং আপনি নিজেই আপনার কর্মজীবন গড়ে তুলতে পারেন এবং আপনার নিজের পথ নিজেই তৈরি করতে পারবেন।

দুঃখী হয়ে কাটানোর জন্য জীবন নয়

আপনি আপনার বেশির ভাগ সময় কর্মক্ষেত্রে ব্যয় করেন, তাই নিশ্চিত করুন, আপনি যেখানে কাজ করছেন সেটা এমন একটা প্রতিষ্ঠান এবং সেখানে আপনার যে ভূমিকা সেটা আপনি উপভোগ করেন। দুঃখী হয়ে অযথা সময় কাটাবেন না। আপনার কাজটি যদি আপনি পছন্দ না করেন, তবে সেটা নিয়ে কিছু করুন। অর্থাৎ আপনার পছন্দের যে কাজটি আপনি উপভোগ করেন সেটার খোঁজ করুন।

নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিন

আপনার জীবন ও ক্যারিয়ার নিয়ে আপনার কী করা উচিত, সে সম্পর্কে প্রত্যেকেরই মতামত আছে। আপনি চাইলে তাদের মতামত গ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু আপনার নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়াটা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ছাড়া আর কেউ আপনার পথ খোঁজ করে দেবে না। আপনিই সেই ব্যক্তি যাকে আপনার করা পছন্দের পরিণতি বা ফলাফল নিয়ে বাঁচতে হবে।

আত্মসচেতন হন

নিজের সঙ্গে সৎ থাকুন এবং আপনার শক্তি ও দুর্বলতাগুলো জানতে সময় নিন। আপনি যে সব ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারেন এবং নিজেকে বিকশিত করতে পারেন সেই ক্ষেত্রগুলো খুঁজুন। আপনি যত বেশি আত্মসচেতন হবেন, তত বেশি উন্নতি ও সুযোগ দেখতে পাবেন। সুযোগে ভরপুর অবস্থায় কর্মজীবন শুরু করাটা আপনার জন্য একটি উত্তেজনাপূর্ণ সময়। এই পরামর্শ আপনাকে সাফল্যের পথে নিয়ে যাবে এবং সঠিক ক্যারিয়ার-এর পথ খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।

Leave a Comment