মূল্য বিপ্লব

মূল্য বিপ্লব প্রসঙ্গে কৃষির উন্নয়নে উদ্যোগ, মূল্য বিপ্লব, ইউরোপে আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন ও তার কারণ, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, মূল্য বিপ্লবের বৈশিষ্ট্য, ইংল্যান্ডে মূল্য বিপ্লব, ইউরোপে মূল্য বিপ্লবের বৈশিষ্ট্য, মূল্য বিপ্লব সম্পর্কে বোঁদার মন্তব্য, মূল্য বিপ্লবের সাথে আভ্যন্তরিণ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের সম্পর্ক, মূল্য বিপ্লবের যুগে Enclosure System ও দ্রব্যমূল্য বিপ্লবের সদর্থক দিক সম্পর্কে জানবো।

ষোড়ষ শতকের মূল্য বিপ্লব প্রসঙ্গে মূল্য বিপ্লবের উত্স সম্পর্কে বিভিন্ন তত্ত্ব এবং ব্যাখ্যা প্রদান, ইউরোপে মূল্য বিপ্লবের বৈশিষ্ট্য, মূল্য বিপ্লব সম্পর্কে বোঁদার মন্তব্য, মূল্য বিপ্লবের কারণ ও মূল্য বিপ্লবের প্রভাব সম্পর্কে জানব।

Table of Contents

মূল্য বিপ্লব

ঐতিহাসিক ঘটনামূল্য বিপ্লব
সময়কালষোড়শ-সপ্তদশ শতক
প্রধান কারণমুদ্রাস্ফীতি
Enclosure Systemইংল্যান্ড
নব্য মধ্যবিত্তGentry শ্রেণি
মূল্য বিপ্লব

ভূমিকা :- ষোড়শ শতকে ইউরোপ-এর জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। এই বৃদ্ধির মূলে ছিল আলোচ্য পর্বের শান্তি ও শৃঙ্খলা। এই যুগে কোনো যুদ্ধবিগ্রহ ঘটে নি। এছাড়া প্লেগ বা অন্য কোনো মহামারির প্রাদুর্ভাব ঘটে নি। এর ফলশ্রুতি ছিল ব্যাপক কৃষির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন।

কৃষির উন্নয়নে উদ্যোগ

আলোচ্য পর্বে আরও বেশি জমিকে কর্ষণের উপযোগী করে তোলা হয়েছিল। বনজঙ্গল কেটে কৃষিজমিতে পরিণত করা হয়েছিল। জলাভূমি নিষ্কাশিত হয়েছিল, এমনকি পশুচারণ ক্ষেত্রগুলিও চাষের জমিতে পরিণত করা হয়েছিল। উত্তর সাগর তীরবর্তী দেশগুলিতে সমুদ্রের জলরাশি নিষ্কাশনের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল এবং বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। নেদারল্যান্ডস-এর মতো নীচু দেশগুলিতে ১৫৬৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে প্রায় ৪৪ হাজার হেক্টর জমি সমুদ্রের গ্রাস থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল।

মূল্য বিপ্লব

কিন্তু শুধুমাত্র জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি দিয়ে কৃষি উন্নয়নের ব্যাখ্যা করা যায় না। ইউরোপ কেন ব্যাপক শস্য উৎপাদনে প্রয়াসী হয়েছিল? এর মূলে অন্য যে আর্থিক প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল, তাকে অর্থনীতিবিদগণ এবং অর্থনৈতিক ইতিবৃত্তকারগণ ‘মূল্য বিপ্লব’ আখ্যা দিয়েছেন। Price Revolution ষোড়শ শতকে সংগঠিত হলেও, এর পটভূমি পঞ্চদশ শতকে তৈরি হয়েছিল।

ইউরোপে আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন

সামন্ততন্ত্র দীর্ঘদিন যাবৎ ইউরোপে আর্থসামাজিক অবস্থার স্থিতাবস্থা অক্ষুণ্ণ রাখতে সচেষ্ট হয়েছিল। কিন্তু পঞ্চদশ শতকের মধ্যভাগে ইউরোপের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নানাপ্রকার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।

ইউরোপে আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের কারণ

এই পরিবর্তনের প্রথম কারণ ছিল কনস্টানটিনোপলের পতন, যার ফলে নবজাগরণ বা রেনেসাঁস ও রেনেসাঁস প্রসূত মতবাদের উদ্ভব ও প্রসার সম্ভব হয়েছিল। পরিবর্তনের অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে জনস্ফীতি, সরবরাহর তুলনায় চাহিদা বৃদ্ধি, ভৌগোলিক আবিষ্কার, উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা, পাশ্চাত্য জগৎ কর্তৃক নতুন বাজারের সন্ধান, বাণিজ্য বিস্তার, বাণিজ্যিক পুঁজির শিল্পের পুঁজিতে রূপান্তর, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, ভারত প্রভৃতি মহাদেশ বা দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক ও অন্যান্য সম্পদ আহরণ ও শোষণ প্রভৃতি উল্লেখ করা যায়।

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি

  • (১) পঞ্চদশ শতকে দীর্ঘকালব্যাপী দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল ছিল, অতঃপর ষোড়শ শতকে তা বাড়তে শুরু করে। এর প্রায় ১০০ বছর পরে দ্রব্যমূল্য অনিশ্চিত হয়ে ওঠে, অর্থাৎ এটা কখনও বেড়েছে, কখনও কমেছে। খাদ্যশস্যের মূল্য ১৪৬০ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।
  • (২) ১৫২০ খ্রিস্টাব্দের পর এর বৃদ্ধির হার ছিল দ্রুত কিন্তু ১৬৫০-এর দশকে হল্যান্ড, বেলজিয়াম, ফ্রান্স এবং ইংল্যান্ডে মূল্যবৃদ্ধির প্রক্রিয়া অনেকটাই বন্ধ হয়ে যায়। ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দের পর স্পেন-এরও মূল্যবৃদ্ধি অনেকটাই রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছিল। এই একই পর্বে অন্যান্য পণ্যের মূল্য যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছিল কিন্তু খাদ্যশস্যের মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় এর বৃদ্ধি ছিল অপেক্ষাকৃত কম

মূল্য বিপ্লবের বৈশিষ্ট্য

আলোচ্য পর্বে চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে খাদ্যশস্যের মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছিল। এই যুগে মূল্য বিপ্লবের নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি লক্ষ্য করা যায়। যেমন –

ক. খাদ্যশস্যের মূল্যবৃদ্ধি

সাধারণভাবে এই দ্রব্যমূল্য  যাইহোক এই প্রক্রিয়ার ফলে ইউরোপের বাজারে পণ্যদ্রব্য উৎপাদনের তুলনায় অর্থের জোগান অনেক বেশি বেড়ে গেলে মুদ্রাস্ফীতি (Inflation) ঘটেছিল। এই মুদ্রাস্ফীতি ছিল দ্রব্যমূল্য বিপ্লবের প্রধান কারণ।

(খ) মুদ্রাস্ফীতি

এটা বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, খাদ্যশস্যের মূল্যের তুলনায় মুদ্রাস্ফীতির ফলে কিন্তু শিল্পজাত বা উৎপন্ন পণ্যের মূল্য  কিন্তু তেমন উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পায় নি।

(গ) খাজনার হার বৃদ্ধি

উপরোক্ত দুটি প্রক্রিয়ার ফলশ্রুতি হিসাবে খাজনার (Rent) হার বৃদ্ধি এবং খাজনার বাণিজ্যিকীকরণ (commercialisation of rent) ও ফাটকাবাজির (speculation) প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল।

(ঘ) জমির চরিত্রের রূপান্তর

এছাড়া বিক্রয়যোগ্য পণ্য হিসাবে জমির চরিত্রের রূপান্তর ঘটেছিল। ইতিপূর্বে জমি ছিল মূলত ইজারা বা পাট্টা নেওয়া ভূ-সম্পত্তি (holding)।

(ঙ) গ্ৰামীণ ভদ্র শ্রেণির উদ্ভব

পরবর্তীকালে গ্রামাঞ্চলে একটি গ্রামীণ ভদ্রশ্রেণির উদ্ভব হয়। এরাই জমির মালিকানার সিংহভাগ অর্জন করে। এরাই ইংল্যান্ডে Gentry রূপে পরিচিত। বিষয়টির ইতিবৃত্তকার ইমানুয়েল ল্য রয় লাদুরি (Emmanuel Le Roy Ladurie) তাঁর গবেষণায় বিশ্লেষণ করেছেন।

ইংল্যান্ডে মূল্য বিপ্লব

  • (১) বস্তুত ষোড়শ শতকে ইউরোপে দ্রব্য মূল্যের বিস্ফোরণ ঘটার পূর্বেই ইংল্যান্ডে তার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছিল। ১৪৮৫ খ্রিস্টাব্দে জনস্ফীতির সঙ্গে সঙ্গে বেকারের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছিল, কারণ জমিতে আর বর্ধিত জনসংখ্যার স্থান সংকুলান হচ্ছিল না।
  • (২) ইতিমধ্যে অষ্টম হেনরির আমলে ইংল্যান্ডে মঠগুলির বিলোপসাধনের ফলে চার্চের সাহায্য বঞ্চিত দরিদ্র মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছিল।
  • (৩) মঠগুলির ধনসম্পত্তি জেন্ট্রির করায়ত্তে আসে কিন্তু বাজারে এই বিপুল পরিমাণ ধনসম্পদ আগমনের ফলে মুদ্রাস্ফীতি প্রকট হয়ে ওঠে এবং অস্বাভাবিক রকম মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। এটাই ছিল Price Revolution- এর অন্যতম কারণ।

মূল্য বিপ্লব সম্পর্কে G. R. Elton এর মন্তব্য

ইংরেজ ঐতিহাসিক G. R. Elton Price Revolution-এর কারণ হিসাবে মুদ্রাস্ফীতি, মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্যশস্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রভৃতি কারণ উল্লেখ করেছেন। একটি পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ষোড়শ শতকের শেষ দশকে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি ঘটেছে প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাংশ হারে। ঐতিহাসিক হন ক্লাথজের মতে মূল্য বিপ্লবের ব্যঞ্জনা ছিল বদ্ধ অর্থনীতির ভাঙন এবং অর্থনীতির সম্প্রসারণ। এর সুফল আরও কিছুকাল পরে অনুভূত হয়েছিল।

ইউরোপে মূল্য বিপ্লবের বৈশিষ্ট্য

  • (১) ইংল্যান্ডের মূল্য বিপ্লবের বৈশিষ্ট্যগুলি ইউরোপের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এখানেও মূল্য বিপ্লবের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল খাদ্যশস্যের মূল্যবৃদ্ধি। ষোড়শ শতকে ইউরোপে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও দুর্ভিক্ষের প্রভাব অনুভূত হয়েছিল কৃষিজাত পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে।
  • (২) এটা লক্ষণীয় যে কৃষিজাত পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পেলেও এর ফলে কৃষকরা বিশেষভাবে লাভবান হয় নি। অর্থাৎ তারা এই পণ্যের উপযুক্ত মূল্য পায়নি। মূল্য না পাওয়ার অন্যতম কারণ ছিল কৃষি উৎপাদনের স্বল্পহার।
  • (৩) এই প্রসঙ্গে আরও লক্ষণীয় আলোচ্য পর্বে জমিতে নিযুক্ত মানুষের সংখ্যা নেহাত কম ছিল না, কিন্তু তারা এই মূল্যবৃদ্ধির ফলে উপকৃত হয় নি।

মূল্য বিপ্লব সম্পর্কে বোঁদার মন্তব্য

ফরাসি দার্শনিক তথা চিন্তাবিদ জাঁ বোঁদার মতে, পণ্যদ্রব্য উৎপাদন এবং দেশের সঞ্চিত অর্থ বা সম্পদ এই দুই-এর অসামঞ্জস্য দেখা দিলে মূল্য বিপ্লব ঘটে।

মূল্য বিপ্লবের সাথে আভ্যন্তরিণ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের সম্পর্ক

ইংরেজ ঐতিহাসিক জি. আর. এলটন (G. R. Elton) মূল্যবৃদ্ধির আরও একটি কারণ আলোচনা করতে গিয়ে এই প্রক্রিয়ার ওপর অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের তেজি ও মন্দার প্রভাবের কথা বলেছেন।

কৃষির উন্নয়নে নতুন পদ্ধতি অনুসরণ

  • (১) একথা অনস্বীকার্য যে ১৪৬০-১৬২০ খ্রিস্টাব্দের পর্বে ইউরোপের জনসংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল, ফলে জমির ওপর লোকসংখ্যার চাপ বৃদ্ধি পেয়েছিল। কৃষি উৎপাদন হ্রাসপ্রাপ্ত হয়েছিল এবং কৃষিজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু একটা সময়ে এই চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালানো হয়েছিল নতুন নতুন কৃষি পদ্ধতি উদ্ভাবন এবং আরও বেশি জমি কর্ষণযোগ্য করে।
  • (২) অতএব মূল্যবৃদ্ধি শুধুমাত্র উৎপাদন ঘাটতির সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল না। বস্তুত এই প্রক্রিয়ার পশ্চাতে বহু বিচিত্র কারণ লক্ষ্য করা যায়। নেদারল্যান্ডস ও ইংল্যান্ডে চাষবাসের উন্নতির জন্য নতুন নতুন পদ্ধতি অনুসৃত হয়েছিল। এই সব পদ্ধতি মোটামুটিভাবে সাফল্য অর্জন করেছিল।

মূল্যবৃদ্ধি আগামীদিনের বিপ্লবাত্মক ইঙ্গিত

ইংল্যান্ড সহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে এই মূল্যবৃদ্ধি আগামীদিনের বিপ্লবাত্মক পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে এনেছিল। এই সমস্ত দেশে বাণিজ্যের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। বাণিজ্যিক দিক থেকে যা লাভজনক এমন সব কৃষিজাত পণ্যের চাষবাস শুরু হয়েছিল এই দেশগুলিতে। প্রসঙ্গত তামাক, তুলা, ইক্ষু, নীল, চা, কফি প্রভৃতির কথা বলা যায়। পরবর্তীকালে উপনিবেশসমূহ এই পণ্য গুলির চাষবাসের লাভজনক ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

মূল্য বিপ্লবের যুগে Enclosure System

ইংল্যান্ডে চাষবাসের ক্ষেত্রে এই যুগেই Enclosure System-এর উদ্ভব ঘটেছিল। যেখানে নব্য Gentry শ্রেণি তাদের সুবিধামতো বিশাল জমি বেড়া দিয়ে ঘিরে ছোটো কৃষকের জমিকে উল ও অন্যান্য লাভজনক চাষের ক্ষেত্রে রূপান্তরিত করেছিল।

দ্রব্যমূল্য বিপ্লবের সদর্থক দিক

  • (১) এই প্রসঙ্গে দ্রব্যমূল্য বিপ্লবের আরও কয়েকটি সদর্থক দিক উল্লেখ করা যায়। এই যুগে একদিকে যেমন মাহিনা ও ভাড়ার তুলনায় মূল্যবৃদ্ধি অনেক বেশি ঘটেছিল, অন্যদিকে এটা অনস্বীকার্য যে, এর ফলে আর্থিক উন্নয়নের পথ প্রশস্ত হয়েছিল।
  • (২) সবসময় চাহিদার তুলনায় জোগান কম হত বলেই মূল্যবৃদ্ধি ঘটত এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। আলোচ্য পর্বে শিল্প ও কৃষিতে নিত্য নতুন উদ্ভাবন ও উৎপাদন পদ্ধতি অনুসৃত হচ্ছিল। এর ফলে উৎপাদনের খরচ বেড়ে যাচ্ছিল। এটাও মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
  • (৩) যাইহোক এটা অনস্বীকার্য যে এর ফলে আগামী দিনে শিল্পের মুনাফার মাত্রা যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছিল। এটা উদ্যোগপতিদের আরও নতুন নতুন শিল্পে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করেছিল। নতুন শিল্প গড়ে ওঠায় কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছিল।
  • (৪) বলাবাহুল্য এই প্রক্রিয়া শিল্পে পুঁজিবাদী বিকাশকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। কিন্তু মূল্য বিপ্লবের পর্বে শিল্পোৎপাদন তেমনভাবে বৃদ্ধি পায় নি, বরং উপযুক্ত মূল্য না পাওয়ায় শিল্পে একপ্রকার মন্দা এসে গিয়েছিল।

উপসংহার :- এই অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ার অন্য ফলাফল লক্ষ্য করা যায় ইংল্যান্ড ও অন্যান্য কয়েকটি প্রোটেস্ট্যান্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রে। সেখানে শাসকশ্রেণি রোমান ক্যাথলিক মঠসমূহের বিপুল পরিমাণ জমি ও অন্যান্য মূল্যবান স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি করায়ত্ত করে নব্য মধ্যবিত্ত বা Gentry শ্রেণির নিকট বিক্রয় করে। বলাবাহুল্য এর ফলে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় শ্রেণিই উপকৃত হয়েছিল।

(FAQ) মূল্য বিপ্লব সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. ইউরোপে মূল্য বিপ্লব সংঘটিত হয় কখন?

ষোড়শ-সপ্তদশ শতকে।

২. দ্রব্যমূল্য বিপ্লবের প্রধান কারণ কি?

মুদ্রাস্ফীতি।

৩. চাষবাসের ক্ষেত্রে Enclosure System-এর উদ্ভব ঘটেছিল কোথায়?

ইংল্যান্ডে।

৪. নব্য মধ্যবিত্তরা কি নামে পরিচিত ছিল?

Gentry শ্রেণি।

অন্যান্য ঐতিহাসিক চরিত্রগুলি

    Leave a Comment