যোসেফ প্রিস্টলি

একজন প্রখ্যাত ইংরেজ বিজ্ঞানী, দার্শনিক, ধর্মতত্ত্ববিদ এবং লেখক ছিলেন যোসেফ প্রিস্টলি (Joseph Priestley)। তিনি অক্সিজেন গ্যাস আবিষ্কারের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। প্রিস্টলি বায়ুর রাসায়নিক প্রকৃতি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছিলেন এবং আধুনিক রসায়নের বিকাশে অবদান রাখেন। তিনি বিজ্ঞান, ধর্ম, এবং রাজনীতি নিয়ে বহু প্রবন্ধ ও বই রচনা করেছিলেন এবং তাঁর চিন্তাধারায় প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়। তাঁর কাজ বিজ্ঞানের ইতিহাসে গভীর প্রভাব ফেলেছে।

Table of Contents

বিজ্ঞানী যোসেফ প্রিস্টলি

ঐতিহাসিক চরিত্রযোসেফ প্রিস্টলি
জন্ম১৩ মার্চ ১৭৩৩
জন্মস্থানফিল্ডহেড, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড
পেশাবিজ্ঞানী, দার্শনিক, লেখক, ধর্মতত্ত্ববিদ
প্রধান আবিষ্কারঅক্সিজেন গ্যাস আবিষ্কার
উল্লেখযোগ্য বইExperiments and Observations on Different Kinds of Air
অবদানআধুনিক রসায়নের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
মৃত্যু৬ ফেব্রুয়ারি ১৮০৪ খ্রি

যোসেফ প্রিস্টলি

ভূমিকা :- যোসেফ প্রিস্টলি ছিলেন একজন খ্যাতনামা ইংরেজ বিজ্ঞানী, দার্শনিক, ধর্মতত্ত্ববিদ এবং প্রাবন্ধিক। তিনি আধুনিক রসায়নের অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত এবং অক্সিজেন গ্যাস আবিষ্কারের জন্য বিশেষভাবে স্মরণীয়। প্রিস্টলি বিজ্ঞানের পাশাপাশি ধর্ম ও রাজনীতিতে সমান আগ্রহী ছিলেন এবং মুক্তচিন্তা, মানবাধিকার, ও গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। তাঁর গবেষণা বায়ুর রাসায়নিক প্রকৃতি ও গ্যাসের আচরণ সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। তাঁর জীবন ও কাজ বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার অগ্রগতি এবং সামাজিক পরিবর্তনের প্রতীক।

যোসেফ প্রিস্টলির জন্ম

ইংল্যান্ড-এর ফিল্ডহেড শহরে এক দরিদ্র তত্ত্ববায় পরিবারে ১৭৩৩ খ্রিস্টাব্দের ১৩ মার্চ যোসেফ প্রিস্টলি জন্মগ্রহণ করেন।

বিজ্ঞানী যোসেফ প্রিস্টলির বাল্যকাল

মাত্র সাত বছর বয়সে বাবা মা দুজনকেই হারান। অনাথ বালকের দায় দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন তাঁর এক পিসিমা। পিসিমার আর্থিক অবস্থাও স্বচ্ছল ছিল না। তবু তাঁর হৃদয়টি ছিল স্নেহ দয়া মায়ায় ভরা। তাঁরই স্নেহ যত্নে বড় হতে থাকেন প্রিস্টলি। পিসিরা ছিলেন প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টান। যে মত প্রবর্তন করেছিলেন মহান চিন্তানায়ক মার্টিন লুথার। খ্রিস্টান সমাজের প্রাচীনপন্থী ক্যাথলিক সম্প্রদায় ধর্মের ব্যাপারে ছিল অত্যন্ত গোঁড়া। মার্টিন লুথার প্রবর্তিত মতাদর্শ ছিল উদারপন্থী, প্রাচীন পন্থার বিরোধী। তাঁর অনুগামীরা ছিল আড়ম্বরহীন, সহজ জীবন যাপনে অভ্যস্ত এবং সংস্কারমুক্ত। এই পরিবেশে লালিত হয়ে বাল্যবয়স থেকে প্রিস্টলিও এই মতাদর্শের অনুবর্তী হয়ে ওঠেন।

বই পড়তে ভালোবাসতেন যোসেফ প্রিস্টলি

অন্য বালকদের মতো খেলাধুলোয় বিশেষ আগ্রহ বোধ করতেন না তিনি। একখানি বই হাতে নিয়ে ঘরের কোণায় বসে থাকতেই তাঁর বেশি ভাল লাগত। বেশি ভালবাসতেন বিজ্ঞানের বই পড়তে। মাঝে মধ্যে ধর্ম আলোচনাতেও আগ্রহ বোধ করতেন। বড়দের ধর্ম বিষয়ের আলোচনা মনোযোগ সহকারে শুনতেন।

বিজ্ঞানী যোসেফ প্রিস্টলির শিক্ষা

পড়াশুনায় তাঁর এতটাই আগ্রহ ছিল যে একরকম নিজের চেষ্টাতেই যোল বছর বয়সের মধ্যে গ্রিক, ল্যাটিন, ফ্রেঞ্চ, জার্মান ও আরবী ভাষা শিখে ফেলেন। স্কুলের বিধিবদ্ধ পড়াশুনা বলতে প্রিস্টলি পেয়েছিলেন এক ননফরমিস্ট স্কুলের শিক্ষা। ডার্ভেন্দ্রি শহরে এই আবাসিক স্কুল থেকে পাশ করে ১৭৫২ খ্রিস্টাব্দে যাজক বৃত্তিকেই তিনি জীবিকা হিসাবে গ্রহণ করলেন।

যোসেফ প্রিস্টলির স্থায়ী যাজকের কাজ

পুরুতগিরির কাজে টানা বারো বছর এখানে সেখানে ঘুরে যাযাবর জীবন কাটালেন প্রিস্টলি। পরে লিডসের মিলহিল চ্যাপেলে পেলেন যাজকের স্থায়ী কাজ। সেই সময় তাঁর বয়স বত্রিশ বছর। গ্রাসাচ্ছাদনের একটা স্থায়ী ব্যবস্থা হতে বিয়েও করে ফেললেন।

সখের বিজ্ঞানী যোসেফ প্রিস্টলি

বিজ্ঞানের বস্তুবাদে ছেলেবেলা থেকেই আকৃষ্ট হয়েছিলেন তিনি। সংসারের টানা দারিদ্র্যের মধ্যেও মাঝে মধ্যে বিজ্ঞানের টানে বসে পড়তেন রসায়ন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষায়। পাদ্রী হয়েও তাঁর বিজ্ঞান নিয়ে নাড়াচাড়া করার অভ্যাসের কথা অনেকেই জেনে গিয়েছিল। তাই লোকে তাঁর নাম দিয়েছিল সখের বিজ্ঞানী।

বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন ও যোসেফ প্রিস্টলির সাক্ষাৎ

  • (১) লীডস শহরের গীর্জায় চাকরিতে থাকার সময়েই একবার এক বক্তৃতার আসরে গিয়েছিলেন প্রিস্টলি। সেখানে সেদিন বিদ্যুৎবিজ্ঞান নিয়ে জমাটি বক্তৃতা করছিলেন বিখ্যাত বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন। স্বভাবতঃই বিজ্ঞানমনস্ক পাদ্রী প্রিস্টলি খুব মনোযোগ দিয়ে বিজ্ঞানীর বক্তব্য শুনেছিলেন।
  • (২) বক্তৃতা শেষ হলে দর্শকের আসন থেকে দাঁড়িয়ে উঠে তিনি ফ্রাঙ্কলিনকে প্রশ্ন করলেন, “Mr. Franklin, I am deeply interested in your experiments with electricity. How can I findout more about this wonderful force?”
  • (৩) প্রশ্ন শুনে, হতদরিদ্র চেহারার পাদ্রীকে দেখে বিস্মিত হলেও ফ্রাঙ্কলিন সেদিন এগিয়ে এসে সাগ্রহে করমর্দন করে তাঁর পরিচয় জেনে নিলেন। পরে সাগ্রহে জানালেন, “Very well, Reverend Pristly, if you are still inter- ested in electricity tomorrow visit me at my lodging.”
  • (৪) একজন সাধারণ পাদ্রীর বিজ্ঞানপ্রীতি দেখে সেদিন মুগ্ধ হয়েছিলেন তড়িৎবিজ্ঞানী ফ্রাঙ্কলিন। বক্তৃতা ব্যবস্থাপকদের একজনকে তিনি সেদিন বলেছিলেন, “I have never seen such a clergyman like him who is so deeply interested in science.”
  • (৫) বিজ্ঞান বিষয়ে ফ্রাঙ্কলিনের প্রথাগত কোনও শিক্ষা ছিল না। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যতটা তিনি করেছেন নিজের চেষ্টাতেই করেছেন। তাই তাঁরই মতো বিজ্ঞানের প্রথাগত শিক্ষাদীক্ষাহীন বিজ্ঞানের প্রতিভাকে দেখে চিনতে বিলম্ব হয় নি।
  • (৬) তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, এই সম্ভাবনাকে গির্জা তার ধর্মের ছায়ায় বেশি দিন আটকে রাখতে পারবে না। বিজ্ঞানের মুক্ত অঙ্গনে তাঁর আত্মপ্রকাশ অবশ্যম্ভাবী। জাতবিজ্ঞানী ফ্রাঙ্কলিনের সেদিনের উপলব্ধি নিকট ভবিষ্যতেই সত্য প্রমাণিত হল।

রাসায়নিক গ্যাস নিয়ে যোসেফ প্রিস্টলির পরীক্ষা

ফ্রাঙ্কলিনের সঙ্গে পরিচিত হবার আগে থেকেই রসায়ন বিজ্ঞানের বইপত্র পড়াশুনা করে নানা রাসায়নিক গ্যাস নিয়ে পরীক্ষায় নেমে পড়েছিলেন প্রিস্টলি।

অনামা গ্যাসের সন্ধান পান যোসেফ প্রিস্টলি

লীডস শহরে একটি বস্তিতে নোংরা পরিবেশে ঘর নিয়ে সপরিবারে বাস করতেন তিনি। বাড়ির কাছেই ছিল সরকারী মদের ভাটিখানা। সেখানে আশেপাশে পড়ে থাকত বিস্তর খালি পিপে। সেই সব পিপে থেকে গ্যাসের দুর্গন্ধে ভরে থাকত গোটা অঞ্চল। সেই দুর্গন্ধ গ্যাসে আকৃষ্ট হয়ে প্রিস্টলি একদিন আবিষ্কার করলেন, মদের পিপের তলানির গাঁজলাই হল দুর্গন্ধ গ্যাসের উৎস। একটা অনামা গ্যাসের সন্ধান পেয়ে উৎসাহিত হয়ে ওঠেন প্রিস্টলি। তিনি স্থির করলেন, গোপনে এই গ্যাস নিয়ে পরীক্ষা চালাবেন।

যোসেফ প্রিস্টলির বাতাসি গ্যাস আবিষ্কার

একজন নিষ্ঠাবান পাদ্রীকে মদের ভাটিখানায় ঘোরাঘুরি করতে দেখলে স্বভাবতই লোকে সন্দিহান হয়ে উঠবে একথা অজানা ছিল না প্রিস্টলির। কিন্তু বিজ্ঞানের আকর্ষণে লোকলজ্জার ভয় তুচ্ছ করে তিনি গোপনে পিপের উৎপন্ন গ্যাস কাচের জারে সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন। পরীক্ষার জন্য জারের ভেতরে জ্বলন্ত কাঠি ফেললেন। সঙ্গে সঙ্গে তা নিভে গেল। পরে আরো গভীর পরীক্ষার পরে তিনি নিশ্চিত হলেন পিপের মদের গাঁজলায় উৎপন্ন গ্যাস বাতাসী গ্যাস ছাড়া অন্য কিছু নয়। প্রিস্টলি জানতেন, বছর কয়েক আগেই যোসেফ ব্ল‍্যাক নামে এক রসায়ন বিজ্ঞানী চুনাপাথর পুড়িয়ে ল্যাবরেটরিতেই তৈরি করেছিলেন বাতাসী গ্যাস।

কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের চরিত্র নির্ণয়ের চেষ্টায় যোসেফ প্রিস্টলি

গ্যাস শনাক্তকরণের পরে এবারে তিনি বসে গেলেন তার বিষয়ে আরও কিছু জানার উদ্দেশ্যে। একদিন তিনি নিজেই তৈরি করলেন বাতাসী গ্যাস। সেই গ্যাস জলে ছাড়তেই দেখলেন সামান্য বুদবুদ তুলে জলে মিশে গেল। প্রিস্টলি বাতাসী গ্যাস বলে যা জানতেন তা ছিল আসলে কার্বন ডাই-অক্সাইড। পরবর্তীকালে বিজ্ঞানীরা এই নামকরণ করেছেন। প্রিস্টলির গ্যাস মেশানো জল আমরা জানি সেটা ছিল নির্ভেজাল সোডাজল। কিন্তু প্রিস্টলির সময়ে এসব কিছুই জানা ছিল না। তবে বিজ্ঞানের ইতিহাস আমাদের জানায় কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের চরিত্র নির্ণয়ের চেষ্টা প্রিস্টলিই প্রথম করেছিলেন। এই পরীক্ষাটিই ছিল প্রিস্টলির বিজ্ঞানী জীবনের প্রথম ধাপ।

যোসেফ প্রিস্টলির হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড আবিষ্কার

এরপর সেই বস্তির সংকীর্ণ নোংরাভরা ঘরে বসেই নানা গ্যাস নিয়ে পরীক্ষায় মেতে ওঠেন প্রিস্টলি। এভাবেই তৈরি হতে থাকে আগামী দিনের রসায়ন বিজ্ঞানের পথ। গ্যাস ঘটিত পরীক্ষায় বসেই একদিন তিনি আবিষ্কার করে ফেলেন হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড। সাধারণ লবনকে ভিট্রিয়ালিক অম্লের সঙ্গে মিশিয়ে গরম করে তৈরি হল এই গ্যাস।

অ্যামোনিয়া গ্যাস আবিষ্কার করেন যোসেফ প্রিস্টলি

আধুনিক জীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় যে অ্যামোনিয়া গ্যাস, তাও জন্ম নিয়েছিল এভাবেই একদিন সেই বস্তির ঘরে প্রিস্টলির হাতেই। এই ঝাঁঝালো গন্ধ গ্যাস তিনি আবিষ্কার করেন অ্যামোনিয়া দ্রবণ বা হার্টশোর্ন স্পিরিটকে পারদ পাত্রের ওপরে গরম করে। চোখে জ্বালা ধরানো এই গ্যাসের তিনি নাম দেন ক্ষারীয় গ্যাস বা অ্যালকালাই গ্যাস। পরবর্তীকালে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন অ্যামোনিয়া গ্যাস। এরপর প্রিস্টলির হাতেই আবিষ্কৃত হয় নাইট্রোজেন গ্যাস। এভাবেই একটার পর একটা গ্যাস আবিষ্কারের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলতে থাকে প্রিস্টলির বিজ্ঞান সাধনা।

রাজনীতি সম্পর্কে যোসেফ প্রিস্টলি

  • (১) গির্জায় পুরুতগিরির পাশাপাশি বিজ্ঞান গবেষণা নিয়েই ক্ষান্ত থাকেন নি প্রিস্টলি। সমসাময়িক রাজনীতিতেও উৎসাহী ছিলেন তিনি। অসত্য ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করার শিক্ষা তিনি পেয়েছিলেন পিসির বাড়ি থেকেই। তাই আমেরিকার মুক্তি আন্দোলনের সমর্থনে তিনি সোচ্চার না হয়ে পারেন নি।
  • (২) ইংরাজদের শাসন-শোষণের প্রতিবাদে সমগ্র আমেরিকায় তখন দেখা দিয়েছে গণজাগরণ। সেই আন্দোলন ক্রমে পরিণত হল সশস্ত্র বিপ্লবের পথে। এই সন্ধিক্ষণে বিজ্ঞানের গবেষণা ছেড়ে স্বাধীনতাকামী মানুষের সঙ্গে পথে নেমে পড়লেন প্রিস্টলি।
  • (৩) কখনো অগ্নিঝরা বাণী লেখা প্রচারপত্র বিলি করছেন, কখনো স্বেচ্ছাচারি ব্রিটিশের অত্যাচার নিপীড়নের তীব্র নিন্দা করে চিঠি লিখছেন। কখনো পথে পথে বক্তৃতা করে গণজাগরণের পক্ষে জনমত উজ্জীবিত করছেন, মুক্তকণ্ঠে আহ্বান জানাচ্ছেন বিপ্লবকে।

যোসেফ প্রিস্টলির চরিত্র বৈশিষ্ট্য

বিজ্ঞানী প্রিস্টলির চরিত্রের বৈশিষ্ট্য এই যে, কেবল ধর্ম বিষয়েই নয়, বিজ্ঞান বা রাজনীতি সর্বক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন পরাধীনতার পরিপন্থী। তিনি ছিলেন মনেপ্রাণে স্বাধীনতার পূজারী। তিনি কামনা করতেন, বিশ্বমানবের বন্ধনমুক্ত স্বাধীন জীবন।

বিজ্ঞানী যোসেফ প্রিস্টলির কাছে চাকরির প্রস্তাব

দরিদ্র যাজক প্রিস্টলির জীবনে অকস্মাৎ সুখের আলোর ঝিলিক দেখা দিল ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে। স্বশিক্ষিত এই মানুষটির বহু ভাষায় দক্ষতার কথা অবিদিত ছিল না। সেই সুবাদেই এই সময়ে একটি চাকরির প্রস্তাব পেয়ে গেলেন। ইংল্যান্ডের স্বনামধন্য অভিজাতদের মধ্যে লর্ড শেলবার্ন ছিলেন অন্যতম। তিনিও ভাষাতত্ত্বে উৎসাহী। তাই একটি চিঠি পাঠিয়ে জানালেন, তিনি প্রিস্টলিকে তাঁর লাইব্রেরিটির তত্ত্বাবধায়ক করতে চান। তাছাড়া অবসব সময়ে ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতেও তিনি আগ্রহী।

চাকরি জীবনে যোসেফ প্রিস্টলি

বলাবাহুল্য প্রিস্টলি সানন্দে এই প্রস্তাবে সম্মতি জানালেন এবং লীডস ত্যাগ করে সপরিবারে ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে চলে এলেন শেলবার্নের প্রাসাদে। এখানে লাইব্রেরি তদারকের কাজে তিনি ছিলেন ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। এই ক’বছরে তাঁর জীবনে এসেছিল আর্থিক স্বাচ্ছন্দ। তিনি যখন চাকরি থেকে অবসর নেন, গুণমুগ্ধ শেলবার্ন তাঁর জন্য যৎকিঞ্চিৎ বাৎসরিক ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। শেলবার্নভবনে চাকরির আটটি বছর ছিল প্রিস্টলির জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ল্যাবরেটরি পেলেন যোসেফ প্রিস্টলি

শেলবার্নের সহৃদয়তায় তিনি গবেষণার কাজের জন্য পেয়েছিলেন একটি ভাল ল্যাবরেটরিও। এখানে বসেই তিনি নতুন নতুন আবিষ্কারের দ্বারা রসায়ন বিজ্ঞানের সম্প্রসারণ ঘটিয়েছেন। তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার অক্সিজেন ও অম্লজান গ্যাসকে আলাদা সংগ্রহ করার পদ্ধতি। এ কাজটি তিনি এখানেই করেছেন ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে।

যোসেফ প্রিস্টলির অক্সিজেন গ্যাস আবিষ্কার

  • (১) একদিন গভীর রাতে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার টেবিলে বসে বকপাত্রে পারদে রাখা লাল অক্সাইড গুঁড়ো গরম করছিলেন। কিছুক্ষণ পরে লক্ষ্য করলেন, লাল অক্সাইড গুঁড়ো গলে বর্ণহীন গ্যাস নির্গত হচ্ছে। তিনি তখন পাত্রের পারদ সরিয়ে সতর্কতার সঙ্গে গ্যাসটিকে গ্রাহক পাত্রে সংগ্রহ করলেন।
  • (২) সামনেই জ্বলছিল একটি মোমবাতি। আলো দেখতে পেয়ে তাঁর মনে পড়ে গেল ভাটিখানার গন্ধযুক্ত গ্যাস পরীক্ষা করার কথা। পিপের ভেতরে জুলন্ত কাঠি ফেলার সঙ্গে সঙ্গেই পটাপট নিভে গিয়েছিল।
  • (৩) এই নতুন গ্যাসটিকেও সেভাবে পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে তিনি মোমবাতিটি কাত করে গ্যাসের ফ্লাস্কের মুখে ধরেন। কিন্তু আলো তো নিভল না। পরিবর্তে শিখাটি আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠল। এরপরে মোমবাতি সরিয়ে ফ্লাস্কে ফেললেন জ্বলন্ত কাঠি। তিনি সবিস্ময়ে দেখলেন, কাঠির আলো উজ্জ্বলতর হয়ে উঠল।
  • (৪) নতুন এক গ্যাস আবিষ্কারের আনন্দে উত্তেজনায় কেঁপে উঠলেন প্রিস্টলি। তিনি এই গ্যাসের নাম দিলেন dephlogisticated air বা ফ্লোজিস্টনহীন বাতাস। পরে বিজ্ঞানীরা তার নাম দিয়েছেন অক্সিজেন। এভাবেই একটি মোমের আলোয় রসায়ন জগতের যুগান্তকারী আবিষ্কারটি প্রিস্টলির হাতে পেয়ে গেল বিশ্ববিজ্ঞান।
  • (৫) এই প্রসঙ্গে পরে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, “If I had not happened to have a lighted candle before me, I should probably never made the trial …..”
  • (৬) ফ্লোজিস্টনহীন গ্যাস নিয়ে আরও খুঁটিনাটি পরীক্ষা করেছেন প্রিস্টলি। বায়ুরুদ্ধ গ্যাস জারে ইঁদুর ফেলে দেখেছেন ইঁদুর বহাল তবিয়তে রয়েছে। কৌতূহলী হয়ে নিজেও ওই গ্যাসে জোরে শ্বাস নেন। উপলব্ধি করলেন, ক্লান্তি ভাব নিমেষে উবে গিয়ে শরীর চনমনে হয়ে উঠল।
  • (৭) চমৎকৃত হয়েছিলেন প্রিস্টলি কিন্তু সেদিন বুঝতে পারেন নি এই গ্যাসকে চিকিৎসার কাজে কিভাবে লাগানো যেতে পারে। ফ্লোজিস্টনবিহীন গ্যাস বা অক্সিজেন যে বায়ুরই এক উপাদান তাও সেদিন বুঝে উঠতে পারেন নি তিনি।
  • (৮) কারণ সেকালের বিজ্ঞানীদের তখনো পর্যন্ত অজানা ছিল যে বাতাস হল নানান গ্যাসের মিশ্রণ মাত্র। অক্সিজেনকে একটি বিশুদ্ধতর বায়ু বলেই প্রিস্টলি মনে করেছেন।

অক্সিজেন গ্যাসের নাম রাখেন ল্যাভয়সিয়া

তাঁর ফ্লোজিস্টনবিহীন বাতাস নিয়ে প্রথম সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিকভাবে পরীক্ষা করে তার নাম অক্সিজেন রেখেছিলেন ফরাসী বিজ্ঞানী ল্যাভয়সিয়া। ফ্রান্স-এ যখন দুই বিজ্ঞানীর সাক্ষাৎকার হয়, ল্যাভয়সিয়া গ্যাসটির কথা জেনেছিলেন প্রিস্টলির কাছে এবং তিনিই পরীক্ষার পরে প্রথম আবিষ্কার করেন বাতাসে রয়েছে একভাগ অম্লজান ও তিন ভাগ নাইট্রোজেনের মিশ্রণ।

বার্মিংহাম শহরে যোসেফ প্রিস্টলি

লর্ড শেলবার্নের কাজে ইস্তফা দেবার পর প্রিস্টলি চলে আসেন বার্মিংহাম শহরে। ততদিনে তাঁর পরিচয় কেবল একজন দরিদ্র পাদ্রি নয়। একজন সফল বিজ্ঞানী হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছেন তিনি। তাই শহরের গণ্যমান্যদের উষ্ণ অভ্যর্থনা লাভ করলেন বিজ্ঞানী। তাঁকে সম্মান জানানো হল, বিদ্বৎসমাজের সংগঠন লুনার সোসাইটির সম্মানীয় সদস্যপদ দিয়ে। বার্মিহামের লুনার সোসাইটির তখন খুবই নামডাক। বিখ্যাত সব জ্ঞানীগুণীর সমাবেশ এখানে। তাদের মধ্যে রয়েছেন বাষ্পীয় ইঞ্জিনের আবিষ্কারক জেমস ওয়াট, বিবর্তনবাদের প্রবক্তা চার্লস ডারউইন-এর পিতামহ এরামাস ডারউইন, বিশিষ্ট রসায়নবিদ জেমস কার প্রমুখ।

ফরাসি বিপ্লবের সমর্থনে যোসেফ প্রিস্টলি

১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে সমগ্র ফ্রান্স জুড়ে শুরু হল গণজাগরণ। স্বাধীনতার লক্ষ্যে সেই আন্দোলন রক্তক্ষয়ী বিপ্লবের রূপ নিল। বিপ্লবীরা গিলোটিনে হত্যা করল সম্রাট ষোড়শ লুই ও সম্রাজ্ঞী আতোয়ানাৎকে। সেই সঙ্গে রাজতন্ত্রের পতনের মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্রের অরুণোদয় হল। এই সংবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রিস্টলি বার্মিংহাম থেকে গণনেতাদের অভিনন্দন জানিয়ে পত্র লিখলেন। ফরাসী বিপ্লবের সমর্থনে ও তার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে নানাস্থানে পথসভাও করলেন।

নির্বিকার যোসেফ প্রিস্টলি

স্বাধীনতার পূজারী প্রিস্টলি আমেরিকা বা ফ্রান্সের গণমুক্তির আন্দোলনকে মুক্তকণ্ঠে সমর্থন জানাতে কখনো কুণ্ঠিত হন নি। কিন্তু এই সমর্থনের ফলে তিনি ব্রিটেনের সরকার ও প্রভাবশালী রাজপুরুষদের রোষ দৃষ্টিতে পড়লেন। চার্চের প্রভাবশালী পিতারাও প্রিস্টলির উচ্ছ্বাসকে সমর্থন করতে পারলেন না। ইতিমধ্যে ফ্রান্সের গণজাগরণে মাথাচাড়া দিয়ে উঠল সন্ত্রাসবাদ। ফরাসী বিপ্লব-এর এই শোচনীয় পরিণতি দেখে বহু ইংরাজ চিন্তানায়ক হতাশ হলেন। অনেকেই বিপ্লবের প্রতি তাঁদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নিলেন। কিন্তু প্রিস্টলি রইলেন নির্বিকার। তিনি আশা করেছিলেন অচিরেই সহিংস গণজাগরণের অবসান ঘটবে।

যোসেফ প্রিস্টলির পাণ্ডুলিপি ভস্মীভূত

১৭৯১ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসের মাঝামাঝি বার্মিংহামের পথে পথে দেখা গেল মারমুখী জনতা শ্লোগান তুলছে, ফরাসী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। উন্মত্ত জনতা বেছে বেছে বাড়িঘর লুঠ করে আগুন ধরিয়ে দিতে লাগল। নাশকতামূলক এই তাণ্ডবে প্রিস্টলির গবেষণার বহুমূল্যবান নথিপত্র ও প্রাচীন দুষ্প্রাপ্য পাণ্ডুলিপি ভস্মীভূত হয়েছিল। ব্রিটিশ সরকার ও চার্চের কর্তাদের প্রত্যক্ষ প্ররোচনা যে এই দুষ্কর্মের প্রেরণা যুগিয়েছিল তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

ইংল্যান্ডে অবহেলিত যোসেফ প্রিস্টলি

জীবনের ওপরেও আঘাত আসতে পারে অনুমান করে প্রিস্টলি অনতিবিলম্বে বার্মিংহাম ছেড়ে লণ্ডনে পালিয়ে যান এবং অতঃপর সেখানেই বসবাস করতে থাকেন। আশ্চর্যের বিষয়, যে রয়াল সোসাইটি ইতিপূর্বে বিভিন্ন আবিষ্কারের জন্য যে বিজ্ঞানীকে স্বীকৃতি ও অভিনন্দন জানিয়েছে লন্ডনে উপস্থিত থাকা অবস্থাতে তাঁকে তাঁরা সামান্য সহানুভূতি জানানোও প্রয়োজন মনে করে নি। উপরন্তু নানাভাবে সোসাইটির কাছ থেকে প্রিস্টলি তাচ্ছিল্য ও অবহেলাই পেয়েছেন। ইংল্যাণ্ড তথা সমগ্র ইউরোপ-এর অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই সারস্বত সংস্থার ইতিহাসে এমন ঘটনা এক নিন্দনীয় নজির হয়ে রয়েছে।

আমেরিকায় এলেন যোসেফ প্রিস্টলি

দুর্ভাগ্য এই যে, লন্ডনেও সুস্থিত হতে পারলেন না প্রিস্টলি। সরকারের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীর দল দিনে দিনে এমন অবস্থার সৃষ্টি করল যে শেষ পর্যন্ত চিরদিনের মতো জন্মভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য হলেন তিনি। ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে প্রিস্টলি লন্ডন ত্যাগ করে চলে এলেন আমেরিকার ফিলাডেলফিয়া শহরে।

আমেরিকায় সম্মানিত যোসেফ প্রিস্টলি

  • (১) মুক্ত চিন্তার অগ্রণী পুরুষ, তথাকথিত অশিক্ষিত বিজ্ঞান সাধক প্রিস্টলি আমেরিকায় পেলেন সাদর অভ্যর্থনা। তাঁর আগমনবার্তা পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন সর্বাগ্রে প্রিস্টলিকে সাদরে নিজের বাড়িতে নিয়ে এলেন।
  • (২) কিছুদিনের মধ্যেই পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রধান অধ্যাপকের কাজটিও জুটে গেল ফ্রাঙ্কলিনের উদ্যোগে। প্রভাবশালী মার্কিন নাগরিকদের তৎপরতায় আরও নানাভাবেই সম্মান জানানো হল বিজ্ঞানীকে।
  • (৩) এখানেই শেষ হল না, আমেরিকার প্রোটেস্টান্ট চার্চের নেতৃত্বও তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হল। মোটকথা প্রিস্টলি এখানে পেলেন জীবনধারণের উপযোগী আর্থিক নির্ভরতার আশ্রয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানীয় অধ্যাপনার কাজ।
  • (৪) আধুনিক গবেষণাগার, সর্বোপরি চার্চের সন্ত্রাসমুক্ত স্বাধীন চিন্তার অনাবিল পরিবেশ একজন একনিষ্ঠ বিজ্ঞানসাধকের পক্ষে এর বেশি প্রত্যাশা আর কী থাকতে পারে।

দেশের শ্রেষ্ঠ মানুষদের সান্নিধ্য পেলেন যোসেফ প্রিস্টলি

বিস্মিত অভিভূত প্রিস্টলি পেনসিলভেনিয়াতেই থিতু হলেন এবং অধ্যাপনা ও গবেষণার কাজে মগ্ন হলেন। আমেরিকার মাটিতে যেন নবজন্ম হল তাঁর। বয়স তখন ষাটের কোঠায়। আমেরিকায় বসবাসকালে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের শ্রেষ্ঠ মানুষদের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন প্রিস্টলি। তাঁদের মধ্যে জর্জ ওয়াশিংটন, টমাস জেফারসন প্রমুখ বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিরাও ছিলেন।

লাফিং গ্যাসের আবিষ্কর্তা যোসেফ প্রিস্টলি

নিশ্চিন্ত নিরুপদ্রব জীবনে নিবিড় গবেষণায় ১৭৯৭ খ্রিস্টাব্দে প্রিস্টলি একে একে আবিষ্কার করলেন বিষাক্ত গ্যাস কার্বন মনোক্সাইড (Co) ও নাইট্রাস অক্সাইড গ্যাস (N₂O)। পরে এই গ্যাসেরই নাম হয় লাফিং গ্যাস।

যোসেফ প্রিস্টলির মৃত্যু

এরপর এগিয়ে এল কর্মময় জীবনের অন্তিম লগ্ন। ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর দ্বিতীয় জন্মভূমি আমেরিকার মাটিতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বিজ্ঞানের আশ্চর্য প্রতিভা প্রিস্টলি। মৃত্যুর পর তাঁর বসতবাড়ি ও গবেষণাগারটিকে সংরক্ষিত করা হয় জাতীয় স্মারক হিসাবে।

উপসংহার :- জোসেফ প্রিস্টলি ছিলেন বিজ্ঞান, দার্শনিক চিন্তাধারা এবং মানবকল্যাণে নিবেদিত একজন অগ্রণী ব্যক্তিত্ব। তাঁর অক্সিজেন গ্যাস আবিষ্কার এবং বায়ুর রাসায়নিক প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা আধুনিক রসায়নের ভিত্তি স্থাপন করে। পাশাপাশি, তাঁর দার্শনিক ও ধর্মীয় রচনা সমাজে মুক্তচিন্তা ও গণতন্ত্রের চেতনা ছড়িয়ে দিয়েছে। বিজ্ঞান ও সমাজের উন্নয়নে তাঁর অসামান্য অবদান আজও স্মরণীয়। প্রিস্টলির জীবন ও কাজ মানব ইতিহাসে জ্ঞানের সীমা সম্প্রসারণ এবং মানবতার অগ্রগতির প্রতীক।

(FAQ) যোসেফ প্রিস্টলি সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১। যোসেফ প্রিস্টলি অক্সিজেন কবে আবিষ্কার করেন?

তিনি ১ আগস্ট, ১৭৭৪ সালে অক্সিজেন গ্যাস আবিষ্কার করেন।

২। প্রিস্টলির কাজ কোন ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রভাব ফেলেছে?

প্রিস্টলির কাজ রসায়ন এবং ধর্মীয় চিন্তাধারায় গভীর প্রভাব ফেলেছে।

৩। প্রিস্টলির রাজনৈতিক মতাদর্শ কী ছিল?

তিনি গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, এবং মানবাধিকার সমর্থন করতেন এবং ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক ছিলেন।

৪। প্রিস্টলি ধর্মীয় বিষয়ে কী চিন্তা করতেন?

তিনি মুক্তচিন্তা এবং র‍্যাশনালিজমের সমর্থক ছিলেন এবং ধর্মের ওপর বিজ্ঞানভিত্তিক আলোচনার পক্ষে ছিলেন।

৫। যোসেফ প্রিস্টলির গবেষণার প্রধান পদ্ধতি কী ছিল?

তিনি পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নতুন বৈজ্ঞানিক তথ্য আবিষ্কার করতেন।

৬। প্রিস্টলির আবিষ্কারকে কীভাবে স্মরণ করা হয়?

প্রিস্টলির গবেষণাকে আধুনিক রসায়নের ভিত্তি হিসেবে গণ্য করা হয় এবং তাঁর সম্মানে বিভিন্ন বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

Leave a Comment