২০২৫ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাস বিষয়ে সম্পূর্ণ সিলেবাসের সাজেশন্ ভিত্তিক পিডিএফ নোটস্ নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করুণ (দাম প্রতি ক্লাস ৯৯ টাকা)।

👉Chat on WhatsApp

মারসেলো মালপিজি

সপ্তদশ শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট ইতালীয় চিকিৎসাবিজ্ঞানী এবং জীববিজ্ঞানী ছিলেন মারসেলো মালপিজি (Marcello Malpighi)। তাকে আধুনিক মাইক্রোস্কোপিক শারীরবিদ্যার জনক হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া, ফুসফুসের গঠন, এবং কিডনির গ্লোমেরুলাস সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেন। তার নামানুসারে “মালপিজি কর্পাসল” এবং “মালপিজি স্তর” নামক গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক কাঠামোর নামকরণ করা হয়েছে।

Table of Contents

চিকিৎসক মারসেলো মালপিজি

ঐতিহাসিক চরিত্রমারসেলো মালপিজি
জন্ম১০ মার্চ ১৬২৮
জন্মস্থানক্রেয়েটো, ইতালি
পেশাচিকিৎসাবিজ্ঞানী, জীববিজ্ঞানী, শারীরবিদ
আবিষ্কারমালপিজি কর্পাসল, মালপিজি স্তর, ফুসফুসের অ্যালভিওলাই
গুরুত্বপূর্ণঅবদানমাইক্রোস্কোপিক শারীরবিদ্যার প্রবর্তন, ফুসফুস, কিডনি ও ত্বকের গঠন নিয়ে গবেষণা
মৃত্যু১০ মার্চ, ১৬৯৪ খ্রি

মারসেলো মালপিজি

ভূমিকা :- মারসেলো মালপিজি ছিলেন ইতালির একজন খ্যাতনামা চিকিৎসাবিজ্ঞানী, জীববিজ্ঞানী এবং শারীরবিদ, যিনি মাইক্রোস্কোপিক শারীরবিদ্যার সূচনাকারী হিসেবে পরিচিত। তিনি প্রথমবারের মতো মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করে শারীরিক গঠন এবং জীববিজ্ঞান অধ্যয়ন করেন। তার গবেষণার মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গঠন সম্পর্কে নতুন জ্ঞান উন্মোচিত হয়। মালপিজি প্রথম ফুসফুসের অ্যালভিওলাই, কিডনির গ্লোমেরুলাস, এবং ত্বকের মালপিজি স্তরের বর্ণনা প্রদান করেন। তার কাজ জীববিজ্ঞানের জগতে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে এবং আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করে। মালপিজির অবদান তাকে জীববিজ্ঞান ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে এক অনন্য স্থান দিয়েছে।

মারসেলো মালপিজির জন্ম

ইতালির দক্ষিণ অঞ্চলের বোলগনা শহরে এক বিত্তবান পরিবারে ১৬২৮ খ্রিস্টাব্দে মারসেলো মালপিজির জন্ম। আট ভাইবোনের মধ্যে মারসেলো ছিলেন সর্বজ্যেষ্ঠ।

বিজ্ঞানী মারসেলো মালপিজির চরিত্রের মধুরতা

ধনী পরিবারে আদর যত্ন ও শিক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি ছিল না। মারসেলো ছোট ভাইবোনদের সঙ্গে বড় হয়ে ওঠেন। স্নেহ দয়া মায়া ইত্যাদি সব মানবিক গুণ তাঁর চরিত্রকে মাধুর্যমন্ডিত করেছিল। গরীব দুঃখীর দুঃখকষ্ট দেখলে খুবই বিচলিত হয়ে পড়তেন তিনি এবং যথাসাধ্য তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করতেন। পরিচিত মহলে এবং পরিবারে সকলেই অত্যন্ত ভালবাসতো তাঁকে।

পিতামাতা হারা মারসেলো মালপিজি

তার যখন একুশ বছর বয়স, ১৬৪৯ খ্রিস্টাব্দে মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে মা বাবা দুজনেই আকস্মিক রোগভোগে মারা গেলেন। শোক সামলে ওঠারও সময় পেলেন না মারসেলো, নিজেই জ্বরে শয্যাশায়ী হলেন। পরে ভাইবোনেরাও একে একে বিছানা নিতে লাগল। তাঁর প্রাণান্ত চেষ্টায় ধীরে ধীরে সকলেই এক সময় সুস্থ হয়ে উঠল।

মারসেলো মালপিজির ডাক্তারি পড়ার সংকল্প

বাবা-মায়ের অবর্তমানে পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে সব দায়িত্ব চাপল এখন থেকে মারসেলোর কাঁধে। সব দিক সামাল দিতে দিতে এই সময়েই তাঁর মনে ডাক্তারিবিদ্যা শেখার সঙ্কল্প জেগে ওঠে। মা-বাবার ও পরে ভাইবোনেদের অসুস্থতার সময় তিনি উপলব্ধি করেছেন, রোগজ্বালার কাছেই মানুষ সবচেয়ে বেশি অসহায়। ডাক্তারের উপযুক্ত ফি যারা যোগাতে পারে না, রোগের হাতে তাদের প্রাণ হারানো ছাড়া উপায় থাকে না। অসুস্থ মানুষের এই অসহায়তা তাঁর সংবেদনশীল মনে আলোড়ন তুলল। সেই সময়েই মানুষের সেবায় জীবন উৎসর্গ করার বৃহত্তর লক্ষ্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি ডাক্তারি পড়ার সঙ্কল্প নিলেন এবং তেইশ বছর বয়সে ভর্তি হলেন বোলগনা বিশ্বদ্যিালয়ে চিকিৎসা বিভাগে। সহজাত প্রতিভা বলে অল্প আয়াসেই মারসেলো চিকিৎসা বিদ্যার নানা বিষয় আয়ত্ত করে ফেলতে লাগলেন।

মূল্যবান বইয়ের মধ্যে মারসেলো মালপিজির ডুব

স্বাভাবিকভাবেই তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানাটমি বিভাগের দুঁদে অধ্যাপক মাসারি। সেই সময়ে শারীরবিদ্যার ধন্বন্তরি হিসাবে মাসারির নামডাক সারা ইউরোপ জুড়ে। প্রতিভার বিচার করায়ও তিনি ছিলেন পাকা জহুরী। তাই নিজের সান্নিধ্যে রেখে নানাভাবে তিনি মারসেলোকে সাহায্য করতে লাগলেন। আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যার মূল্যবান সব বইয়ের সঙ্গে চিকিৎসাশাস্ত্রের বহু প্রাচীন পুঁথিও মাসারির ব্যক্তিগত লাইব্রেরীতে সংরক্ষিত ছিল। তিনি মারসেলোকে স্বাধীনভাবে সেই লাইব্রেরী ব্যবহার করার সুযোগ দিলেন। মারসেলো ডুবে গেলেন সে সব বইয়ের মধ্যে।

বিজ্ঞানী মারসেলো মালপিজির সাধনা

ধীরে ধীরে এক নতুন জগৎ উদ্ভাসিত হতে থাকে তাঁর সামনে। এখানেই তিনি পরিচিত হতে থাকেন ভেসালিয়াস, ফারিজিও, হারভের মতো প্রাচীন চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের সঙ্গে। তাঁদের কষ্টসাধ্য গবেষণার ইতিহাসের খুঁটিনাটি পড়ে তাঁর মনেও অঙ্কুরিত হতে থাকে সুপ্ত স্বপ্ন। তিনি স্থির করেন, পূর্বসূরীদের মতো গবেষণা করে তিনিও চিকিৎসাবিদ্যাকে নতুন নতুন আবিষ্কারে সমৃদ্ধ করবেন, মানব জাতির কল্যাণে উৎসর্গ করবেন সমস্ত সাধনা।

মারসেলো মালপিজির বিবাহ

লাইব্রেরীতে যাতায়াতের সূত্রে মারাসেলো পরিচিত হলেন মাসারির ছোট বোনের সঙ্গে। শেষ অবধি এই পরিচয় প্রেমে পরিণত হয়। ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় প্রতিভা মারসেলো, মাসারি তাঁদের বিয়েতে সানন্দে সম্মতি জানান। মারসেলোর বিবাহিত জীবন সুখের হয়েছিল এবং পরবর্তীকালে তাঁর গবেষক জীবনের সকল পর্বেই প্রেমময়ী স্ত্রী অনির্বাণ প্রেরণার প্রদীপটি নিয়ে তাঁরে পাশে থেকেছেন।

এম ডি মারসেলো মালপিজি

১৬৫৩ খ্রিস্টাব্দে পঁচিশ বছর বয়সে ডাক্তারি পাস করে মারসেলো বোলগানা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. ডি. হলেন। সেইকালে চিকিৎসাবিভাগের ছাত্রদের শেষ পরীক্ষায় একটা থিসিস জমা দেবার নিয়ম ছিল। যথারীতি মারসেলোও থিসিস জমা দিলেন। তাঁর থিসিসের বিষয় ছিল মনীষী হিপোক্রেটিসের অবদান ও পরবর্তী যুগে তাঁর প্রভাব। গ্রীক মনীষী হিপোক্রেটিসকে বলা হয় পাশ্চাত্যের চিকিৎসাবিদ্যার জনক। প্রাচীন চিকিৎসাবিদ্যায় প্রথম তিনিই বৈজ্ঞানিক চিন্তার আলোকপাত করেছিলেন।

পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে মারসেলো মালপিজি

ডাক্তার হয়ে বেরবার তিন বছরের মাথায় মাসারির তৎপরতায় মারসেলো পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা বিভাগে লেকচারার পদে কাজ পেয়ে যান। শিক্ষক হিসেবে অল্প দিনের মধ্যেই ছাত্রমহলে অসাধারণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন মারসেলো। সেই সময়ে পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতবিভাগের দায়িত্বে ছিলেন গ্যালিলিওর সাক্ষাৎ ছাত্র গিওভানি বোরেলি। গ্যালিলিওর কাছ থেকেই তিনি শিখেছিলেন নানা প্রকৃতির লেনস ঘষে মসৃণ করে অণুবীক্ষণ হিসেবে ব্যবহার করার কায়দা। এই যন্ত্রটির চিন্তা মাথায় থাকলেও তার সম্পূর্ণ রূপ গ্যালিলিও জীবিতকালে দিয়ে যেতে পারেন নি। গণিত অধ্যাপক বোরেলি গুরুর প্রারব্ধ কাজটি সম্পূর্ণ করার উদ্দেশ্যে নিভৃতে গবেষণা কাজ চালাচ্ছিলেন। সেই সন্ধিক্ষণেই মারসেলোর আগমন ঘটে পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

মারসেলো মালপিজির মাথায় অণুবীক্ষণ যন্ত্রের স্বপ্ন

দুই প্রতিভা কাছাকাছি হতে স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা পরস্পরের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন এবং লেন্সের কার্যকারিতা বিষয়ে প্রথম জানতে পারেন মারসেলো। অণুবীক্ষণ যন্ত্রের স্বপ্ন তাঁর মাথাতেও সঞ্চারিত হয়। তিনি ভাবতে থাকেন, এমন একটি যন্ত্র যদি নাগালে পাওয়া যায় তাহলে শরীরের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কোষগুলিকে সনাক্ত করে চিকিৎসা বিজ্ঞানে যুগান্তর ঘটাতে পারবেন।

শরীর গবেষণার উপায় উদ্ভাবনে মারসেলো মালপিজি

ইতিপূর্বে মাসারির লাইব্রেরিতে হারভের গবেষণাপত্র তাঁর চোখে পড়েছিল। সেখানে তিনি লক্ষ্য করেছেন, শরীরের অণু আকৃতির তন্ত্রগুলোকে পর্যবেক্ষণের অভাবে হারভেকে অনেক গুরুতর সিদ্ধান্ত অসম্পূর্ণ রাখতে হয়েছে। বিশেষ করে রক্তের সঞ্চালন আবিষ্কারে সমর্থ হয়েও কি উপায়ে সংখ্যাহীন সূক্ষ্ম প্রণালী-পথে রক্ত সংবাহিত হয় তা তিনি ধরতে পারেন নি। মারসেলোর এই চিন্তার সূত্র ধরেই চিকিৎসাবিজ্ঞানে শারীর গবেষণার উপায় উদ্ভাবনের সূচনা হল।

সূক্ষ্মতর জিনিস দেখার আনন্দে মাতলেন মারসেলো মালপিজি

মারসেলো যুক্ত হয়ে গেলেন বোরেলির সঙ্গে। লেন্স ঘষে ঘষে মসৃণ করে তা দিয়ে সূক্ষ্ম থেকে সুক্ষ্মতর জিনিস দেখার আনন্দে মেতে গেলেন দুজনে। এভাবে শরীরের বহু সূক্ষ্ম রহস্য তাঁদের চোখে ধরা পড়তে লাগল। হারভের বহু প্রশ্নেরও মীমাংসা এভাবে উদ্ধার হয়ে গেল।

গবেষণায় ডুবে থাকেন মারসেলো মালপিজি

এরপর মারসেলো ও বোরেলি যৌথভাবে হৃদপিণ্ডের পেশীর পরিচয় নির্ধারক একটি অসামান্য গবেষণাপত্র প্রকাশ করলেন। মারসেলোর জীবনে নতুন নতুন আবিষ্কারের সূত্রপাত এভাবেই ঘটল। পড়ানোর সময়টুকু বাদে দিনরাতের অধিকাংশ সময় তিনি ডুবে রইলেন গবেষণায়।

নিজ গৃহে ফিরে এলেন মারসেলো মালপিজি

কিন্তু পরিবার পরিজন থেকে দূরে, বিশেষ করে অভিভাবকহীন ভাইবোন ও প্রিয়তমা পত্নীর কথা মনে করে প্রায়ই উন্মনা হয়ে পড়তেন মারসেলো। জন্মভূমি থেকে দূরে এই একাকীত্ব তাঁকে নির্বাসনের পীড়া দিতে লাগল। শেষে এতটাই ব্যাকুল হয়ে উঠলেন যে, বছর তিনেক পরে ১৬৫৯ খ্রিস্টাব্দে পিসার কাজে ইস্তফা দিয়ে চলে এলেন বোলগনায়। সৌভাগ্যক্রমে বাড়ি ফেরার একমাসের মাথায়ই বোলগনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যানাটমির অধ্যাপকের পদে কাজও পেয়ে গেলেন।

অণুবীক্ষণ যন্ত্রের পথপ্রদর্শক মারসেলো মালপিজি

এবারে আর পিছুটানের বাধা ছিল না। তাই নিশ্চিন্ত নির্ভাবনায় তিনি পড়ানোর কাজের পাশাপাশি গবেষণার কাজ শুরু করলেন। পিসায় যে কাজ অসম্পূর্ণ রেখে এসেছিলেন, মসৃণ লেন্স ধরে ধরে শরীরের নানা কোষকলার গঠন পর্যবেক্ষণ, এখানে সেই কাজেই নিমগ্ন হলেন। মারসেলো গ্যালিলিওর দেখানো পথে মসৃণ লেন্স ধরে সুক্ষ্ম জিনিস দেখার যে কাজটা করছিলেন, তা ছিল অণুবীক্ষণ যন্ত্রের কাজ। কিন্তু সুক্ষ্ম জীবাণু পর্যবেক্ষণের উপযোগী অণুবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কার হয়েছিল তারও বহু পরে। তবে একথা সত্যি অণুবীক্ষণকে বিজ্ঞানের কাজে লাগাবার প্রথম পথ দেখিয়েছিলেন মারসেলো।

মারসেলো মালপিজির আবিষ্কার শ্বসন ক্রিয়া

একদিন লেন্স ধরে ব্যাঙের ফুসফুস দেখতে বসে একে একে Alveole বা বায়ুথলি, বায়ুথলির ঝিল্লীময় দেয়াল পরীক্ষা করতে করতে এক মারসেলো অদ্ভুত দৃশ্য আবিষ্কার করে বিস্ময়ে আনন্দে বিহ্বল হয়ে পড়লেন। তিনি দেখলেন, বায়ুথলির ঝিল্লী বেয়ে রক্তের সঙ্গে ঢুকছে অক্সিজেন আর বেরিয়ে যাচ্ছে কার্বন ডাই অক্সাইড। প্রাণীদেহের শ্বসন ক্রিয়া বা Respiration-এর এই আকস্মিক আবিষ্কার মারসেলোকে উত্তেজিত করে তোলে। তারপর থেকে তিনি ফুসফুসের টিসু নিয়ে পরীক্ষা করতে বসে ক্রমে লক্ষ্য করেন রক্তনালীর সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্ম গঠন যা ফুসফুসের বাইরে ও মূত্রথলি ও কিডনিতে প্রসারিত।

রক্ত প্রবাহ সম্পর্কে মারসেলো মালপিজির আবিষ্কার

১৬২৮ খ্রিস্টাব্দে হারভে প্রাণপাত করেও রক্তসঞ্চালনের যে কলাকৌশলের সন্ধান পান নি, মাত্র চার বছর পরে মারসেলো তা আবিষ্কার করে ফেলেন সমৃণ লেন্সের কারিকুরি মারফত। জেনে গেলেন কি প্রক্রিয়ায় রক্ত ধমনী থেকে শিরার দিকে প্রবাহিত হয়। এই বিস্ময়কর আবিষ্কারটির সংবাদ একটি চিঠি মারফত মারসেলো প্রথম জানালেন পিসায় অঙ্কের অধ্যাপক বোরেলিকে। সময়টা ১৬৬১ খ্রিস্টাব্দে। সহৃদয় বোরেলির উদ্যোগে খবরটা ইতালির বিজ্ঞানী মহলে ছড়িয়ে পড়তে দেরি হল না। আলোড়ন উঠল শারীরবিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের মধ্যে।

ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ল মারসেলো মালপিজির নাম

বোরেলির অনুরোধ পেয়ে পিসায় উপস্থিত হলেন মারসেলো। সকলের সামনে পরীক্ষা করে দেখালেন রক্ত সংবহনের অজানা সব নতুন পথ। মারসেলোর জীবনের সব চেয়ে বড় এই আবিষ্কার তাঁকে রাতারাতি বিশ্ববিজ্ঞানের ইতিহাসে স্থায়ী আসন করে দিল। সারা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ল তাঁর নাম।

মারসেলো মালপিজির দুঃখময় জীবন

নীতিহীন মানুষের নির্লজ্জ নীচতা যে কী মর্মান্তিক হতে পারে তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত বিজ্ঞানী মারসেলোর দুঃখময় জীবন। শারীর বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব আবিষ্কারের গৌরবে মারসেলো যখন যশ খ্যাতির শিখরে অধিষ্ঠিত সেই সময়েই অপ্রত্যাশিত আঘাত এল তাঁর জন্মভূমি বোলগনা থেকে। স্বার্থান্ধ ঈর্ষাকাতর প্রতিবেশীর অসূয়া অভাবিত পথে তাঁর জীবনকে বিপর্যস্ত বিধ্বস্ত করে দিল।

দুই পরিবারের বিবাদ

বোলগনায় প্রতিষ্ঠা প্রতিপত্তির সূত্রে অত্যন্ত প্রভাবশালী ছিল দুটি পরিবার – মালপিজি ও বারাগলিয়। একটি সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে এই দুই পরিবারের বিবাদ গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত। আদালতের রায়ে সেই সম্পত্তির মালিকানা বর্তেছিল মালপিজিদের হাতে। মামলা নিষ্পত্তি হলেও দুই পরিবারের বিবাদ কিন্তু ধূমায়িতই ছিল। সম্পত্তি হারানোর প্রতিহিংসায় বারাগলিয়রা চরম শত্রুতা সাধনের সুযোগের অপেক্ষায় দিন গুণছিল।

মারসেলো মালপিজির বিরুদ্ধে অভিযোগ

মালপিজি পরিবারের সন্তান মারসেলোর খ্যাতি যখন বোলগনা শহরের ঘরে ঘরে পৌঁছে গেল, সেই সময়ে পুরনো প্রতিহিংসার জের টেনে সক্রিয় হয়ে উঠল দুষ্কৃতিরা। তারা কৌশলে অপপ্রচারে নেমে সারা শহরে মারসেলোর নামে কুৎসা ছড়িয়ে দিতে লাগল। শহরের মানুষ জেনে গেল বিজ্ঞানীর ছদ্মবেশে মারসেলো একজন ঠগ জোচ্চোর ছাড়া কিছু নয়। অন্য এক হতভাগ্য বিজ্ঞানীর গবেষণা চুরি করে নিজে তার সুখ্যাতি আত্মসাৎ করেছে। বারাগলিয়রা এতটাই বলে বেড়াল যে দরকার হলে তারা এই ঘৃণ্য চৌর্যের প্রমাণ দাখিল করতে প্রস্তুত। মিথ্যা রটনা হলেও শহরের মানুষ কিন্তু অবিশ্বাস করল না। তারা বারাগলিয়দের সুরে গলা মিলিয়ে ধিক্কার দিতে লাগল মারসেলোকে।

গৃহবন্দী মারসেলো মালপিজি

ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ছাড়া একে আর কী বলা যায়। সমস্ত ঘটনাই মারসেলোর কানে পৌঁছল। কিন্তু এই হীন চক্রান্তের জবাব না দিয়ে নীরব থাকাই সমীচীন মনে করলেন তিনি। স্বভাব লাজুক মানুষটির এই নীরবতাই শত্রুপক্ষের মিথ্যা রটনাকে সত্য করে তুলল। কুৎসা অপবাদ লোকমুখে আরো জোরদার হয়ে উঠল। এই ঘটনায় মারসেলো মানসিকভাবে এতটাই ভেঙ্গে পড়লেন যে তিনি স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি হয়ে রইলেন। গুরু মাসারির বাড়িতে চার বছর আত্মগোপন করে থাকলেন।

ক্লান্ত মারসেলো মালপিজি

ততদিনে শরীরে বার্ধক্য নেমেছে। বয়স দাঁড়িয়েছে আটাত্তর। শরীরে মনে ক্লান্তি। মাসারি স্বয়ং, সেই সঙ্গে স্ত্রী প্রাণপণ চেষ্টা করেন তাঁর মনে শক্তি যোগাতে।

লন্ডনের রয়াল সোসাইটি থেকে মারসেলো মালপিজির ডাক

চার বছরের মাথায় অপ্রত্যাশিতভাবে ডাক এলো লন্ডনের রয়াল সোসাইটি থেকে। চিঠি পাঠিয়ে তাঁরা অনুরোধ জানাল, তাঁর আবিষ্কৃত রক্ত বহন সংক্রান্ত বিষয়টি তাদের পত্রিকায় বিশদভাবে তুলে ধরার জন্য। চিঠি পেয়ে জড়তা ভেঙ্গে আবার জেগে ওঠেন হতভাগ্য গবেষক বিজ্ঞানী মারসেলো। অনতিবিলম্বে তাঁর গবেষণার বিষয় প্রবন্ধের আকারে পাঠিয়ে দিলেন রয়াল সোসাইটিতে। সেই প্রবন্ধ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই ইংল্যান্ড-এর বিজ্ঞানী মহলে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হল

মারসেলো মালপিজির প্রবন্ধ পাঠে অভিভূত রবার্ট হুক

সেই সময় নিজের হাতে অণুবীক্ষণ বানিয়ে কিছু কিছু কাজ করছিলেন বিজ্ঞানী রবার্ট হুক। তিনি আবার সোসাইটির একজন গণ্যমান্য সদস্য। মারসেলোর প্রবন্ধ পাঠ করে অভিভূত হলেন তিনি। বললেন, এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে বিজ্ঞানের জগতে এক সুদূরপ্রসারী পথ খুলে দেবে। পঞ্চমুখে প্রশংসা করে তিনি চিঠি লিখে অভিনন্দন জানালেন মারসেলোকে।

গবেষণার টেবিলে মারসেলো মালপিজি

রবার্ট হুকের পত্র লোকলজ্জায় মুহ্যমান মারসেলোর জীবনে জীবনদায়ী টনিকের কাজ করে। সমস্ত গ্লানি সরিয়ে ফেলে তিনি আবার নতুন প্রাণশক্তিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। দীর্ঘ চার বছর পরে আবার এসে বসেন গবেষণার টেবিলে।

মারসেলো মালপিজির গবেষণার স্বীকৃতি

১৬৬৮ খ্রিস্টাব্দে মারসেলোর গবেষণাকে প্রথম স্বীকৃতি জানালো রয়াল সোসাইটি। লন্ডন থেকে এক বার্তায় তাঁকে জানানো হল নতুন আবিষ্কারের স্বীকৃতি জানিয়ে সোসাইটি তাঁকে মাননীয় সদস্য নির্বাচিত করেছে। রয়াল সোসাইটি সেবারই সর্বপ্রথম একজন বিদেশীকে সদস্য নির্বাচিত করে সম্মান জানাল। নিঃসন্দেহে মারসেলোর জীবনে এ এক গৌরবময় ঘটনা। এরপর থেকে দিনে দিনে রয়াল সোসাইটির সঙ্গে মারসেলোর সম্পর্ক নিবিড়তর হয়েছে। সে সম্পর্ক তিনি অটুট রেখেছিলেন আজীবন, প্রতিটি গবেষণার বিষয়ের বিবরণ নিয়মিত তাদের পাঠিয়েছেন।

মালপিজির নল

এরপর মেরুদন্ডী প্রাণীদের গঠন ও রূপান্তর নিয়ে এক যুগান্তকারী গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেন ছিয়াশি বছরের বৃদ্ধ বিজ্ঞানী। ১৬৬৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি গুটিপোকার শ্বসনতন্ত্র, স্নায়ুতন্ত্র, পরিপাকতন্ত্র ও রেচনতন্ত্র নিয়ে দীর্ঘ পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষার ফলাফল পাঠিয়ে দেন সোসাইটিকে। এই প্রবন্ধে তিনি গুটিপোকার গঠন ও রূপান্তর আলোচনায় তুলে ধরলেন, কিভাবে ট্রাফিয়া বা রুপোলী বায়ুনল বুক ও পেট থেকে বায়ু টেনে নিয়ে শরীরের নানা অংশে ছড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে তিনি চিত্র সাহায্যে দেখিয়ে দেন, মস্তিষ্কের স্নায়ুকেন্দ্র ও উদর সম্পর্কিত স্নায়ুকান্ড এবং এর মাধ্যমে শরীরের বাইরের স্নায়ুতন্ত্রের যোগাযোগে কিভাবে শরীরের নানা অংশে স্নায়বিক শক্তি সঞ্চারিত হয়। গুটিপোকার পৌষ্টিক নলের বর্ণনার সঙ্গে excretory tubule বা সংযোগকারী নিঃসারক নলটির বিষয়ও তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করেন যা পরবর্তীকালে তাঁর নামেই চিহ্নিত করা হয় ‘মালপিজির নল’ নামে।

বিজ্ঞানী মালপিজির গবেষণার দিক পরিবর্তন

অণুবীক্ষণ যন্ত্র বাজারে চালু হবার অনেক আগেই অসাধারণ ধৈর্য, বুদ্ধি ও কঠোর পরিশ্রমে সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় মারসেলো কীটপতঙ্গের শরীরের অসংখ্য সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অংশ তুলে ধরেছেন। শারীরবিদ্যার অজানা রহস্য উদঘাটনের পরে মারসেলো তাঁর গবেষণার দিক পরিবর্তন করেন। উদ্ভিদজীবনের অজানা জগতকে তিনি গবেষণায় ধরবার চেষ্টা করেন।

মারসেলো মালপিজির প্লান্ট অ্যানাটমি বই

নানা গাছের নানা আকার আকৃতির পাতা নিয়ে চলে প্রথমে পরীক্ষা। মসৃণ লেন্সের আলোয় ধরা পড়তে থাকে নানা আকারের পাতার গঠনের বৈচিত্র্য। পাতার উপরত্বকে থাকে পত্ররন্ধ্র, যার মাধ্যমে চলে গাছের সালোকসংশ্লেষ বা নিশ্বাস-প্রশ্বাসের কাজ, সর্বপ্রথম মারসেলোই তা সনাক্ত করেন। তবে সেই সবুজ কণা, যাকে আমরা বর্তমানে ক্লোরোফিল নামে এক ডাকে চিনতে পারি, দিনের পর দিন তাঁর নিজস্ব পরকলা লেন্সের তলায় ধরেও কিন্তু মারসেলো তার পরিচয় নির্ধারণ করতে পারেন নি। তবে এই সবুজকণার দ্বারাই যে গাছ তার আহার্য প্রস্তুত করে এবং জীবনী শক্তি অটুট রাখে তা তিনি বুঝতে পারেন। এভাবে দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে তিনি লেখেন প্লান্ট অ্যানাটমি নামে একটি বই। তাঁর এই বইটিই আধুনিক উদ্ভিদবিদ্যার পথ প্রথম উন্মোচিত করে।

জীবনের জটিল রহস্যের প্রতি আকৃষ্ট মারসেলো

শরীরের রহস্য নিয়ে গবেষণা করতে করতেই জীবনের জটিল রহস্যের প্রতি আকৃষ্ট হন মারসেলো। প্রকৃতির রাজ্যে জীবনের উৎস কোথায়, কিভাবে তার বিকাশ ঘটে এই চিরন্তন প্রশ্নের সম্মুখীন হন মারসেলোই প্রথম। আধুনিক জীববিজ্ঞানীরা ডি. এন. এ-র তত্ত্ব দিয়ে জীবনের বিকাশকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু জীবনের উৎস আজও রয়েছে অধরা।

মারসেলো মালপিজির হাতে ভ্রূণ বিদ্যার গোড়াপত্তন

তিনশত বছর আগে মারসেলোও কিন্তু এই প্রশ্নের সমাধানে কম ক্লান্ত হন নি। মুরগীর ডিমে তাপ প্রয়োগ করে তিনি নিরীক্ষণ করেছেন জীবনের ক্রমবিকাশের রূপটি। তারপর ১৬৭৩ খ্রিস্টাব্দে গবেষণার ফলাফল নিয়ে মারসেলো লেখেন দুটি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ। এই প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ডিমের হলুদ অংশের অস্বচ্ছ গোল দাগগুলোই তাপ পেয়ে ক্রমশ পালক সহ মুরগীর শরীরে রূপান্তরিত হয়। ভ্রূণ ঘটিত আরও যেসব তথ্য প্রবন্ধ দুটিতে তিনি দিয়েছেন, আধুনিক জীব বিজ্ঞানীরাও তা অস্বীকার করতে পারেন নি। বস্তুতঃ মারসেলোর হাত ধরেই সেই সতেরো শতকের মধ্য পর্বে আধুনিক ভ্রূণ বিদ্যার গোড়াপত্তন হয়েছিল।

শরীরের আণুবীক্ষণিক গঠন সম্পর্কে মারসেলো মালপিজির অবদান

ভ্রূণবিদ্যার কাজ নিয়ে মগ্ন থাকার মধ্যেই মারসেলো শরীরের আণুবীক্ষণিক গঠন নিয়ে মাথা ঘামাতে থাকেন। তারপর ত্বক, জিহ্বা, যকৃৎ ও পিত্ত প্রভৃতির কাজ, মেরুদণ্ডের সংলগ্ন সুষুম্নাকাণ্ডের তত্ত্বপথ, মস্তিষ্কের ধূসর পদার্থের গঠন প্রভৃতি বিষয়ে একটার পর একটা প্রবন্ধ লিখে পাঠাতে থাকেন রয়াল সোসাইটিতে।

শত্রুপক্ষের চরম আঘাত

গগনচুম্বী খ্যাতিলাভ করলেও জন্মভূমি বোলগনার কুৎসার জ্বালা তাঁকে অহরহ দগ্ধ করতে থাকে। চরম অশান্তির জ্বালা নীরবেই সহ্য করেন, কোন প্রতিবাদের কথা মনে আসে না। এরই মধ্যে দিয়ে আসে দুর্বার শত্রুপক্ষের চরম আঘাত। বরাগলিয়দের দল মুখোশে মুখ ঢেকে একদিন তাঁর বাড়িতে ঢোকে ডাকাত হয়ে। গবেষণাগারের যন্ত্রপাতি ভেঙ্গে, গবেষণার কাগজপত্র, বই, পাণ্ডুলিপি পুড়িয়ে ধ্বংস করে আক্রোশ মিটিয়ে বিদায় নেয় তারা। আগন্তুকদের চিনতে ভুল হয় না মারসেলোর। কিন্তু এ নিয়ে, শুভানুধ্যায়ী বন্ধুদের অনুরোধ সত্ত্বেও অপরাধীদের মুখোশ খুলে দেবার চেষ্টা করেন নি।

মারসেলো মালপিজির রোমে পলায়ন

সব হারিয়েও একটিও প্রতিবাদ কোনদিন উচ্চারণ করেন নি তিনি। যা ঘটেছে তাকে মেনে নিয়ে তীব্র অভিমানে ১৬৯১ খ্রিস্টাব্দে এক গভীর রাতে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে চিরদিনের মতো জন্মভূমি পরিত্যাগ করে চলে যান রোম-এ। ডাক্তারি পাসের সার্টিফিকেটটি সঙ্গেই ছিল। তাই সম্বল করে জীবনে গবেষণার পাট চুকিয়ে বসে যান রোগীর চিকৎসা করতে।

বিজ্ঞানী মারসেলো মালপিজির মৃত্যু

তিন বছর চিকিৎসক জীবন যাপন করে রোমের মাটিতে শান্তির সন্ধান করেছেন মারসেলো। তারপর ১৬৯৪ খ্রিস্টাব্দে চিরতরে বিদায় নেন পৃথিবী থেকে।

উপসংহার :- আণুবীক্ষণিক জীববিদ্যা নিয়ে অনেক নতুন নতুন তথ্য দিয়ে গেছেন মারসেলো, যা আধুনিক বিজ্ঞান শ্রদ্ধার সঙ্গে মেনে নিয়েছে। তাঁর আবিষ্কৃত একটি স্তরের আধুনিক বিজ্ঞানীরা নামকরণ করেছেন, মালপিজিয়ান লেয়ার নামে। আবার কিডনি ও প্লীহার কিছু জটিল কণারও নামকরণ তাঁর নামে করা হয়েছে। তাঁর এক একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয় আর বিজ্ঞানীদের চমক সৃষ্টি করে। দেশ বিদেশের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীদের প্রশংসা নিয়ে তাঁর কাছে আসতে থাকে একের পর এক চিঠি।

(FAQ) চিকিৎসক মারসেলো মালপিজি সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১। মারসেলো মালপিজি কে?

মারসেলো মালপিজি ছিলেন একজন ইতালীয় চিকিৎসাবিজ্ঞানী এবং জীববিজ্ঞানী, যাকে মাইক্রোস্কোপিক শারীরবিদ্যার জনক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

২। মারসেলো মালপিজি কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেছেন?

মালপিজি ফুসফুসের অ্যালভিওলাই, কিডনির গ্লোমেরুলাস, এবং ত্বকের মালপিজি স্তর আবিষ্কার করেছেন।

৩। মালপিজি কর্পাসল কী?

এটি কিডনির একটি বিশেষ গঠন যা রক্ত পরিশোধনের জন্য দায়ী।

৪। মালপিজি কোন যন্ত্র ব্যবহার করতেন?

তিনি মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করে শারীরিক গঠন অধ্যয়ন করতেন।

৫। মারসেলো মালপিজির কাজ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

তার কাজ শারীরবিদ্যা এবং জীববিজ্ঞানের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে এবং আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেছে।

৬। মারসেলো মালপিজি কোথায় শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন?

তিনি ইউনিভার্সিটি অব বলোগনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন।

৭। মারসেলো মালপিজির নামে কী কী নামকরণ করা হয়েছে?

মালপিজি কর্পাসল এবং মালপিজি স্তর তার নামে নামকরণ করা হয়েছে।

Leave a Comment