জীবনে ক্রমাগত উন্নয়নের ১১ কৌশল

জীবনে ক্রমাগত উন্নয়নের ১১ কৌশল


মহামনীষীরা বলেন, যদি গতকালের থেকে আজকের দিনটি উত্তম না হয় তাহলে তার ধ্বংস অনিবার্য। এ কথা থেকে সুস্পষ্ট বোঝা যায় সফলতার জন্য ক্রমাগত উন্নতির গুরুত্ব। প্রাত্যহিক জীবনে সহজ কয়েকটি কৌশল অবলম্বন করলেই আত্মোন্নয়নে ক্রমাগত উন্নতি করা সম্ভব।

প্রতিদিন ৩০ মিনিট অনুশীলন

কোনো একটি বিষয় পরিপূর্ণভাবে আয়ত্ত করতে হলে নিয়মিত অনুশীলন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ধারাবাহিকতায় ওই নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে একজন মানুষকে সেরাদের সেরা বানিয়ে দেয়। অন্যদিকে দীর্ঘদিনের চর্চার অভাবে মরিচা ধরে অর্জিত গুণপনাতেও। প্রতিদিনের অনুশীলন এতই গুরুত্বপূর্ণ। তাই একটি রুটিন তৈরি করে ৩০ মিনিট সময় নির্দিষ্ট করুন। সে সময়ে প্রতিদিন চর্চা করুন সেই বিষয়টি, যেটিতে আপনি দক্ষ হতে চান। এখানেই কিন্তু শেষ কথা নয়, কোনো বিষয়ে দক্ষ হওয়ার পর সেই দক্ষতা ধরে রাখার জন্যও দরকার ধারাবাহিক অনুশীলন। তাই চর্চাটি থামাবেন না।

সপ্তাহভিত্তিক অনুশীলন

প্রতি সপ্তাহে একটি বিষয় বা কাজকে নির্দিষ্ট করুন, যে বিষয় বা কাজে এই এক সপ্তাহে অনুশীলনের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট স্তরের দক্ষতা অর্জন করতে চান। ক্রমাগত একটি বিষয়ে উন্নতির ফলে বিভিন্ন বিষয়ে আপনার যে গড়মান তার উন্নতি হবে।

মনছবি অনুশীলন করুন

প্রতিদিন ৫ মিনিট মনছবি অনুশীলন করুন। মনছবি হলো, আপনি যে লক্ষ্য অর্জন করতে চান নিজেকে সে অবস্থানে কল্পনা করা।

সকালের শরীরচর্চা

বলা হয়ে থাকে, দিনের শুরু যদি ভালো হয় তবে দিনটিও ভালো কাটবে। সকালের কর্মকাণ্ডের ওপর নির্ভর করে সারা দিনের সাফল্য। সকালে যদি হালকা শরীরচর্চা করা হয় এবং সুষম নাশতা করা হয় তাহলে তা সারা দিনের কাজের শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। তাই প্রতিদিন সকালে দশ মিনিট শরীরচর্চা ও সুষম খাবার গ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ছোট ছোট সাফল্যকে উদযাপন করুন

চূড়ান্ত সাফল্য হলো ছোট ছোট সাফল্যের সমষ্টি। তাই লক্ষ্য অর্জনের পথে যে ছোট ছোট সাফল্য অর্জিত হচ্ছে তা উদযাপন করুন। এই উদযাপন আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।

উন্নয়নের খতিয়ান রাখা

প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ডায়েরিতে লিখে রাখুন কোন কাজটি আজ আপনি ভালো করেছেন। সেটিতে আরও দক্ষ হয়ে উঠতে চেষ্টা করুন পরদিন।

আত্মশক্তির নিরাময় করুন

কিছু মানুষ ও পরিবেশ আছে, যা আমাদের অন্তর্গত শক্তিকে বৃদ্ধি করে, আমাদের মনোবল চাঙ্গা করে। আমরা তাদের উপস্থিতিতে ইতিবাচক হয়ে ওঠি, আশাবাদী হয়ে ওঠি, লক্ষ্য অর্জনে সচেষ্ট হই। এই মানুষ, পরিবেশ ও সময়কে চিহ্নিত করতে হবে। এ ধরনের প্রভাবকের সংস্পর্শে বেশি বেশি থাকতে হবে এবং এর বিপরীত ধরনের মানুষ ও পরিবেশ থেকে দূরে থাকতে হবে।

রুটিনে রাখুন ডিভাইসহীন সময়

অতিরিক্ত স্ত্রিন টাইম আমাদের শরীর, মন, চোখ, মেরুদণ্ড প্রভৃতির জন্য ক্ষতিকর। এ জন্য দিনের একটি সময় নির্দিষ্ট রাখুন যখন আপনি কোনো ডিভাইস ব্যবহার করবেন না। ঘুমানোর কমপক্ষে দুই ঘণ্টা আগে থেকে সব ধরনের ডিভাইস ব্যবহার থেকে দূরে থাকতে হবে। তবেই নিরবচ্ছিন্ন ঘুম নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

২ মিনিট নীতি

অনেক ছোট ছোট কাজ আছে যেগুলো এখন না তখন এমন করে করা হয়েই ওঠে না। কোনো কাজ করতে যদি দুই মিনিটের কম সময় লাগে তাহলে দ্বিধা না করে এখনই করতে শুরু করুন।

সাহায্য করুন অন্যকে

মানুষ সামাজিক প্রাণী। সামষ্টিক সাফল্যের মাঝেই তার সাফল্য নিহিত। তাই সমাজে ইতিবাচকতা ছড়িয়ে দিতে কাজ করুন। দিনে কমপক্ষে একজন সাহায্য করতে চেষ্টা করুন। এটি আপনার জীবনকে ইতিবাচকতায় ভরিয়ে দেবে।

সফলদের জীবনী পড়ুন

সফলতার পথ জানেন সফলরাই। তাদের জীবন ও কর্ম সফলতার রেসিপি। তাই তাদের জীবনী পড়–ন বেশি বেশি। সফলদের জীবনী পড়লে দেখা যাবে যে, তাদেরও জীবনে নানা প্রতিবন্ধকতা এসেছে। কিন্তু তারা তাতে ভেঙে পড়েননি। সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। তারা সফল হয়েছেন কারণ তারা কখনো হাল ছাড়েননি। সফলদের জীবনী পড়লে আপনি অনুপ্রাণিত হবেন।

Leave a Comment