দেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদার তুলনায় কম হওয়ায় ভর্তি অনেকটা পরিশ্রমের। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর অনেকেরই প্রথম লক্ষ্য থাকে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া। এ জন্য অনেক পড়তে হয় মেধাবীদের। শিক্ষার্থীভেদে তাদের চ্যালেঞ্জেও ভিন্নতা থাকে। ভর্তির জন্য আলাদা আলাদা ধরনের একাধিক পরীক্ষা দেওয়া হয়। কিন্তু যথেষ্ট পরিকল্পনা ও মানসিক প্রস্তুতি না থাকায় পরীক্ষার পূর্বপ্রস্তুতি থাকার পরও ভালো করা যায় না ভর্তি পরীক্ষায়। তবে পরীক্ষাভীতি কাটিয়ে ওঠা এবং সময় ব্যবস্থা করে মানসিক প্রস্তুতি ভালো করার জন্য ভালো উপায় হচ্ছে নিয়মিত মডেল টেস্ট দেওয়া।
উচ্চতর গণিত
উচ্চতর গণিত বিষয়ের জন্য শুরু থেকেই মূল বই সেট করে নিতে হবে। একাধিক বইয়ের পেছনে না দৌড়ে, একটি বই পুরোপুরি ভালোভাবে পড়া বেশি কার্যকর। গণিতের ক্ষেত্রে প্রতি অধ্যায়ের সব কনসেপ্ট ভালোভাবে শেখার পর অনুশীলনীর সব প্রশ্ন নিজে সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে। সমাধান বই ব্যবহার করলে স্টুডেন্টদের চিন্তার দক্ষতা কমে যায়। গণিতে ত্রিকোণমিতি ও ক্যালকুলাস খুব গুরুত্ব দিতে হবে। জ্যামিতির সমস্যাগুলো চিত্র ব্যবহার করে সমাধান করাও গুরুত্বপূর্ণ। অনুশীলনের ক্ষেত্রে মূল বই দেখা বুদ্ধিমানের কাজ।
পদার্থবিজ্ঞানের প্রস্তুতি
পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভালো প্রস্তুতি নিলে ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করা যায়। এ জন্য বিগত বছর ও বোর্ড বইয়ের অনুশীলনমূলক গাণিতিক সমস্যা ব্যাখ্যাসহ বুঝে বুঝে পড়তে হবে। এমসিকিউতে ভালো করতে কৌশলগত ব্যাখ্যাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়া দরকার। সূত্র মুখস্থ না করে গাণিতিক সমস্যা অনুশীলনের মাধ্যমে সমাধানের উপায় মনে রাখতে পারলে ভালো। বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ের থিওরি সম্পর্কে পূর্ণ ও স্পষ্ট ধারণা থাকা চাই।
রসায়নের প্রস্তুতি
বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি সহজ হচ্ছে রসায়ন বিষয়ের প্রশ্ন। মূল বই থেকে ব্যাখ্যামূলক তথ্য উপস্থাপন সহ সাধারণ গাণিতিক সমস্যাগুলো চর্চার মাধ্যমে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। বিভিন্ন ব্যাপারে ব্যতিক্রমী নিয়মাবলি ভালো করে পড়তে হবে রসায়নে ভালো করার জন্য।
কোচিং করা কি জরুরি
অ্যাডমিশন প্রস্তুতির জন্য নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষার জন্য কোচিং গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ক্লাসের চেয়ে পরীক্ষা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত কোয়ালিটি প্রশ্নে অফলাইনে পরীক্ষা দিয়ে নিজের প্রস্তুতি যাচাই ও ভুলগুলো চিহ্নিত করা দরকার।
বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় মূলত ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ ও ইংরেজি বিষয়ে প্রশ্ন হয়ে থাকে। ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও ম্যাথের জন্য প্রথমে মূল বইয়ের কনসেপ্ট ভালোমতো বুঝতে হবে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন কন্সেপ্টচুয়াল প্রশ্ন সমাধান করা যায়, তেমন ম্যাথমেটিক্যাল প্রবলেম সল্ভ করাও সুবিধাজনক।
লিখিত পরীক্ষা
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের আসন নিশ্চিতের জন্য ভর্তি পরীক্ষা, অর্থাৎ লিখিত পরীক্ষার প্রধান বিষয় হচ্ছে প্রশ্নপত্রের নিচে নির্ধারিত বক্সের ভেতর উত্তর করতে হয়। এ জন্য প্রথম থেকেই অল্প জায়গার মধ্যে গণিত, পদার্থ ও রসায়ন বিষয়ের সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা রাখতে হবে। আবার সময়ের বিষয়ও মনে রাখা জরুরি। কারণ, একই পরীক্ষা যা বোর্ড পরীক্ষায় বিস্তারিত এবং বড় করে উত্তর দিতে হতো, অল্প সময়ের মধ্যে উত্তর করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। মনে রাখতে হবে সময় খুব কম।