‘জাতীয় শিক্ষা পরিষদ’ সম্পর্কে আলোচনা

দশম শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়- বিকল্প চিন্তা ও উদ্দোগ হতে ‘জাতীয় শিক্ষা পরিষদ’ সম্পর্কে আলোচনা করা হল।

Table of Contents

‘জাতীয় শিক্ষা পরিষদ’ সম্পর্কে আলোচনা

প্রশ্ন:- ‘জাতীয় শিক্ষা পরিষদ’ সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভূমিকা :- লর্ড কার্জন ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলা দ্বিখণ্ডিত করার পর স্বদেশি আন্দোলন শুরু হয়। এই সময় ব্রিটিশ শিক্ষাব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে বাংলায় স্বদেশি আদলে একধরনের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই বাস্তব রূপায়ণ হল জাতীয় শিক্ষা পরিষদ স্থাপন।

প্রতিষ্ঠা

সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে ৯২ জন সদস্য নিয়ে ‘জাতীয় শিক্ষা পরিষদ’ গড়ে ওঠে। এর প্রথম সম্পাদক হন রাসবিহারী ঘোষ।

আর্থিক সহায়তা

জাতীয় শিক্ষা পরিষদ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ব্রজেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ৫ লক্ষ টাকা, সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী ২.৫ লক্ষ টাকা এবং রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক ১ লক্ষ টাকা দান করেন।

উদ্দেশ্য

জাতীয় শিক্ষা পরিষদের প্রধান উদ্দেশ্যহল জাতীয় আদর্শ অনুসারে সাহিত্য, বিজ্ঞান ও কারিগরি বিষয়ে শিক্ষাদান করা, শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশসেবার মনোভাব জাগিয়ে তোলা, নৈতিক শিক্ষা দান করা, মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ঘটানো প্রভৃতি।

কার্যক্রম

পরিষদের কর্তৃপক্ষ নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য সাহিত্য, কলা, বিজ্ঞান, কারিগরি প্রভৃতি শিক্ষার বিষয়ে নিজেরাই পাঠক্রম তৈরি করে। জাতীয় শিক্ষা পরিষদের উদ্যোগে বাংলার বিভিন্ন স্থানে জাতীয় বিদ্যালয় গড়ে ওঠে।

বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ প্রতিষ্ঠা

জাতীয় শিক্ষা পরিষদের অধীনে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর অধ্যক্ষ হন অরবিন্দ ঘোষ।

বেঙ্গল টেকনিকাল ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা

বাংলায় স্বদেশি ধাঁচে কারিগরি শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে শিক্ষাদরদি তারকনাথ পালিত ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে বেঙ্গল টেকনিকাল ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ ও বেঙ্গল টেকনিকাল ইন্সটিটিউট একসঙ্গে মিশে গিয়ে বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ অ্যান্ড টেকনিকাল স্কুল গঠিত হয়।

ব্যর্থতা

পরিষদের প্রতি সরকারের অস্বীকৃতির জন্য বহু ছাত্র এই শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী ছিল না। এই শিক্ষা গ্রহণের পর যে ডিগ্রি পাওয়া যেত তা দিয়ে সরকারি চাকরি লাভের সুযোগ ছিল না। পরিষদের অধীনস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলি কিছুদিনের মধ্যেই প্রবল অর্থসংকটের শিকার হয়। এইসব কারণে জাতীয় শিক্ষা পরিষদের উদ্দেশ্য অনেকাংশে ব্যর্থ হয়।

উপসংহার :- শেষপর্যন্ত ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গ প্রত্যাহার করে নিলে স্বদেশি আন্দোলনও থেমে যায়। সেই সঙ্গে জাতীয় শিক্ষা পরিষদের কাজকর্মও বন্ধ হয়ে যায়। জাতীয় শিক্ষা পরিষদের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেলেও বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ অ্যান্ড টেকনিকাল স্কুল যথারীতি চলতে থাকে। পরবর্তীকালে এটি যাদবপুর কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়।

দশম শ্রেণীর ইতিহাস (পঞ্চম অধ্যায়) বিকল্প চিন্তা ও উদ্দোগ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস পঞ্চম অধ্যায়- বিকল্প চিন্তা ও উদ্দোগ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।

বিকল্প চিন্তা ও উদ্দোগ

(উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত): বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

৫.১. বাংলায় ছাপাখানার বিকাশ

(৫.১.ক.) ছাপা বইয়ের সঙ্গে শিক্ষাবিস্তারের সম্বন্ধ
(৫.১.খ.) ছাপাখানার ব্যাবসায়িক উদ্যোগ
(৫.১.গ.) উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ও ইউ. এন. রায় অ্যান্ড সন্স

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য ঘটনাবলির সময়কাল উল্লেখ-সহ সারণি)

৫.২. বাংলায় বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার বিকাশ

(৫.২.ক.) ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স
(৫.২.খ.) কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ
(৫.২.গ.) বসুবিজ্ঞান মন্দির
(৫.২.ঘ.) জাতীয় শিক্ষা পরিষদ
(৫.২.ঙ.) বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য ঘটনাবলির সময়কাল উল্লেখ-সহ সারণি)

৫.৩. ঔপনিবেশিক শিক্ষার ধারণার সমালোচনা

(৫.৩.ক.) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও শান্তিনিকেতন ভাবনা
(৫.৩.খ.) বিশ্বভারতীর উদ্যোগ
(৫.৩.গ.) প্রকৃতি, মানুষ ও শিক্ষার সমন্বয় বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের চিন্তা

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য ঘটনাবলির সময়কাল উল্লেখসহ সারণি)

Leave a Comment