একজন বিশিষ্ট ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও নারী অধিকার আন্দোলনের পথিকৃৎ ছিলেন বাসন্তী দেবী (১৮৮০–১৯৭৪)। তিনি ছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের স্ত্রী এবং চিত্রলেখা নামে পরিচিত এক বিশিষ্ট সমাজকর্মী। ব্রিটিশবিরোধী অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে তিনি নারীদের রাজনীতিতে যুক্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯২১ সালে কলকাতায় মহিলা স্বরাজ সংঘ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বাসন্তী দেবী ছিলেন ভারতীয় নারীদের রাজনৈতিক ও সামাজিক জাগরণের এক অনন্য প্রতীক।
স্বাধীনতা সংগ্রামী বাসন্তী দেবী
ঐতিহাসিক চরিত্র | বাসন্তী দেবী |
জন্ম | ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দ |
পরিচিতি | স্বাধীনতা সংগ্রামী ও সমাজসেবিকা |
স্বামী | চিত্তরঞ্জন দাস (দেশবন্ধু) |
রাজনৈতিক অংশগ্রহণ | অসহযোগ আন্দোলন, স্বরাজ আন্দোলন |
গুরুত্বপূর্ণ অবদান | মহিলা স্বরাজ সংঘ গঠন, নারীদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করা |
উল্লেখযোগ্য ঘটনা | ১৯২১ সালে গ্রেফতার হওয়া – যা ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে নারীদের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করে |
প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান | বাসন্তী দেবী কলেজ (কলকাতা) |
আদর্শ | গান্ধীয় আদর্শ, নারী জাগরণ |
কৃতিত্ব | প্রথম মহিলা যিনি রাজনীতিক কারণে ব্রিটিশ পুলিশের দ্বারা গ্রেফতার হন |
উত্তরাধিকার | ভারতীয় নারী আন্দোলন ও শিক্ষার অগ্রগতি |
মৃত্যু | ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দ |
বাসন্তী দেবী
ভূমিকা :- ভারত-এর স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে কিছু নারীর অবদান অনন্য ও গৌরবময়, যাঁদের মধ্যে বাসন্তী দেবী অন্যতম। তিনি শুধু দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের স্ত্রী হিসেবে পরিচিত ছিলেন না, বরং নিজস্ব সাহস, দূরদৃষ্টি ও দেশপ্রেমের জন্য ইতিহাসে স্বতন্ত্র স্থান করে নিয়েছিলেন। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ, বিশেষ করে অসহযোগ আন্দোলনে নারীদের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা, তাঁকে একজন পথপ্রদর্শক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। বাসন্তী দেবী নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও সমাজসেবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। তাঁর নেতৃত্বে গঠিত মহিলা স্বরাজ সংঘ নারীদের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনা সৃষ্টি করে। তিনি ছিলেন এমন এক নারী, যিনি ব্রিটিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাতে দ্বিধা করেন নি। তাঁর জীবন ও সংগ্রাম আজও ভারতীয় সমাজে নারীদের প্রেরণার উৎস।
বাসন্তী দেবীর জন্ম
১৮৮০ সালে বাসন্তী দেবী জন্মগ্রহণ করেছিলেন কলকাতায়। পৈতৃক দেশ তাঁর ঢাকা জেলার বিক্রমপুর পরগনার মধ্যে নওগাঁও গ্রামে।
সংগ্রামী বাসন্তী দেবীর পিতামাতা
পিতা বরদানাথ হালদার ও মাতা হয়িসুন্দরী দেবীর সঙ্গে ছোটবেলায় তিনি আসামেই থাকতেন। বরদানাথ হালদার আসামের বিজনী স্টেটের দেওয়ান ছিলেন।
বাসন্তী দেবীর বিবাহ
১৮৯৭ সালে ৩রা ডিসেম্বর তারিখে বাসন্তী দেবীর বিবাহ হয়েছিল বাইশ বছরের যুবক চিত্তরঞ্জন দাশের সঙ্গে। শ্বশুরবাড়ী ছিল ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের মধ্যে তেলিরবাগ গ্রামে। সে ছিল এক বিবাট পরিবার।
স্বামীর সান্নিধ্যে বাসন্তী দেবীর শিক্ষা
তিনি দেখেন শ্বশুর বাড়ির সকলেই উচ্চশিক্ষিত। সেই উচ্চশিক্ষার পরিবেশের মধ্যে থেকে চিত্তরঞ্জনের কাছেই তিনি শিক্ষা পেতে লাগলেন। শুধু লেখাপড়া নয়, রাজনৈতিক শিক্ষাও। পববর্তীকালে স্বামীর কর্মজীবনের প্রত্যেকটি দুর্বহ দায়িত্বে অংশ গ্রহণ করতে তিনি সর্বাগ্রে এগিয়ে এসে দাঁড়িয়েছেন।
চিত্তরঞ্জন দাশের সংকল্প
১৯২০ সালে যখন দেশবন্ধু নাগপুর কংগ্রেসে ঘোষণা করে এলেন যে, তিনি তাঁর বিরাট ব্যারিস্টারী ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে অসহযোগ আন্দোলন-এ যোগদান করবেন তখন সকলে স্তম্ভিত হয়ে যায়। বাংলাদেশ-এ তাঁর সমস্ত আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব তাঁকে এই বলে বাধা দিতে লাগলেন যে, মাসিক অন্ততঃ পঞ্চাশ হাজার টাকার এই আয় ছেড়ে দিয়ে একেবারে রিক্ত হয়ে যাওয়া তাঁর উচিত নয়। এই বিরাট সংসার কি করে চলবে? তা ছাড়া কত দুঃখী দরিদ্র, অনাথ-আতুরের সেবা ও উপকার করছেন তিনি, সেটাও যে বন্ধ হয়ে যাবে, তাদেরই বা কী গতি হবে?
স্বামীর সংকল্পে বাসন্তী দেবীর সমর্থন
যখন সকলে মিলে দেশবন্ধুকে এইভাবে বাধা দিতে লাগলেন তখন তিনি কেমন যেন উদ্ভ্রান্ত হয়ে গেলেন। এক এক বার ভাবলেন, সব ছেডে বিবাগী হয়ে তিনি বেরিয়ে যাবেন। তাঁর এই প্রবল মানসিক দ্বন্দের সময় বাসন্তী দেবী সামনে এসে দাঁড়িয়ে তাঁকে বাঁচিয়ে দিলেন। বাসন্তী দেবী তাঁকে বললেন, “অর্থকে পৃথিবীর বড় সম্পদ বলে আমি মনে করি না। তোমার এই সংকল্পে আমিও তোমার পাশেই রয়েছি।” ভোগ-ঐশ্বর্যপূর্ণ সংসার একদিনের একটি সংকল্পেই যেন ফকিরের সংসারে পরিণত হল।
বাসন্তী দেবীর প্রেরণায় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন
সেদিন যদি বাসন্তী দেবী দেশবন্ধুর পশ্চাতে না থাকতেন এবং সকলের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজে একা স্বামীকে এভাবে প্রেরণা দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে উৎসাহ না দিতেন তবে তিনি আজ ‘দেশবন্ধু’ হতে পারতেন কিনা কে জানে!
কঠিন দায়িত্বে বাসন্তী দেবী
অসহযোগ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়লেন দেশবন্ধু। ১৯২১ সালে বাংলার মেয়েরা তখনও অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন নাই। চরকার প্রচলনও খুব কম। বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের সভাপতি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন স্ত্রীকে বললেন, তাঁদের চরকা প্রচলনের কাজ করতে হবে এবং মেয়েদের সাহস দিয়ে কাজে নামাতে হবে। তখনকার দিনে মেয়েরা বড় একটা বাড়ীর বাইরে যেতেন না – রাজনৈতিক কাজ করা তো খুবই কঠিন ছিল। কিন্তু এই কঠিন দায়িত্বের ভার পড়ল বাসন্তী দেবীর উপর।
প্রিন্স-অব-ওয়েলস-এর বোম্বাই আগমন
১৯২১ সালের ১৭ই নভেম্বর প্রিন্স-অব-ওয়েলস বোম্বাই আসেন। সেদিন কংগ্রেস সমগ্র ভারতবর্ষ ব্যাপী হরতাল ঘোষণা করে। ১৮ই নভেম্বর গভর্নমেন্ট স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে বে-আইনী এবং সভাসমিতিকে রাজদ্রোহমূলক বলে ঘোষণা করে। দেশবন্ধু তার পরদিনই ১৯শে নভেম্বর বোম্বাইয়ে গান্ধীজীর কাছে গিয়ে ওয়ার্কিং কমিটি থেকে অনুমতি আনলেন গভর্নমেন্টের এই অন্যায় আইন ভাঙবার।
পুত্রের আঘাতে বিচলিত বাসন্তী দেবী
নিজের পুত্র চিররঞ্জনকে দেশবন্ধু বললেন, “নিজের ছেলেকে আগে জেলে পাঠিয়ে তবেই তো আমি অন্য ছেলেদের ডাকতে পারব।” ৬ই ডিসেম্বর চিররঞ্জন একদল স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে হরতাল ঘোষণা করতে বৌবাজারে এবং কলেজ স্কোয়ারে গেলেন। কলেজ স্কোয়ারে তাঁকে এবং আরো ২১ জনকে সেদিন পুলিস গ্রেপ্তার করে। সার্জেন্টরা চিররঞ্জনকে প্রহারে জর্জরিত করে ফেলেছিল। বাসন্তী দেবী যখন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন তিনি পুত্রের পিঠে অত্যাচারের চিহ্ন, সার্জেন্টের বুটের দাগ দেখে বিচলিত ও উদ্বেলিত হয়ে উঠলেন। চিররঞ্জনের প্রতি ছয়মাস কারাদণ্ডের আদেশ হয়।
গ্রেপ্তার বাসন্তী দেবী
তার পরদিনই ৭ই ডিসেম্বর বাসন্তী দেবী বেরিয়ে পড়লেন আইন অমান্য ও হরতাল ঘোষণা করতে। চললেন খাদি ঘাড়ে নিয়ে বড়বাজার। তাঁর সঙ্গে গেলেন তাঁর ননদ, দেশবন্ধুর সহোদরা উর্মিলা দেবী এবং নারী কর্মমন্দিরের একজন কর্মী সুনীতি দেবী। তাঁরা হরতাল ঘোষণা করবার পরই তাঁদের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
বাসন্তী দেবীর আবেদন
সংগ্রামী বাসন্তী দেবী গ্রেপ্তার হবার সঙ্গে সঙ্গে থানার সামনে জনতা ছেয়ে ফেলল। থানা থেকে তাঁদের বাইরে নিয়ে আসাই তখন অসম্ভব। গান্ধীজীর ছেলে হীরালাল ছিলেন কাছাকাছি একটা দোকানে। হীরালালকে ডাকিয়ে, তাকে দিয়ে বাসন্তী দেবী জনতাকে সরে যেতে অনুরোধ করলেন। জনতা সত্যই বাসন্তী দেবীর আবেদন মেনে নিয়ে পথ পরিষ্কার করে দিয়েছিল।
কারামুক্ত বাসন্তী দেবী
পুলিস তাদের লালবাজারে নিয়ে গেল। চাইল মুচলেকা। তাঁরা মুচলেকা দিতে অস্বীকার করলেন। তারপর রাত প্রায় ৭টায় নিয়ে গেল তাদের প্রেসিডেন্সি জেলে। তাঁরা জামীনে মুক্ত হতেও অস্বীকার করলেন। ওদিকে বড়বাজারের বিরাট জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল। সকলেই বলে, “আমরাও জেলে যাব।” দলে দলে যুবকেরা গ্রেপ্তার হতে লাগলেন। গভর্নমেন্ট রাত প্রায় ১১টায় বাসন্তী দেবীদের মুক্তি দিলেন।
বাড়ি ফিরে এলেন বাসন্তী দেবী
মুক্তি পেয়ে রাত্রি ১২টা নাগাদ যখন বাড়ী ফিরলেন তিনি দেখলেন দেশবন্ধু তখনো কাজ করছেন। স্ত্রীকে হঠাৎ সামনে দেখে বলে উঠলেন, “তুমি ফিরে এলে কেন?” “ফিরে আসব না তো এত রাতে কোথায় যাব? তারা তো রাখবে না। জেলের গেট বন্ধ করে দিয়েছে।”
স্বাধীনতা সংগ্রামী বাসন্তী দেবীর গ্রেপ্তারের প্রভাব
বাসন্তী দেবীর গ্রেপ্তারের পরই আগুন জ্বলে ওঠে সারা বাংলাদেশে। তরুণরা উত্তেজিত হয়ে দলে দলে এগিয়ে আসতে লাগলেন। মেয়েরাও সাড়া দিলেন। সেদিন বাসন্তী দেবীর গ্রেপ্তারের যে প্রভাব বাংলাদেশ দেখেছিল তার বর্ণনা হয় না। জাতির সে এক বিরাট জাগরণ।
পত্রিকা সম্পাদনায় বাসন্তী দেবী
স্বাধীনতা সংগ্রামী বাসন্তী দেবীকে গ্রেপ্তারের তিনদিন পরেই ১০ই ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় দেশবন্ধুকে। দেশবন্ধুর গ্রেপ্তারের পর ‘বাঙলার কথা’ পত্রিকা বাসন্তী দেবীকেই সম্পাদনা করতে হয়।
বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনে সভানেত্রী বাসন্তী দেবী
১৯২২ সালের এপ্রিল মাসে চট্টগ্রামে যে বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় তাতে তিনি সভানেত্রীত্ব করেন এবং দেশবন্ধুর নতুন কর্মপন্থার ইঙ্গিত দেন। দেশবন্ধু তখনো জেলে।
চিত্তরঞ্জনের প্রতিটি রাজনৈতিক কাজে জড়িত বাসন্তী দেবী
দেশবন্ধু যতদিন জীবিত ছিলেন তাঁর সঙ্গে প্রতিটি রাজনৈতিক কাজে বাসন্তী দেবী ওতপ্রোতভাবে জড়িত রইলেন।
বাসন্তী দেবীর রাজনৈতিক জীবনে ছেদ
১৯২৫ সালে ১৬ই জুন দেশবন্ধুর অকালমৃত্যু হয়। তারই একবছর পরে ১৯২৬ সালের ২৬শে জুন তাঁর একমাত্র পুত্র চিররঞ্জনের মৃত্যু হয়। এই বিপর্যয়ের পর বাসন্তী দেবী নিজেকে সকলের আড়ালে সরিয়ে নিয়ে গেলেন। তাঁর রাজনৈতিক জীবনে ছেদ পড়ে গেল।
স্বাধীনতা সংগ্রামী বাসন্তী দেবীর মৃত্যু
বাসন্তী দেবী ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৯৪ বছর। জীবনের শেষপর্যন্ত তিনি সমাজসেবা ও নারী শিক্ষার প্রসারে যুক্ত ছিলেন। তাঁর মৃত্যু ভারতীয় নারী আন্দোলনের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সমাপ্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।
উপসংহার :- বাসন্তী দেবী ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের এক সাহসী ও প্রভাবশালী নারী যোদ্ধা, যিনি শুধুমাত্র একজন দেশপ্রেমিকের স্ত্রী হিসেবে নয়, নিজ গুণে ও কর্মে ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন। নারীদের রাজনৈতিক ও সামাজিক জাগরণে তাঁর ভূমিকা ছিল অগ্রণী। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সরাসরি আন্দোলনে অংশগ্রহণ, মহিলা স্বরাজ সংঘ গঠন এবং শিক্ষার প্রসারে তাঁর অবদান ভারতীয় নারীমুক্তি আন্দোলনের পথপ্রদর্শক হয়ে উঠেছে। তাঁর জীবন আমাদের শেখায় কিভাবে নারীরা দৃঢ় সংকল্প, সাহস এবং মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে একটি জাতিকে প্রেরণা দিতে পারে। আজও বাসন্তী দেবীর আদর্শ নারী সমাজকে উদ্বুদ্ধ করে চলেছে।
(FAQ) বাসন্তী দেবী সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
বাসন্তী দেবী ছিলেন একজন বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী, সমাজসেবিকা এবং চিত্তরঞ্জন দাসের স্ত্রী। তিনি নারী জাগরণ ও স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
বাসন্তী দেবী জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে এবং মৃত্যুবরণ করেন ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে।
বাসন্তী দেবীর স্বামী ছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, যিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী ও রাজনীতিবিদ।
বাসন্তী দেবী অসহযোগ আন্দোলন, স্বরাজ আন্দোলন এবং অন্যান্য ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
বাসন্তী দেবী ‘মহিলা স্বরাজ সংঘ’ গঠন করেন এবং নারীদের রাজনৈতিক সচেতনতা ও অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত করেন। তিনি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিবাদ করেন এবং গ্রেফতার হন।
হ্যাঁ, কলকাতার একটি বিখ্যাত কলেজের নাম ‘বাসন্তী দেবী কলেজ’, যা তাঁর নামানুসারে প্রতিষ্ঠিত।
বাসন্তী দেবী নারীদের শিক্ষিত ও সচেতন করে তোলার মাধ্যমে নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ হন এবং নারী সমাজকে রাজনৈতিক আন্দোলনে যুক্ত করেন।