অটুট মনোবলের অধিকারী হবেন যেভাবে

অটুট মনোবলের অধিকারী হবেন যেভাবে

আসছে নতুন বছর। একে ঘিরে সবাই নতুন পরিকল্পনা সাজাতে শুরু করেছেন। কিন্তু আমাদের পরিকল্পনা অধিকাংশই ব্যর্থ হয়ে যায় দৃঢ় মনোবলের অভাবে। দৃঢ় মনোবল অর্জনের কৌশল নিয়ে লিখেছেন শিহাব জামান

আশাবাদী হন

আশাই জীবনকে পরিচালিত করে। আশাহীন জীবন স্রোতহীন নদীর মতো। যখন মানুষ আশা করতে পারে না তখন কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। সব পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়ে। আপনার মনে যদি পরিবর্তনের জন্য কোনো আশাই না অবশিষ্ট থাকে তাহলে কাজের অনুপ্রেরণা পাবেন কীভাবে? পরিবর্তনের জন্য আপনি যে পরিকল্পনা করেছেন সে পরিকল্পনার ওপর আপনার নিজের বিশ্বাস থাকতে হবে, আশাবাদী হতে হবে যে এই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করলে আপনি সফল হবেন। যদি আপনি আশাবাদী হতে পারেন তাহলে দৃঢ় মনোবল নিয়ে লক্ষ্য অর্জনে ধারাবাহিকতা রক্ষা করে কাজ করে যেতে পারবেন।

পরিবর্তনকে স্বাগত জানান

সৃষ্টি জগতে যারা নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পেরেছে তারাই টিকে থাকতে পেরেছে। অন্যরা ধ্বংস হয়ে গেছে। অতিকায় ও অতিশক্তিশালী ডাইনোসরও বিলুপ্ত হয়ে গেছে পরিবেশ ও পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে। বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আমাদের চারপাশ আমূল বদলে গেছে। শুধু যোগাযোগ মাধ্যম নয়, ব্যবসা- বাণিজ্যের প্রকৃতি, প্রভাব বিস্তারের পদ্ধতি সবই বদলে গেছে। এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানান। ব্যস্ততার ফলে শারীরিকভাবে দেখা সাক্ষাৎ সম্ভব না হলেও ফোনে কথা বলে অন্যের খোঁজখবর রাখুন। এতে নেটওয়ার্কিং- এর কাজটি হয়ে যাবে, তাদের ইতিবাচক কথায় আপনার মনোবলও চাঙ্গা থাকবে। একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক আপনাকে সাফল্য লাভে সাহায্য করবে।

ধৈর্য ধারণ করুন

কথায় বলে, জীবন ফুলশয্যা নয়। চলার পথে বারবার বাধা আসবে। এতে অধৈর্য হলে হবে না। তাছাড়া প্রতিটি কাজের ফল লাভের জন্য নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হয়। যে কোনো ফসল রোপণের জন্য যেমন নির্দিষ্ট সময় আছে তেমনি ফসল উত্তোলনেরও নির্দিষ্ট সময় আছে। তাই ফল লাভের জন্য পরিশ্রমের পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করতে শিখতে হবে। রণে ভঙ্গ দিলে আগের সব পরিশ্রম বৃথা হয়ে যাবে।

নেতিবাচকতা ত্যাগ করুন

নেতিবাচকতা এমন একটি ক্ষতিকর বিষয় যা আপনার সমস্ত প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিতে পারে। মনোবলকে দুর্বল করে দেয় যে বিষয়গুলো তার মধ্যে নেতিবাচকতা অন্যতম। অটুট মনোবলের অধিকারী হতে নিজের সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব ত্যাগ করে ইতিবাচক হন। যারা আপনাকে লক্ষ্য অর্জনে অনুপ্রেরণা দেয় তাদের সঙ্গে মিশুন। অন্যের ইতিবাচক মনোভাব আপনার মনোবল বৃদ্ধি করবে।

পুনঃপরিকল্পনা জারি রাখুন

আমরা অনেক সময় কাজে হাত দেওয়ার আগে যেভাবে পরিকল্পনা করি কাজে নেমে দেখতে পাই সেভাবে কাজটি করা সম্ভব নয়। তখন পরিকল্পনার পরিবর্তন করতে হয়। পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিকল্পনায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনলে কাজ করা সহজ হয়। কাজে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হয়। ফলে কাজে ধারাবাহিক উন্নতি পরিলক্ষিত হয়। এটি মনোবল দৃঢ় রেখে কাজ করতে অনুপ্রেরণা জোগায়।

জানুন কী ছাড়তে হবে

অনেক সময় চলার পথে এমন পরিস্থিতি আসে যখন দুই বা ততোধিক পছন্দের মধ্যে যে কোনো একটি বিষয়কে বেছে নিতে হয়। কারণ একাধিক বিষয়ে মনোযোগ দিলে সাফল্য লাভ করা যায় না। অর্থনীতির ভাষায় একে ‘অপরচুনিটি কস্ট’ বলে। দুই বা ততোধিক বিষয়ের মধ্যে একটি বিষয়কে বেছে নিতে হলে সেই বিষয়টি বেছে নিন যেটি আপনার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক সময় কঠিন হয়। এক্ষেত্রে পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনদের পরামর্শ নিতে পারেন।

Leave a Comment