আশালতা সেন

সংগ্রামী আশালতা সেন নারী শক্তি, সাহিত্য ও নিষ্ঠার এক বিরল মিশ্রণ। তিনি নারী সংগঠন গঠন, গান্ধী-চেতনা, সাহিত্য ও রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে নারী ক্ষমতায়ন ও সামাজিক পরিবর্তনে কাজ করেছে।

Table of Contents

বিপ্লবী আশালতা সেন

ঐতিহাসিক চরিত্রআশালতা সেন
জন্ম৫ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৪ খ্রি
জন্মনোয়াখালী (বর্তমানে বাংলাদেশ)
পেশাকবি, স্বাধীনতা সংগ্রামী, সমাজ সংস্কারক, নারী সংগঠক
প্রধান অবদানবঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন, স্বদেশী আন্দোলন, গান্ধীবাদী সামাজিক কর্ম
সাহিত্যকর্ম‘উৎস’, ‘উচ্ছ্বাস’, ‘বিদ্যুৎ’, ‘ছোটোদের ছড়া’, আত্মজীবনী
রাজনৈতিক ভূমিকা১৯৪৬ সালে বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত; পূর্ব পাকিস্তান বিধানসভাতেও ছিলেন
নারী আন্দোলনগান্ধারিয়া মহিলা সমিতি, জাতীয় মহিলা সংঘ, নারিকর্মী শিক্ষা কেন্দ্র
কারাবরণলবণ সত্যাগ্রহভারত ছাড়ো আন্দোলন-এ অংশ নিয়ে বহুবার বন্দি হন
পরবর্তী জীবন১৯৬৫ সালে ভারতে চলে আসেন; মুক্তিযুদ্ধে পরোক্ষ সহায়তা দেন
ঐতিহাসিক ভূমিকানারীর ক্ষমতায়ন, স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব, শিক্ষা ও সংস্কারমূলক কাজ
মৃত্যু১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৬, দিল্লি, ভারত

আশালতা সেন

ভূমিকা :- আশালতা সেন ছিলেন একজন বিশিষ্ট নারী স্বাধীনতা সংগ্রামী, সমাজ সংস্কারক, কবি ও নারী আন্দোলনের অগ্রদূত। তিনি ব্রিটিশ বিরোধী স্বদেশী আন্দোলন থেকে শুরু করে ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের বিভিন্ন পর্যায়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই জাতীয়তাবাদী চেতনার বীজ তার মধ্যে গড়ে ওঠে, বিশেষ করে বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে লেখা তার কবিতার মাধ্যমে। আশালতা সেনের জীবন ছিল সাহিত্য, আদর্শ ও সংগ্রামের অপূর্ব মিলনস্থল।

আশালতা সেনের জন্ম

১৮৯৪ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি নোয়াখালিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন আশালতা সেন।

বিপ্লবী আশালতা সেনের পিতামাতা

তাঁর পিতা বগলামোহন দাশগুপ্ত নোয়াখালি জজকোর্টের উকিল ছিলেন; মাতা মনোদা দাশগুপ্ত। পিতৃভূমি তাঁর ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের মধ্যে বিদগাঁও গ্রামে।

আশালতা সেনের সাহিত্যানুরাগ

ছোটবেলা থেকেই আশালতা সেনের কবিতা রচনা করার অভ্যাস ছিল। বঙ্গভঙ্গ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আন্দোলন আরম্ভ হয় ১৯০৭ সালে। সেই বছরেই ‘অন্তঃপুর’ নামক এক মাসিক পত্রিকায় প্রকাশিত বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তাঁর একটি জাতীয়ভাবমূলক কবিতা তখনই লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বয়স তখন তাঁর মাত্র দশ বছর। এই সাহিত্যানুরাগ তার জীবনে ক্রমে বিকশিত হয়। পরিণত বয়সে তিনি বাল্মীকির মূল রামায়ণ থেকে ‘যুদ্ধকাণ্ড’টি সংক্ষিপ্ত আকারে বাংলা কবিতায় অনুবাদ করে প্রকাশ করেন।

স্বদেশীব্রতে আশালতা সেনের প্রথম কাজ

১৯০৫ সালের অক্টোবর মাসে যখন বঙ্গ-ব্যবচ্ছেদ কাজে পরিণত হয় তখন আশালতা সেনের মাতামহী নবশশী দেবী, সুশীলা সেন, কমলেকামিনী গুপ্তা প্রমুখ মহিলাগণ ‘মহিলা সমিতি’, ‘স্বদেশী ভাণ্ডার’ ইত্যাদি স্থাপন করে বিক্রমপুর অঞ্চলে স্বদেশী প্রচারে উদ্যোগী হন। এই সময় নবশশী দেবী বিলাতী বর্জনের সংকল্পপত্র দৌহিত্রী আশালতাকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে স্বদেশীব্রতে দীক্ষিত করেন এবং গ্রামের মেয়ে ও বৌদের স্বাক্ষর করার ভার নাতনী আশালতাকেই দেন। ১১ বছর বয়সের মেয়েটি গ্রামের বাড়ী বাড়ী ঘুরে স্বাক্ষর করাতে থাকেন। এই তাঁর প্রথম দেশের কাজ।

আশালতা সেনের স্বাধীনতা লাভের আকাঙ্খা

ক্রমে দিদিমা নবশশী দেবীর প্রেরণায় আশালতা সেন টডের রাজস্থান, শিখযুদ্ধের ইতিহাস, মণিপুরের টিকেন্দ্রজিতের কাহিনী, ম্যাৎসিনি, গ্যারিবল্ডির জীবনী ইত্যাদি নানা পুস্তক পাঠ করতে থাকেন; ওরই মধ্যে কখন তাঁর মানসলোকে নিজের দেশের স্বাধীনতা লাভের আকাঙ্খা বীজ উপ্ত হয়ে যায়।

বিপ্লবী আশালতা সেনের সংসারজীবন

অল্পবয়সেই তাঁকে সংসারজীবনে জড়িত হয়ে পড়তে হয়। সংসারজীবন যাপনের কয়েক বছর পরে ১৯১৬ সালে তাঁর স্বামী সত্যরঞ্জন সেনের অকালমৃত্যুর পর তিনি একটি শিশুপুত্র নিয়ে অত্যন্ত বিপর্যন্ত অবস্থায় পতিত হন।

শিল্পাশ্রম স্থাপনে আশালতা সেনের অবদান

১৯২১ সালের অসহযোগ আন্দোলন-এর সময় মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ তাঁকে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করে। তিনি তখন কর্মক্ষেত্রে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ঢাকা গেণ্ডারিয়ায় তাঁর শ্বশুরমহাশয়ের সহায়তায় নিজেদের বাড়ীতে মহিলাদের জন্য ‘শিল্পাশ্রম’ নামে একটি বয়নাগার তিনি স্থাপন করেন।

গান্ধীজীর বাণী ও খদ্দরের কথা প্রচার

তিনথানা ফ্লাই শাটল তাঁত যখন মহিলাদের হাতে সশব্দে চলতে থাকত তখন সেই তাঁত বোনার সঙ্গে সারা পাড়াময় যেন গান্ধীজীর বাণী ও খদ্দরের কথাই প্রচারিত হত। মহিলাদের নিজেদের হাতে তাঁত বোনার কাজ দেখতে পাওয়া তখনকার দিনে দুর্লভ ছিল। পাড়ার মহিলাগণ এই খদ্দর বোনার কাজ দেখতে ভীড় করে এসে দাঁড়াতেন।

কংগ্রেসে আশালতা সেনের যোগদান

১৯১২ সালে ঢাকা জেলার মহিলা প্রতিনিধিরূপে তিনি ডেলিগেট হয়ে যোগদান করেন গয়া কংগ্রেসে। সেই অবধি কংগ্রেসের সঙ্গে তিনি অচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ হন।

আশালতা সেন কর্তৃক গেণ্ডারিয়া মহিলা সমিতি গঠন

মহিলাদের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগ্রত করা এবং গান্ধীজীর বাণী প্রচার করার উদ্দেশ্যে ১৯২৪ সালে তিনি সরমা গুপ্তা ও সরযুবালা গুপ্তার সহযোগিতায় ‘গেণ্ডারিয়া মহিলা সমিতি’ সংগঠন করেন। সমিতির মহিলাগণ নিজেরাই খদ্দরের বোঝা কাঁধে নিয়ে অনেক দূরে দূরে চলে যেতেন এবং ঘরে ঘরে গিয়ে খদ্দর বিক্রি ও প্রচারকার্য করতেন।

গেণ্ডারিয়া মহিলা সমিতির বার্ষিক শিল্পমেলা

সমিতির বার্ষিক শিল্পমেলাতে একটি ‘গান্ধীমণ্ডপ’ তৈরী করা হত। তাতে বুদ্ধদেব থেকে গান্ধীজী পর্যন্ত বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা সম্বলিত মূর্তি ও ছবি রাখা হত। কিভাবে আড়াই হাজার বৎসর পূর্বে বুদ্ধদেবের প্রচারিত অহিংসার বাণী গান্ধীজীর ভিতর দিয়ে বর্তমান যুগে নূতনভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে সে সম্বন্ধে মেলায় সমবেত লোকদের বুঝিয়ে দেওয়া হত। এই ‘গান্ধীমণ্ডপ’টি সকলের নিকট একটি আকর্ষণের বস্তু ছিল।

A.I.S.A.-এর সদস্য আশালতা সেন

১৯২৫ সালে আশালতা সেন নিখিল ভারত কাটুনী সংঘের (A.I.S.A.) সদস্য হন এবং ব্যাপকভাবে খদ্দর প্রচারে ব্রতী হন।

আশালতা সেন কর্তৃক কল্যাণ কুটির আশ্রম স্থাপন

১৯২৭ সালে ঢাকায় মহিলা কর্মী তৈরী করার জন্ম তিনি ‘কল্যাণ কুটির আশ্রম’ স্থাপন করেন। আশ্রম গঠনে তাঁর শ্বশুর এবং ‘বিদ্যাশ্রম’-এর প্রতিষ্ঠাতা ধীরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত উভয়ের নিকট থেকে তিনি সহায়তা পান।

বিপ্লবী আশালতা সেন কর্তৃক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা

১৯২৯ সালে গেণ্ডারিয়ার নিকটবর্তী জুডান নামক একটি নমঃশূদ্রপ্রধান গ্রামে শিক্ষাবিস্তারের উদ্দেশ্যে সরমা গুপ্তার সহযোগিতায় তিনি ‘জুডান শিক্ষা-মন্দির’ নামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এই অঞ্চলে তাঁরা ম্যাজিক ল্যান্টার্ন সহযোগে বক্তৃতা দিয়ে অনুন্নত সম্প্রদায়ের গ্রামবাসীদের চিত্ত আকৃষ্ট করতেন এবং গ্রামবাসীদের নিজেদের উন্নতি সম্পর্কে সচেতন করতে প্রয়াস পেতেন। তাদেরও যে শিক্ষা পাবার, উন্মেষিত হবার, মানুষের মতো মানুষ হবার অধিকার আছে এইসব ছবি যখন তারা চোখের সামনে দেখত তখন আকৃষ্ট ও মুগ্ধ হত। তারা এক অনাগত সুখের স্বপ্ন দেখত যেদিন তাদের মতো দুঃস্থ এবং অবহেলিত সম্প্রদায়ের লোকেরাও শিক্ষিতের সম্মানে সম্মানিত হবে, সকল মানুষের ভালবাসা পাবে। এর মধ্য দিয়ে তারা চিনে নিত গান্ধীজীকে, ভালবাসত তাঁর আদর্শকে এবং কংগ্রেসকে। ‘জুডান শিক্ষা-মন্দির’-এর ক্রমবিকাশের কাহিনী সরমা গুপ্তার জীবনীতে দেওয়া হয়েছে।

আইন অমান্য আন্দোলন পরিচালনা

১৯৩০ সালের ২২শে মার্চ আশালতা সেন ও সরমা গুপ্তা তাঁদের সহ-কর্মীদের নিয়ে ঢাকায় ‘সত্যাগ্রহী সেবিকাদল’ সংগঠন করেন। তাঁরা এইসব কর্মীর দ্বারা আইন অমান্য আন্দোলন পরিচালনা করতে থাকেন। ১৯৩০ সালের ১৩ই এপ্রিল নোয়াখালি গিয়ে আশালতা সেন, সরমা গুপ্তা, উষাবালা গুহ প্রমুখ লবণ আইন অমান্য করেন। নোয়াখালি থেকে বে-আইনী লবণজল তাঁরা ঢাকায় নিয়ে এলেন। ঢাকায় বুড়ীগঙ্গা নদীর তীরে করোনেশন পার্কের বেদীর উপর উনুন জ্বালিয়ে তাঁরা যখন একটি মৃৎপাত্রে লবণ জ্বাল দিতে থাকেন তখন হাজার হাজার লোকের সমুদ্র যেন প্রবল উৎসাহে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠল। লবণ তৈরীর পর কাড়াকাড়ি পড়ে গেল কে কত তাড়াতাড়ি বে-আইনী লবণ কিনে আগেভাগে গ্রেপ্তার হতে পারবেন। এইভাবে তাঁরা লবণ আইন অমান্য আন্দোলন পরিচালনা করতে থাকেন। আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার ও কারাদণ্ডিত হন সত্যাগ্রহী সরযুবালা গুপ্তা, সুনীতি বসু, কামিনী বসু ও প্রতিভা সেন।

সত্যাগ্রহ সম্পর্কে আশালতা সেনের বক্তৃতা ও প্রচার

১৯৩০ সালের বিভিন্ন সময়ে আশালতা সেন ঢাকার বাইরে গিয়েও কংগ্রেস আন্দোলনের প্রচারকার্য পরিচালিত করেন। শ্রীহট্টের সরলাবালা দেবের আহ্বানে তিনি সেখানে গিয়ে তাঁর সঙ্গে শ্রীহট্টের বহু জায়গায় সত্যাগ্রহ সম্পর্কে বক্তৃতা ও প্রচারকার্য করতে থাকেন। ঐ উদ্দেশ্যেই সুধাময়ী দাশগুপ্তের আহ্বানে তিনি ময়মনসিংহ ও জামালপুরে যান এবং পঙ্কজিনী দেবীর আহ্বানে চাঁদপুরে যান। তাঁর আহ্বানে জনসাধারণ গান্ধীজী ও কংগ্রেসের প্রতি একটা চুম্বকের আকর্ষণ বোধ করত, তারা আন্দোলনে ঝাঁপ দিত দলে দলে।

আশালতা সেন কর্তৃক বিক্রমপুর রাষ্ট্রীয় মহিলা সংঘ স্থাপন

১৯৩১ সালে আশালতা সেন বিক্রমপুর রাষ্ট্রীয় মহিলা সংঘ সংগঠন করেন। এই সংঘের বহু শাখা তিনি বিক্রমপুরের নানা স্থানে পরিভ্রমণ করে স্থাপন করেন। ফলে ১৯৩১ সালের আইন অমান্য আন্দোলনে বিক্রমপুরের মহিলাগণ বহু সংখ্যায় যোগদান করবার প্রেরণা লাভ করেন ও কারাবরণ করেন। এই সময় গ্রামের পর গ্রাম পরিভ্রমণ করে যেতে যেতে আশালতা সেন ও তাঁর সহধর্মীগণ দুপরে ও সন্ধ্যায় যেমন হিন্দুবাড়ীতে আশ্রয়গ্রহণ করতেন তেমনি কখনো কখনো মুসলমান বাড়ীতেও আশ্রয় গ্রহণ করতেন। হিন্দু মুসলমান নরনারী নির্বিশেষে সকলেরই কংগ্রেসের প্রতি এত সহানুভূতি ছিল যে, সর্বত্রই তারা সমাদর ও সহযোগিতা পেয়েছেন।

এক করুন কাহিনীর সাক্ষী আশালতা সেন

এই সময়কার একটি করুণ কাহিনী আছে। একদিন দুপুরে তাঁরা একটি গ্রামে এসে উপস্থিত হন। সেখানে একটি মুসলমান তাঁতী বাড়ীতে তাঁরা আশ্রয় গ্রহণ করেন। আশালতা সেন দেখলেন একটি সদ্যবিধবা মুসলমান বধু তাঁতের কাপড় বুনবার জন্য ‘তানা হাঁটছেন’। তাঁর বৃদ্ধা শাশুড়ী বাড়ীর এককোণে বসে ১০-১১ দিন পূর্বে মৃত যুবক পুত্রের জন্য উচ্চৈঃস্ববে ক্রন্দন করছেন। বিধবা বধূটি আশালতা সেনকে দেখে তাঁর ‘তানা হাঁটা’ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রেখে কাছে এসে অশ্রুজলে বক্ষ ভাসিয়ে তাঁর সদ্যবৈধব্যের কাহিনী বললেন। কিন্তু দরিদ্রের শোক করবার জন্যও সময় নেই। তিনি তখনি আবার ‘তানা হাঁটতে’ উঠে গেলেন। কারণ ঐ ‘তানা হেঁটে’ তিনি যা উপার্জন করবেন তাই দিয়ে তাঁর ২-৩ টি শিশু-সন্তানসহ নিজের অন্নসংস্থান হবে। কাজেই সদ্যমৃত স্বামীর জন্য বুক ভেঙে গেলেও কিছুক্ষণ বসে বুক হালকা করবার অবসর তাঁর নেই। তাঁর দেহে একটি অনাগত শিশুর শীঘ্র আবির্ভাবের সম্ভাবনা সুস্পষ্ট। এই করুণ দৃশ্যটি আশালতা সেনের মনে চিরদিনের মতো গাঁথা হয়ে যায়।

আশালতা সেন কর্তৃক নারীকর্মী শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন

১৯৩১ সালের আগস্ট মাসে ঢাকাতে আশালতা সেন ‘নারীকর্মী শিক্ষাকেন্দ্র’ স্থাপন করেন। শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষাদাতার আসন গ্রহণ করেন মানভূমের কংগ্রেস নেতা নিবারণ দাশগুপ্ত। কংগ্রেস ও মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ সম্বন্ধে তিনি কর্মীদের এমনভাবে শিক্ষা দিতেন এবং এমন প্রেরণা দিতেন যে, কর্মীগণ আন্দোলনের সময় প্রচারকার্যের সঙ্গে কর্মপ্রেরণা বিস্তার করতে করতে দলে দলে নতুন কর্মীসহ গ্রেপ্তার হতেন। এই শিক্ষা শিবিরে এসে ঢাকা শহর ও বিক্রমপুরের প্রায় ৫০ জন কর্মী শিক্ষা গ্রহণ করেন। এঁদের মধ্যে শ্রীহট্টেরও চারজন মহিলা ছিলেন।

গুরু নিবারণ দাশগুপ্তের অবদান

প্রথমে মেদিনীপুরে কাঁথির একটি গ্রামে এরূপ নারীকর্মী শিক্ষাকেন্দ্র খোলা হয়। তা শুনে ঢাকার এবং পরে শ্রীহট্টের কর্মিগণও ঐরূপ শিক্ষাকেন্দ্র খোলেন। তিন জায়গারই শিক্ষাগুরু ছিলেন নিবারণ দাশগুপ্ত। পিতাকে ঘিরে বসে যেমন করে মেয়েরা তন্ময় হয়ে গল্প শুনে শিক্ষাগ্রহণ করে ঠিক তেমনি করে এই পিতাসম গুরু তাঁদের শিক্ষা দিতেন। মেদিনীপুরের শিক্ষাকেন্দ্র সম্বন্ধে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, তিনি একবার ঐরূপ শিক্ষাদান কালে উপস্থিত হয়ে দেখেন যে, মেয়েরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো ঋষিকল্প নিবারণ দাশগুপ্তের কথা শুনছেন, কারো মাথার কাপড় সরে গেছে, কারো বেশবাস অসঙ্গত, কেউ সন্তানকে স্তন্য়পান করাচ্ছেন কিন্তু সেদিকে তাঁদের ভ্রূক্ষেপও নেই-কেবল একাগ্রমনে গুরুর কথা শুনেই যাচ্ছেন। হঠাৎ সেই সময়ে বাইরের লোক উপস্থিত হওয়ামাত্র কর্মীরা লজ্জা ও সঙ্কোচে বিব্রত ও সজাগ হয়ে উঠলেন। ঋষি নিবারণ দাশগুপ্ত ও সংসারী আগন্তুকের মধ্যে এই ছিল পার্থক্য। যে কয়েকটি কারণে মেদিনীপুর, ঢাকা ও শ্রীহট্টের মহিলা-কর্মিগণ এত অধিক সংখ্যায় আন্দোলনে যোগদান করার ও কারাবরণ করার প্রেরণা লাভ করেন তার মধ্যে গুরু নিবারণ দাশগুপ্তের শিক্ষা ও প্রেরণা একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে।

১৪৪ ধারা ভঙ্গ করতে আশালতা সেনের প্রয়াস

১৯৩২ সালের ৪ঠা জানুয়ারি গান্ধীজীর গ্রেপ্তারের পরে ঢাকাতে আইন অমান্য আন্দোলনের জন্য ব্যাপকভাবে সভা-সমিতি দ্বারা প্রচারকার্য চলতে থাকে। ১৯৩২ সালের জানুয়ারি মাসেই ‘গেণ্ডারিয়া মহিলা সমিতি’কে বে-আইনী ঘোষণা করা হয় এবং ‘কল্যাণ কুটির’-এর কর্মীদের আবাসগৃহও পুলিস তালাবন্ধ করে রাখে। সেই সময় আশালতা সেন শুধু ঢাকা শহরের নয়, বিক্রমপুরের অনেক মহিলাদেরও ঢাকায় এবং অন্যান্য স্থানে এনে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করাতে থাকেন। তিনি বিক্রমপুরের নশঙ্কর গ্রামে গিয়ে স্থানীয় কর্মী কিরণবালা কুশারী ও প্রভাসলক্ষ্মী দেবীর সহায়তায় ‘নশঙ্কর মহিলা শিবির’ স্থাপন করেন। তিনি বিক্রমপুরের মহিলাদের নিকট থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পান। গ্রেপ্তারের কিছু পূর্বে সরযূবালা সেনের উপর তিনি ‘নশঙ্কর মহিলা শিবিব’ পরিচালনার ভার অর্পণ করেন।

গ্রামে গ্রামে আশালতা সেনের বক্তৃতা প্রদান

এই গ্রাম পরিভ্রমণ-কালে তাঁরা গ্রাম্য দফাদারদের যথেষ্ট সহানুভূতি পেতেন। আশালতা সেন তখন বিক্রমপুবে দৈনিক ৪/৫টি গ্রামে বক্তৃতা দিয়ে ঘুরতেন। গ্রামের সরকারী দফাদারেরা মিটিং-এ বসে খুব আগ্রহের সঙ্গে কিছুক্ষণ বক্তৃতা শুনত। তারপর ধীরে সুস্থে উঠে থানায় গিয়ে এমন সময় সংবাদ দিত যে, থানার লোক আসবার আগেই সভার কাজ শেষ হয়ে যেত। কংগ্রেস আন্দোলনের প্রতি দফাদারদের এরূপ সহানুভূতি না পেলে তাঁদের পক্ষে গ্রামে গ্রামে গিয়ে দিনের পর দিন অজস্র মিটিং করা অনেকসময়ই দুঃসাধ্য হত। দফাদারদের মধ্যে অনেকেই মুসলমান ছিলেন।

আশালতা সেনের অফুরন্ত কর্মপ্রেরণা

তারা যখন গ্রামের পর গ্রাম এইভাবে শত শত লোকের ভিতর বক্তৃতা দিয়ে অগ্রসর হতে থাকতেন তখন আশালতা সেন ও তাঁর সহকর্মীগণ শেষরাত্রে এক গ্রাম ছেড়ে রওনা হতেন এবং সন্ধ্যার পর যে গ্রামে পৌঁছাতেন সেখানে সারাদিনের পর বিশ্রাম গ্রহণ করতেন। মাঝখানে কেবল দুপুরে কোনো গ্রামে খেয়ে নিতেন। রাতের বিশ্রামের পর পুনরায় পরদিন প্রত্যূষের যাত্রা। দুপুরের খাওয়া এবং রাতের বিশ্রাম ছাড়া তাদের ছিল প্রায় অবিরাম যাত্রা। ১৯৩২ সালের ৬ই জানুয়ারি থেকে আরম্ভ করে ৭ই মার্চ গ্রেপ্তার হওয়ার পূব পর্যন্ত তিনি ঢাকা জেলার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ৬১টি গ্রামে ও শহরে ঝড়ের বেগে ঘুরে আন্দোলন পরিচালনা করে গেছেন, কিন্তু তাতে তাঁর কখনো ক্লান্তি বা অবসাদ আসে নি অথবা অসুখও করে নি। তাঁর ছিল অফুরন্ত কর্মপ্রেরণা।

মহিলা সত্যাগ্রহীদের উপর পুলিশের অত্যাচার

ঢাকা জেলার যে সব সত্যাগ্রহী ১৯৩২ সালের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে কারাবরণ করেন তাঁদের মধ্যে অনেকেই আশালতা সেনের প্রচেষ্টায় আন্দোলনে যোগদান করেন। ‘সত্যাগ্রহী সেবিকাদল’-এর কর্মিগণ ঢাকা জেলার ১৩৫টি গ্রামে ঘুরে আন্দোলন পরিচালনা করেছিলেন। কারারুদ্ধ মহিলা ছাডাও বহুসংখ্যক মহিলা আন্দোলনে যোগদান করার ফলে পুলিসের হাতে লাঞ্ছনা ভোগ করেন। পুলিস অনেক মহিলাকে গ্রেপ্তার করে বহুদূরের গ্রামে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দিত। অনেককে গ্রেপ্তার না করে তাঁদের পশ্চাতে এমন ভাবে ধাওয়া করত যেন তাঁরা কোথাও আশ্রয় না পান।

পুলিশের চরম অত্যাচারের স্বীকার সুরবালা সেন

সুরবালা সেনের পরিচালনায় শোভাযাত্রাকারী এমনি একদল মহিলাকে পুলিস দুইদিন দুইরাত্রি ধরে সঙ্গে সঙ্গে থেকে অবিরাম মাঠঘাটের ভিতর দিয়ে ঘোরাতে থাকে। অবশেষে তাঁদের একটা নৌকায় উঠিযে নিয়ে মাঘ মাসের শীতের মধ্যে রাত্রির গভীর অন্ধকারে এক নির্জন নদীর ধারে নামিয়ে রেখে পুলিস নৌকা নিয়ে চলে যায়। বিপন্ন মহিলাগণ তখন মাইলের পর মাইল দুর্গম মাঠের পথ পায়ে হেঁটে পার হয়ে, অনাহারে অনিদ্রায় প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায় একটা গ্রামে পৌঁছে গ্রামবাসীদের সাহায্য পান। সুরবালা সেন ও তাঁর সহকর্মিগণ এর পরেও আন্দোলনে পুনরায় অংশগ্রহণ করে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। এমনই গভীর ছিল তখন গান্ধীজীর ও কংগ্রেসের প্রভাব এবং স্বদেশসেবার প্রেরণা।

সত্যাগ্রহী মহিলাদের উপর লাঠিচার্জ

আন্দোলনের সময় এই সত্যাগ্রহী সেবিকাদলের মহিলাদের উপর প্রায়ই লাঠিচার্জ করা হত। ফলে সতেরো জন মহিলা আহত হন। তার মধ্যে কমলা দেবী, হেমনলিনী গাঙ্গুলী ও সুনীতি বসুর আঘাত গুরুতর ছিল। লাঠিচার্জ এবং পুলিসের জুলুম তাঁদের যতই নির্যাতন করেছে, বাঙালির জেদ ততই বেড়ে চলেছে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে তারা সভাসমিতি করতেন ও চৌকিদারী ট্যাক্স বন্ধ আন্দোলন করতেন। ফলে গ্রামবাসীদের মালপত্র ক্রোক করা হত। মালপত্র ক্রোকের দ্বারা সাধারণ গৃহস্থদের বহু ক্ষতি হলেও তাঁরা তাতে বিচলিত হতেন না। তা ছাড়া তাঁরা ইউনিয়ন বোর্ড অফিস ও ইউনিয়ন কোর্টে পিকেটিং করতেন, মদ গাঁজা ও বিলাতী দ্রব্যের দোকানে পিকেটিং করতেন এবং সাইক্লোস্টাইল করে বে-আইনী প্রচারপত্র বিলি করতেন।

গ্রেপ্তার আশালতা সেন

আশালতা সেন ১৯৩২ সালের ৭ই মার্চ গ্রেপ্তার হন এবং দুটি মামলার শাস্তিভোগের পর ১৯৩৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মুক্তিলাভ করেন। মুক্তি লাভের পর তিনি বিভিন্ন গঠনমূলক কাজে লিপ্ত হন। এই সময় থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত তিনি ঢাকা জেলা কংগ্রেসের সহ-সভানেত্রী ছিলেন।

উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে আশালতা সেনের ভ্রমণ

১৯৩৯ সালে উত্তরবঙ্গের কংগ্রেসকর্মী শশীবালা দেবীর অনুরোধে আশালতা সেন তাঁর সহকর্মী হেমাঙ্গিনী দেবী এবং বরিশালের ইন্দুমতী গুহঠাকুরতাকে সঙ্গে নিয়ে দিনাজপুর, বগুড়া, রাজসাহী, পাবনা, রংপুর, গাইবান্ধা প্রভৃতি উত্তরবঙ্গের বহু স্থানে ভ্রমণ করেন। সেখানে তিনি যেমন কংগ্রেসের প্রচারকার্য করেন তেমনি ‘কংগ্রেস মহিলা সংঘ’ গঠনে স্থানীয় মহিলা-কর্মীদের সহায়তা করেন। পশ্চিমবঙ্গ-এর বর্ধমান, হাওড়া, বাঁকুড়া, ২৪ পরগনা, নদীয়া, খুলনা ইত্যাদি জেলাতেও তিনি কংগ্রেসের কার্যের জন্য পরিভ্রমণ করেন।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে আশালতা সেন

১৯৪২ সালের ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে তিনি যোগদান করেন। ঢাকার তালতলা অঞ্চলে পুলিসের গুলীতে নিহত তরুণ যুবকদের জন্য আহত এক শোকসভার সশস্ত্র সৈন্য দ্বারা বেষ্টিত হয়ে তিনি অন্যান্য কংগ্রেস-কর্মীসহ গ্রেপ্তার হন এবং ৮ মাস কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। ১৯৪৩ সালে তিনি ঢাকা জেল থেকে মুক্তিলাভ করেন।

সেবকার্যে আশালতা সেন

কারামুক্তির পরেই এসে পড়লেন তিনি দুর্ভিক্ষ-কবলিত দেশের মধ্যে। তিনি তখন ঢাকা শহর ও তার পাশের গ্রামগুলির মধ্যে তাদের সেবাকার্যে নিযুক্ত থাকেন।

হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ঐক্য ও শান্তি স্থাপনের প্রচেষ্টায় আশালতা সেন

১৯৭৬ সালে তিনি বঙ্গীয় ব্যবস্থা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ঐ সালের নভেম্বর মাসে তিনি নোয়াখালির দাঙ্গাবিধ্বস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করেন। সেখানে মহাত্মাজীর সঙ্গে দেখা করে তিনি ঢাকা জেলার অবস্থা জ্ঞাপন করেন। ঢাকার অবস্থাও তখন শোচনীয় ছিল। তাই তিনি সেখান থেকে ফিরে এসে বিক্রমপুর অঞ্চলে গিয়ে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ঐক্য ও শান্তি স্থাপনের প্রচেষ্টায় নিযুক্ত থাকেন।

পূর্ব-পাকিস্তানে আশালতা সেন

১৯৪৭ সালের দেশ-বিভাগের পর থেকে তিনি পূর্ব-পাকিস্তানেই অবস্থান করছেন এবং সেখানে বিভিন্ন গঠনমূলক কাজে নিযুক্ত থাকেন। এই কাজে তিনি তাঁর দীর্ঘকালের সহকর্মী হেমাঙ্গিনী দেবীর সহায়তা পেয়েছেন।

আশালতা সেনের মৃত্যু

তিনি ১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৬ সালে দিল্লিতে মৃত্যুবরণ করেন।

উপসংহার :- নেত্রীস্তানীয়া নিরলস কর্মী আশালতা সেন আপন অন্তরে দেশসেবার অনির্বাণ প্রেরণা জালিয়ে নিয়ে বাংলার, বিশেষ ক’রে পূর্ববাংলার পল্লীতে পল্লীতে গিয়ে দেশপ্রেমের এস্টা প্রবল উন্মাদনা জাগিয়েছিলেন, ঘরের মায়েদের কন‍্যাদের সেদিন তিনি নিজের সঙ্গে কর্মস্রোতে প্রবাহিত ক’রে নিয়ে চলেছিলেন বিপুল আকর্ষণে। যে স্বল্পসংখ্যক কর্মী ও নেত্রী প্রাণপণ প্রচেষ্টায় পূর্ববাংলার নারীদের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনা জাগিয়ে তুলেছিলেন, আশালতা সেন তাঁদের অন্যতম।

(FAQ) আশালতা সেন সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য ?

১. আশালতা সেন কে ছিলেন?

আশালতা সেন ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী, কবি, সমাজ সংস্কারক এবং নারী আন্দোলনের নেত্রী। তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং নারীদের শিক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেন।

২. আশালতা সেন কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

আশালতা সেন ১৮৯৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি, তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের নোয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন, যা বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত।

৩. আশালতা সেনের প্রধান সাহিত্যকর্ম কী কী?

আশালতা সেনের প্রধান সাহিত্যকর্মগুলোর মধ্যে রয়েছে—‘উৎস’, ‘উচ্ছ্বাস’, ‘বিদ্যুৎ’, ‘ছোটোদের ছড়া’, এবং আত্মজীবনীমূলক রচনা।

৪. আশালতা সেন কোন আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন?

আশালতা সেন বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন, স্বদেশী আন্দোলন, গান্ধীবাদী অসহযোগ ও লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলন, এবং ১৯৪২ সালের ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

৫. আশালতা সেন কি কারাবন্দি হয়েছিলেন?

হ্যাঁ, আশালতা সেন লবণ সত্যাগ্রহ ও ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য বহুবার কারাবরণ করেছিলেন।

৬. স্বাধীনতার পর আশালতা সেন কী করেছিলেন?

দেশভাগের পর আশালতা সেন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) বিধানসভার সদস্য হন এবং পরে ১৯৬৫ সালে ভারতে চলে আসেন। এরপর তিনি সমাজসেবা ও সাহিত্যচর্চা চালিয়ে যান।

৭. আশালতা সেন কবে মারা যান?

আশালতা সেন ১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৬ সালে দিল্লিতে মৃত্যুবরণ করেন।

Leave a Comment