বি. এ. জেনারেল (1st Semister) ইতিহাস প্রথম অধ্যায়: প্রাচীন ও আদি মধ্যযুগে ভারতের ইতিহাসের উপাদান থেকে ৫ নাম্বারের অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন – বৈদিক যুগের স্বর্ণমুদ্রার নাম কি ছিল ও ইতিহাসের উপাদান হিসেবে মুদ্রার গুরুত্ব নির্ণয় কর করা হল।
বৈদিক যুগের স্বর্ণমুদ্রার নাম ও ইতিহাসের উপাদান হিসেবে মুদ্রার গুরুত্ব আলোচনা
প্রশ্ন:- বৈদিক যুগের স্বর্ণমুদ্রার নাম কি ছিল? ইতিহাসের উপাদান হিসেবে মুদ্রার গুরুত্ব নির্ণয় কর।
উত্তর:- ‘মনা’ ও ‘নিস্ক’ ছিল বৈদিক যুগের স্বর্ণমুদ্রা। তবে এগুলি ছিল এক ধরনের স্বর্ণ পিণ্ড, কোনো মুদ্রা নয়।
ইতিহাসের উপাদান হিসেবে মুদ্রার বহুমুখী অবদান স্বীকৃত। মুদ্রায় খোদিত সন, তারিখ থেকে নির্দিষ্ট রাজার শাসনকাল সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। কোনো বংশের শাসকদের বা বিভিন্ন বংশের ক্রমপরম্পরা সম্পর্কে মুদ্রার সন-তারিখ আমাদের আভাস দেয়। মুদ্রার প্রাপ্তিস্থান থেকে কোনো রাজা বা রাজবংশের সাম্রাজ্যসীমা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। এমনকি মুদ্রার প্রাপ্তিস্থান দুই বা ততোধিক দেশের মধ্যে রাজনৈতিক বা বাণিজ্য সম্পর্ক বিষয়ে ধারণা পেতে সাহায্য করে।
কোনো রাজা বা রাজবংশের অর্থনৈতিক অবস্থার ছবি মুদ্রা থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। মুদ্রায় ব্যবহৃত ধাতু বা ধাতুর পরিমাণ ঐ যুগের আর্থিক সচ্ছলতা বা দৈন্যতা সম্পর্কে আভাস দেয়। যেমন গুপ্তযুগে প্রচলিত স্বর্ণমুদ্রার তুলনায় পরবর্তী গুপ্তযুগের স্বর্ণমুদ্রায় খাদের পরিমাণ বেশি ছিল। এ থেকে মনে হয়, পরবর্তীকালে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লাঘব ঘটেছিল।
মুদ্রায় খোদিত ছবি থেকে কোনো রাজা বা রাজবংশের সাংস্কৃতিক চিন্তাভাবনার ধারণা পাওয়া যায়। যেমন মুদ্রায় সমুদ্রগুপ্তের বীণাবাদনরত মূর্তি থেকে বোঝা যায় যে, তিনি সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন। একইভাবে মুদ্রার ছবির আকৃতি বহির্দেশের প্রভাব সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
যেখানে প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনার উপাদানের স্বল্পতা রয়েছে, সেখানে মুদ্রা গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক উপাদান হিসেবে কাজ করেছে। আবার অন্যান্য উপাদানের সত্যতা যাচাইয়ের কাজেও মুদ্রা সহায়কের দায়িত্ব পালন করেছে। শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে মুদ্রা মূল উপাদান হিসাবেও কাজ করে। তাই প্রাচীন মুদ্রার ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম।