পাবনার কৃষক বিদ্রোহ সম্পর্কে কী জান

দশম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে নীল বিদ্রোহের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হল।

Table of Contents

পাবনার কৃষক বিদ্রোহ

প্রশ্ন:- পাবনার কৃষকবিদ্রোহ সম্পর্কে কী জান?

ভূমিকা:- ১৯৫৯-৬০ খ্রিস্টাব্দের নীলবিদ্রোহের পরবর্তীকালে ব্রিটিশ শাসিত ভারতে পূর্ববঙ্গের পাবনা জেলায় কৃষকদের ওপর জমিদারদের শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে কৃষকরা যে বিদ্রোহ ঘোষণা করে তা ‘পাবনা বিদ্রোহ’ নামে পরিচিত ।

বিদ্রোহের কারণ

পাবনা বিদ্রোহের কারণ গুলি হল –

  • (১) দশম আইনের দ্বারা কৃষককে জমির মালিকানা ও পাট্টা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জমিদাররা আইন ফাঁকি দিয়ে জমি থেকে কৃষকদের উচ্ছেদ করতে থাকে।
  • (২) জমিদাররা কৃষকদের খাজনা ক্রমাগত বাড়াতে থাকে। কৃষকের জমির মাপে কারচুপি করেও খাজনা বাড়ানো হয়। কৃষকদের ওপর প্রতিনিয়ত নতুন নতুন উপকর আরোপ করা হয়।
  • (৩) জমিদাররা কৃষকদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে তাদের সর্বস্বান্ত করে।

বিদ্রোহের সূচনা

উপরোক্ত বিভিন্ন কারণে পাবনার ক্ষুব্ধ কৃষকরা ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে অত্যাচারী জমিদারদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পথে পা বাড়ায়। পাবনার ইউসুফশাহী পরগনায় প্রথম বিদ্রোহ শুরু হয়।

বিদ্রোহের প্রসার

বিদ্রোহী কৃষকরা ‘দি পাবনা রায়ত লিগ’ গঠন করে জমিদারদের বেআইনি খাজনা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই লিগ কৃষকদের মামলা চালাতে সহায়তা করে। ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে এই বিদ্রোহ সমগ্র পাবনা জেলা-সহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, ত্রিপুরা, বাখরগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজশাহি প্রভৃতি জেলার বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে।

নেতৃত্ব

পাবনা বিদ্রোহে নেতৃত্বের অগ্রভাগে ছিলেন ঈশানচন্দ্র রায়, শম্ভুনাথ পাল, ক্ষুদিমোল্লা প্রমুখ। বিদ্রোহে সক্রিয় নেতৃত্ব দিয়ে ঈশানচন্দ্র ‘বিদ্রোহী রাজা’ নামে পরিচিত হন।

বিদ্রোহের অবসান

পাবনা বিদ্রোহ মূলত জমিদারদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হওয়ায় মধ্যবিত্ত বাঙালিদের একাংশ বিদ্রোহীদের সমর্থন করেননি। এই পরিস্থিতিতে বিদ্রোহীদের ওপর পুলিশি অত্যাচার এবং ১৮৭৩-৭৪ খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষ বিদ্রোহকে দুর্বল করে দেয়।

মূল্যায়ণ

জমিদারদের বিরুদ্ধে সংঘটিত পাবনা বিদ্রোহ সমকালীন অন্যান্য কৃষকবিদ্রোহের মতোই হিংসাত্মক রূপ নিয়েছিল। তবে বিদ্রোহীদের হাতে নিহতের ঘটনা খুব বেশি ঘটেনি।

উপসংহার:- ঐতিহাসিক সুমিত সরকারের মতে, পাবনার কৃষকদের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার অভাব ছিল। নীল বিদ্রোহের তুলনায় পাবনার কৃষক বিদ্রোহ ছিল আদর্শগতভাবে সীমাবদ্ধ।

দশম শ্রেণীর ইতিহাস (তৃতীয় অধ্যায়) প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায়- প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে সকল সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন ও সেই বিষয়ে আদিবাসী জনগণের প্রতিক্রিয়া বিষয়ে সংক্ষিপ্ত ভূমিকা; প্রসঙ্গত বিদ্রোহ, অভ্যূত্থান ও বিপ্লব-এর ধারণাগত আলোচনা।

৩.১. আদিবাসী বিদ্রোহ

৩.১.ক. চুয়াড় বিদ্রোহ (দ্বিতীয় পর্ব, মেদিনীপুর, ১৭৯৮-৯৯)
৩.১.খ. কোল বিদ্রোহ (১৮৩১-৩২)
৩.১.গ. সাঁওতাল হুল (১৮৫৫-৫৬)
৩.১.ঘ. মুন্ডা বিদ্রোহ (১৮৯৯-১৯০০)

এই বিদ্রোহগুলির অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ।

টুকরো কথা

রংপুর বিদ্রোহ (১৭৮৩)
ভিল বিদ্রোহ (১৮১৯)

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.২. ধর্ম প্রভাবিত বিদ্রোহ

(৩.২.ক.) সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০)
(৩.২.খ.) ওয়াহাবি আন্দোলন
(৩.২.গ.) ফরাজি আন্দোলন

এই বিদ্রোহ গুলির অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

(ক) পাগলপন্থি বিদ্রোহ (১৮২৫-২৭)
(খ) তারিখ-ই-মহম্মদীয়া

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.৩. নীল বিদ্রোহ

এই বিদ্রোহের অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনা সহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

পাবনার কৃষক বিদ্রোহ

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)।

Leave a Comment