২০২৪ সালে আবাস যোজনায় কারা ঘর পাবে, আবাস যোজনা ঘরের লিস্ট, আবাস যোজনার টাকা কবে ঢুকবে এ নিয়ে বড় ঘোষণা রাজ্যের মুখ্য মন্ত্রী মমতার পাকা বাড়ি থাকলেও মিলবে আবাস যোজনার টাকা।
বড় ঘোষণা মমতার পাকা বাড়ি থাকলেও মিলবে আবাস যোজনার টাকা
Bangla Awas Yojana Survey
একের পর এক নিয়ম বদলে আবাস যোজনার কাজে সমস্যা জেলার আবাস যোজনার উপভোক্তাদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা নিয়ে প্রশাসন কার্যত হিমশিম খাচ্ছে। নিয়মের বারবার পরিবর্তন তালিকা তৈরির কাজকে জটিল করে তুলছে। ফলে কাজ কবে শেষ হবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে প্রশাসনের একাংশে। তার ওপর ১১ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ, যা নিয়েও চিন্তিত জেলা প্রশাসন। কারণ, ব্লক প্রশাসনের কর্মীরাই এই দুটি কাজের দায়িত্বে রয়েছেন এবং তাঁরা আবাসের কাজে এতই ব্যস্ত যে, ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ ঠিকমতো করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
কর্মীদের নাজেহাল অবস্থা
জেলার বহু ব্লকে নিযুক্ত কর্মীরা জানিয়েছেন যে, তাঁদের জন্য আবাস যোজনার কাজ অত্যন্ত চাপের হয়ে উঠেছে। কিন্তু হাওড়ার জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি এই বক্তব্য মানতে রাজি নন। তাঁর মতে, জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় ২০ অক্টোবর থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল।
আবাস প্রকল্পের টাকার উৎস
এই আবাস প্রকল্পের অর্থ আসছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। ২০২২ সালে যে উপভোক্তাদের নাম আবাস প্রকল্পের তালিকায় ছিল, টাকার জন্য অপেক্ষা করতে করতে তাঁদের অনেকেই নিজেদের পাকা বাড়ি তৈরি করে ফেলেছেন। ফলে, সেই সব নাম বাদ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
প্রথম পর্যায়ের সমীক্ষা ও বাদ দেওয়া নাম
প্রথম পর্যায়ে সমীক্ষা চলে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে। জেলা প্রশাসনকে বলা হয়, যাঁদের ইটের দেওয়ালের বাড়ি রয়েছে, তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিতে। এই সমীক্ষার পরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি ব্লকে গড়ে ৫০ শতাংশ উপভোক্তার নাম তালিকা থেকে বাদ যায়।
দ্বিতীয় নির্দেশিকায় ছাদ ও টালি-বিচারে বাদ দেওয়া নাম
৩০ অক্টোবর ছিল তালিকা তৈরির শেষ দিন। কিন্তু তার আগে নবান্ন থেকে নির্দেশ আসে যে, শুধু ইটের দেওয়ালের বাড়ি থাকলেই নাম বাদ দেওয়া যাবে না; ছাদ রয়েছে কি না, তাও দেখতে হবে। অর্থাৎ, ঢালাই ছাদ থাকলে তবেই নাম বাদ দেওয়া যাবে। অন্যদিকে, টালি বা টিনের ছাউনি থাকলে তালিকায় নাম রাখা হবে। ফলে, নতুন করে সমীক্ষা শুরু করতে হয় এবং বাদ পড়া নামগুলো পুনরায় যাচাই করতে হয়।
তৃতীয় নির্দেশিকায় উল্লেখ ঋণ নিয়ে বাড়ি তৈরি হলেও সহায়তা দেওয়া হবে
সাম্প্রতিক নির্দেশে বলা হয়েছে যে, ২০২২ সালের তালিকায় থাকা উপভোক্তা যাঁরা ঋণ নিয়ে বাড়ি তৈরি করেছেন, তাঁরাও প্রকল্পের অর্থ পাবেন। ফলে, ব্লক প্রশাসনের কর্মীরা আবার মাঠে নেমেছেন। তাঁরা যাচাই করছেন, ছাদযুক্ত পাকা বাড়ির মালিকেরা ঋণ নিয়ে বাড়ি করেছেন কি না।
সময়ক্ষেপণ ও বিভ্রান্তি
প্রশাসনের একাংশের মতে, নিয়মের পুনঃপুন বদলের ফলে ব্লক প্রশাসনের কর্মীরা তালিকা তৈরিতে প্রচুর সময় ব্যয় করছেন। প্রত্যেক ব্লকে প্রায় ১০ হাজার উপভোক্তার নাম আছে। প্রতিবার নতুন সমীক্ষা চালাতে গিয়ে সময় বাড়ছে এবং বাসিন্দাদের মধ্যেও বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। এদিকে, তালিকা তৈরির কাজের কারণে ভূমি, প্রাণিসম্পদ, শিক্ষা-সহ বিভিন্ন দফতরের কাজও ব্যাহত হচ্ছে। ব্লকের নিজস্ব কাজও প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে।
এইভাবে, আবাস যোজনার তালিকা তৈরিতে বারবার নিয়ম বদলের কারণে জটিলতা তৈরি হচ্ছে, যা জেলা প্রশাসনের সামগ্রিক কার্যক্রমকেও প্রভাবিত করছে।