বিপ্লবী মায়া ঘোষ ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক সাহসী ও আদর্শনিষ্ঠ নারী বিপ্লবী। তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং নারীদের স্বাধীনতা সংগ্রামে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।
মায়া ঘোষের রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড নারীমুক্তি এবং স্বদেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। তিনি গোপন বিপ্লবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থেকে বিভিন্ন আন্দোলন, প্রচার ও দেশপ্রেমমূলক কাজের নেতৃত্ব দেন। তাঁর জীবনের লক্ষ্য ছিল স্বাধীন ভারতের নির্মাণ ও সমাজে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা। তাঁর অবদান আজও ভারতের স্বাধীনতা ইতিহাসে এক অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছে।
বিপ্লবী মায়া ঘোষ
| ঐতিহাসিক চরিত্র | মায়া ঘোষ |
| জন্ম | ১৯১৫ খ্রি, দিল্লি |
| পিতা | যতীন্দ্রনাথ ঘোষ, প্রিয়ম্বদা দেবী |
| পরিচয় | ভারতীয় নারী স্বাধীনতা সংগ্রামী ও সমাজসেবী |
| অবদান | ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ, নারী সমাজকে স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করা |
| সংগঠন | বিভিন্ন গোপন বিপ্লবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন |
| উল্লেখযোগ্য দিক | নারী স্বাধীনতা আন্দোলনে পথিকৃৎ, তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার প্রতীক |
মায়া ঘোষ
ভূমিকা :- বিপ্লবী মায়া ঘোষ ছিলেন ভারত-এর স্বাধীনতা আন্দোলনের এক সাহসী ও দেশপ্রেমিক নারী যিনি ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি এমন এক সময় সমাজে সক্রিয় হয়েছিলেন, যখন নারীদের রাজনৈতিক বা বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ প্রায় অচিন্তনীয় ছিল। তবুও মায়া দেবী দৃঢ় সংকল্প ও দেশপ্রেমের অনুপ্রেরণায় বিপ্লবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ করেন। তাঁর কর্মকাণ্ড নারীদের জাগরণের পথে এক নতুন দিশা দেখিয়েছিল এবং সমাজে দেশপ্রেম, সাহস ও আত্মত্যাগের অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছিল।
মায়া ঘোষের জন্ম
গণিতের প্রসিদ্ধ অধ্যাপক ও বীজগণিত প্রণেতা কে. পি. বসুর দৌহিত্রী মায়া ঘোষ জন্মগ্রহণ করেছিলেন দিল্লীতে ১৯১৫ সালের এপ্রিল মাসে।
বিপ্লবী মায়া ঘোষের পরিবার
তাঁর মাতা প্রিয়ম্বদা দেবী ও পিতা যতীন্দ্রনাথ ঘোষ। মায়ার ছ’বছর বয়সের সময় তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়। মায়াকে মানুষ করে তোলেন তাঁর মাতামহী মেঘমালা দেবী, কে. পি. বসুর স্ত্রী।
পুলিসের নির্যাতনের স্বীকার মায়া ঘোষের পরিবার
- (১) মেঘমালা দেবীর ভাই অতুলকৃষ্ণ ঘোষ, অমরকৃষ্ণ ঘোষ বিপ্লবী নেতা যতীন্দ্রনাথ মুখার্জীর নেতৃত্বে গুপ্ত বিপ্লবী আন্দোলনের ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে যুক্ত ছিলেন। তাঁরা তখন দিদি মেঘমালা দেবীর বাড়ীতেই থাকতেন।
- (২) সেখানে তাঁদের সহকর্মী বন্ধুদের গোপন আনাগোনা ছিল। তাঁদের সকলের প্রতি এবং তাঁদের বিপ্লবী কাজের প্রতি মেঘমালা দেবীর অকুণ্ঠ সমর্থন ও সহানুভূতি ছিল। ফলে পুলিসের বহু নির্যাতন সহ্য় করতে হয়েছিল এই পরিবারকে।
দেশসেবার আকাঙ্ক্ষায় উদ্বুদ্ধ মায়া ঘোষ
মায়া তাঁর জ্ঞান হওয়া অবধি একটা বিপ্লবী আবহাওয়ার সঙ্গে পরিচিত হন। তাঁর এই মামাবাড়ীর সঙ্গে যুগান্তর দল-এর বিপ্লবী নেতা ভূপেন্দ্রকুমার দত্ত, হরিকুমার চক্রবর্তী, জীবনলাল চ্যাটার্জী, নলিনীকান্ত কর প্রমুখের ঘনিষ্ঠ সংস্রব ছিল। এঁদের সংস্পর্শে এসে, এদের বিপ্লবী জীবনের কাহিনী শুনে, এবং এঁদের ব্যক্তিত্বের প্রভাবে মায়ার মনে স্বাধীনতার স্পৃহা ও দেশসেবার আকাঙ্ক্ষা জেগে ওঠে।
বিপ্লবী মায়া ঘোষের জীবনে মাসির প্রভাব
মায়ার ছোটমাসীমা বীণাপাণি মিত্রও বিপ্লবীদের গোপনে অনেক সাহায্য করতেন। তিনি নিজে কখনো বিলিতী জিনিস ব্যবহার করতেন না এবং মায়াকেও দিতেন না।
দুই আন্দোলনের স্রোত
১৯৩০ সাল থেকে সশস্ত্র বিপ্লব ও অহিংস আইন অমান্য আন্দোলনের দুই স্রোত পাশাপাশি বয়ে চলেছিল বাংলাদেশ জুড়ে। ঐ সব বিপ্লবীরা তখন কারাপ্রাচীরের অন্তরালে।
স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেওয়ার প্রবল ইচ্ছায় মায়া ঘোষ
মায়া ঘোষ তখন স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে যে কোনো কাজ করতে প্রস্তুত। তিনি ছট্ফট্ করছিলেন, অথচ পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। ভূঃপন্দ্রকুমার দত্তের ছোট বোন স্নেহলতা দত্তও (সেন) তখন তাঁদেরই বাড়ীতে থাকতেন। তাঁরও প্রবল ইচ্ছা কাজ করবার।
বেরিয়ে পড়লেন মায়া ঘোষ
একদিন কংগ্রেস নেত্রী মোহিনী দেবী এলেন তাঁদের বাড়ীতে। জিজ্ঞেস করলেন, মায়া দেবী প্রমুখ জেলে যেতে রাজী কিনা। মায়া লাফিয়ে উঠলেন। লুকিয়ে বেরিয়ে পড়লেন তিন বন্ধু-মায়া ঘোষ, স্নেহলতা দত্ত ও দীপ্তি ঘোষ, এবং পৌঁছলেন গিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে।
লালবাজার থানায় মায়া ঘোষ
শোভাযাত্রায় যোগদান করাতে পুলিস তাঁদের নিয়ে যায় লালবাজার। পরদিন ছেলেমানুষ বলে বিচারে তাঁরা মুক্তি পান। মুক্তি পেয়ে সেদিন কী দুঃখ তাঁদের। বিপ্লবী কাজে যোগ দেবার কোনো পথই তাঁদের সামনে তখন খোলা ছিল না-বিপ্লবী দাদারা সবাই তখন জেলে। নিষ্ফল আকাঙ্ক্ষা মায়ার মনে বৃথাই কেঁদে ফিরল।
বি. এ. পাস করেন মায়া
তাঁর বাবা বিয়ের চেষ্টা করাতে মায়া করলেন অনশন। বিয়ের চেষ্টা ব্যর্থ হল। ১৯৩৬ সালে মায়া বি.এ. পাস করেন।
কংগ্রেসের মুখপত্র রূপে মন্দিরা পত্রিকা
১৯৩৮ সালে বিপ্লবী নেতারা সবাই জেল থেকে মুক্তি পান। গুপ্ত আন্দোলনের দিন তখন শেষ হয়েছে। যুগান্তর দলের নেতারা তখন গুপ্ত যুগান্তর দল ভেঙে দিয়ে কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। তাঁদেরই মুখপত্র স্বরূপ ছিল তখন মন্দিরা নামে মাসিক পত্রিকা।
পত্রিকার কাজে মায়া ঘোষ
বিপ্লবী রসিকলাল দাস মায়া ঘোষকে পরিচয় করিয়ে দিলেন মন্দিরা পত্রিকার সম্পাদিকা কমলা দাশগুপ্তের সঙ্গে। মায়া ‘মন্দিরা’র কাজ করতে থাকেন প্রাণের পরিপূর্ণ আগ্রহ ও আন্তরিকতা নিয়ে। ‘মন্দিরা’র কর্মীদের মনে তখন এই প্রেরণাই ছিল যেন ‘মন্দিরা’র কাজ স্বাধীনতা সংগ্রামের অঙ্গ।
বীরভুমে মায়া ঘোষ
১৯৩৯ সালে বেধেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ১৯৪১ সালে বাড়ীর সকলের অমতে একটি স্কুলের শিক্ষয়িত্রীর কাজ জুটিয়ে নিয়ে মায়া চলে যান বীরভূম-এর রামপুরহাটে নিজের রাজনৈতিক কর্মক্ষেত্র প্রস্তুত করতে। এবারের স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগদান তাঁকে করতেই হবে।
প্রধান শিক্ষয়িত্রী মায়া ঘোষ
তিনি ছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষয়িত্রী। স্কুলে কাজ করতে করতে তিনি বীরভূমের গ্রামের অভ্যন্তরে সম্প্রদায় নির্বিশেষে জনসাধারণের কাছে কংগ্রেসের আদর্শ প্রচার করতে থাকেন। সকলের সঙ্গেই তাঁর একটা ঘনিষ্ঠতা, একটা নিবিড় সংযোগের ফলে কর্মক্ষেত্র তৈরী হয়ে উঠল।
আদর্শবিরুদ্ধ কাজে নারাজ মায়া ঘোষ
ওদিকে মায়া ঘোষের কাছে মহকুমা শাসকের নির্দেশ এল যুদ্ধ-তহবিলে চাঁদা তোলার জন্য় স্কুলে সিনেমার টিকিট বিক্রি করে দেবার। মায়া দেবী লিখে পাঠান যুদ্ধ তহবিলের জন্য টাকা তুলে দেওয়া তাঁর আদর্শবিরুদ্ধ। তবুও চাকরী তাঁর গেল না।
কলকাতায় মায়া ঘোষ
১৯৪২ সালের আগস্ট আন্দোলনের পূর্বেই ভূপেন্দ্রকুমার দত্ত প্রমুখ নেতারা আবার কারারুদ্ধ হন। ঐ আন্দোলনের মুখে মায়া দেবী কলকাতা এলেন কমলা দাশগুপ্ত ও বীণা দাস-এর সঙ্গে আলোচনা করতে, কিভাবে আন্দোলনের কাজ করা যায়। আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয় যে, যে যার জায়গায় গিয়ে কংগ্রেসের প্রোগ্রাম অনুযায়ী আন্দোলনের কাজ করবার চেষ্টা করবেন।
জাতীয় কংগ্রেসের প্রোগ্রাম বিলি করার কাজে মায়া ঘোষ
মায়া ফিরে যান রামপুরহাটে। তাঁর বিদ্যালয়ের শিক্ষয়িত্রি প্রভাসিনী চক্রবর্তী, গুরুমা প্রমুখ তাঁর সঙ্গে সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা সিনেমা দেখতে গিয়ে বুলেটিনের মতো কংগ্রেসের প্রোগ্রাম বিলি করে এলেন।
শোভাযাত্রায় মায়া ঘোষের যোগদান
মায়া দেবী সর্বত্র ঘুরে ঘুরে আন্দোলন পরিচালনা করবার চেষ্টা করতে থাকেন। স্থানীয় কংগ্রেসের নেতারা তাঁকে সভা-শোভাযাত্রায় যোগ দিতে অনুরোধ করেন। এতদিনে মায়া ঘোষের রুদ্ধ আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হতে চলেছে। পরদিন শোভাযাত্রা যখন মায়া ঘোষের স্কুলের সামনে এসে থামল, তিনি বেরিয়ে এলেন তাতে যোগ দিতে সঙ্গে এলেন স্কুলের আরো দুজন শিক্ষয়িত্রী ঊষা মাহাডা ও মণিপ্রভা মুখার্জী।
ছেলেদের হাই-স্কুলের সামনে দিয়ে শোভাযাত্রা
শোভাযাত্রা ছেলেদের হাই-স্কুলের সামনে দিয়ে যাবার সময় তাতে যোগ দেয় এসে ছাত্রের দল। তাঁদের সঙ্গে মিলিত হলেন বীরভূমের বিখ্যাত কংগ্রেস-কর্মী লালবিহারী সিংহ ও তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যারাণী সিংহ, এলেন নীহারিকা মজুমদার।
সশস্ত্র পুলিসবাহিনী মোতায়েন
রামপুরহাটের স্কুলগুলি বন্ধ হয়ে গেল। বিরাট শোভাযাত্রা চলেছে শহরে ও গ্রামে। তাঁদের দমন করবার জন্য সেখানে আমদানি করা হয় সশস্ত্র পুলিসবাহিনী। শোভাযাত্রীদল ও সশস্ত্র বাহিনী পাশাপাশি চলতে থাকে ঐ ছোট শহরেও।
সিভিল কোর্টে মায়া ঘোষ কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলন
৩১শে আগস্ট থানা দখল করা হবে স্থির হয়। মায়া দেবী সদলবলে আদালত বন্ধ করতে চলে যান। মহকুমা-শাসক ফৌজদারী আদালত বন্ধ করে দিয়ে চলে গেলেন। মায়া ঘোষের নেতৃতে কর্মীবাহিনী দ্রুত এসে সিভিল কোর্টে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে দিলেন।
পুলিসের ঘেরাটোপে মায়া ঘোষ
ছেলের দলকে খাবার জন্য পাঠিয়ে দিয়ে মায়া ঘোষ ফৌজদারী আদালতের বারান্দায় বসে ছিলেন। পাশে বসে আছেন সাবিত্রী গান্ধী। এমন সময় সশস্ত্র পুলিসবাহিনী বন্দুক উচিয়ে এসে তাঁদের ঘিরে ফেললো।
মায়া ঘোষকে গ্রেপ্তারের আদেশ
পুলিসবাহিনীর শ্বেতাঙ্গ অফিসার মায়া ঘোষকে সেখান থেকে হটাতে না পেরে, তাঁর দৃঢ়তা দেখে চলে যায় মহকুমা শাসকের কাছ থেকে গুলী চালাবার অনুমতি চাইতে। অনুমতি মেলেনি। গ্রেপ্তারের আদেশ হয়। পুলিসবাহিনীর একজন এসে সাবিত্রী গান্ধীকে ধাক্কা দিয়ে বারান্দা থেকে নামিয়ে দেয়।
গ্রেপ্তার মায়া ঘোষ
মায়া ঘোষকে চারিদিক থেকে পুলিস ঘিরে ফেলে। দুজন লোক এমন শক্তভাবে তাঁর হাত ধরেছিল যে, অনেকদিন পর্যন্ত সেই কালসিটের কালো দাগ মিলিয়ে যায় নি। মায়া গ্রেপ্তার হলেন।
সন্ধ্যারাণী সিংহ ও সাবিত্রী গান্ধী গ্রেপ্তার
তখনো সাবিত্রী গান্ধী তেজোময়ী ভাষায় বক্তৃতা দিয়ে চলেছেন। উদ্যত বন্দুকের সামনে জনতা নির্ভীকভাবে দাঁড়িয়ে আছে। সন্ধ্যারাণী সিংহ দাঁড়ালেন এসে বন্দুকের সামনে। তিনিও গ্রেপ্তার হলেন। গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সাবিত্রী গান্ধীও।
সম্ভ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত মায়া ঘোষ
মায়া ঘোষদের নিয়ে যায় সিউডি জেলে। সাজা হয় তাঁর একবছর দশমাস সম্ভ্রম কারাদণ্ডের। ১৯৪৪ সালের জুলাই মাসে মায়া দেবী রাজসাহী জেল থেকে মুক্ত হন।
রিলিফের কাজে মায়া ঘোষ
বেরিয়ে এসেই দেখেন তিনি পঞ্চাশের মন্বন্তর-এর কালো ছায়া। রিলিফের কাজ করতে লেগে যান তিনি বীরভূমের গ্রামগুলির মধ্যে।
দাঙ্গা বিধ্বস্ত নোয়াখালিতে মায়া ঘোষ
১৯৪৫ সালে কস্তুরবা ট্রেনিং নিতে চলে যান তিনি বম্বে। ১৯৪৬ সালে নোয়াখালি দাঙ্গার পর নোয়াখালিতে গিয়ে রিলিফের কাজ করেন তিনি দাঙ্গাবিধ্বস্ত গ্রামের অভ্যন্তরে।
কর্মপ্রেরণার এক নাম মায়া ঘোষ
জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নীরবে সমাজসেবার কাজ করে গেছেন তিনি বীরভূমের গ্রামে গ্রামে। নিরলস, শ্রান্তিহীন তাঁর কর্মপ্রেরণা।
উপসংহার :- মায়া ঘোষ ছিলেন এক নিভীক ও আদর্শনিষ্ঠ স্বাধীনতা সংগ্রামী, যিনি নিজের জীবনকে দেশের মুক্তির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর সংগ্রামী মনোভাব, দেশপ্রেম এবং নারী সমাজকে সংগঠিত করার প্রচেষ্টা ভারতীয় স্বাধীনতা ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। তিনি প্রমাণ করেছিলেন যে নারীরাও দেশের জন্য আত্মত্যাগে সমানভাবে সক্ষম। মায়া ঘোষের জীবন ও কর্ম আজও দেশপ্রেম, সাহস এবং সমাজসেবার অনুপ্রেরণা জোগায়। তাঁর অবদান ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
(FAQ) মায়া ঘোষ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য ?
মায়া দেবী ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক সাহসী নারী বিপ্লবী, যিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিভিন্ন গোপন বিপ্লবী সংগঠন ও নারী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি নারী সমাজকে জাগ্রত করেছিলেন এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণের কারণে তিনি সম্ভবত কারাবাস ভোগ করেছিলেন, যদিও সুনির্দিষ্ট তথ্য অপ্রতুল।
মায়া ঘোষের দেশপ্রেম, সাহসিকতা ও নারী জাগরণের প্রতি নিষ্ঠা তাঁকে ইতিহাসে এক অনুপ্রেরণামূলক চরিত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
তাঁর জীবন শেখায় যে আত্মত্যাগ, সাহস এবং দৃঢ় সংকল্পের মাধ্যমে সমাজ ও দেশের জন্য যে কোনো পরিবর্তন সম্ভব।