শীর্ষাসন হল যোগাসন গুলির মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আসন। শীর্ষাসন করার পদ্ধতি, শীর্ষাসন করার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
শীর্ষাসন
আমরা এখন যোগাসন গুলির মধ্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি আসন শীর্ষাসন। শীর্ষাসন করার পদ্ধতি ও শীর্ষাসন করলে কি কি উপকার পাবো সে সম্পর্কে জানবো।
শীর্ষাসন করার পদ্ধতি
প্রণালী-বজ্রাসনে বসুন। দু’হাত পরস্পর অঙ্গুলিবদ্ধ অবস্থায় কনুই পর্যন্ত মাটিতে রাখুন। সামনে ঝুঁকে মাথার তালু মাটিতে ঠেকান। হাতের আঙ্গুল মাথার পিছনে থাকবে। দু’হাঁটু বুকের কাছাকাছি আনুন। মাথা থেকে কোমর পর্যন্ত সোজা রেখে দু’পা একরে আস্তে আস্তে মাটি থেকে তোলার চেষ্টা করুন। মাটি থেকে পা তুলে হাঁটু ভেঙ্গে কিছুক্ষণ থাকা অভ্যাস হলে, পা উপরে তুলে সোজা মেলে দিন। এই অবস্থায় মাথা থেকে পা পর্যন্ত এক সরলরেখায় এবং পায়ের পাতা ও আঙ্গুল বেশ টানটানভাবে থাকবে। দেহের ভর থাকবে মাথার তালুতে; দু’টি হাত ভারসাম্য রক্ষা করবে। প্রথম দিকে দেওয়ালের সামনে অভ্যাস করা ভাল। শুরুতে ২৫/৩০ সে. করে ৩/৪ বার, পরে ২ মিনিট করে ২ বার করুন। শ্বাস স্বাভাবিক থাকবে।
শীর্ষাসনে অবস্থানের সময় বা অভ্যাসের পরে যদি শ্বাস নিতে চাপ লাগে, মাথা ভার বোধ হয়, তাহলে বুঝতে হবে অভ্যাসে কোনও ত্রুটি হচ্ছে।
শীর্ষাসন করার উপকারিতা
উপকারিতা – সারাদিন আমরা যত রকম কাজকর্ম, খেলাধূলা করি তার মধ্যে একমাত্র এই অবস্থানেই মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পায়। এই আসনে মাথায় প্রচুর রক্ত এসে জমা হয়, ফলে মস্তিষ্কস্থিত স্নায়ুকেন্দ্র, কোষসমূহ ও পিটুইটারী গ্রন্থি রক্ত থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদান সংগ্রহ ক’রে অধিক পুষ্ট ও কর্মক্ষম হয় এবং সামগ্রিকভাবে দেহের অন্যান্য স্নায়ু, পেশী ও যন্ত্রাদির কাজকর্মেও উন্নতি পরিলক্ষিত হয়। হৃৎপিণ্ড কিছুটা বিশ্রাম পায়। হজম ভাল হয়; কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। স্মৃতিশক্তি, শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়। মানসিক উত্তেজনা • হ্রাস করে ও সুনিদ্রা হয়। মানসিক পরিশ্রম, লেখাপড়া প্রভৃতিতে যাঁদের বেশী সময় ব্যয় হয়, তাদের পক্ষে শীর্ষাসন বিশেষ উপযোগী। সতর্কতা – চোখ, কান, নাক ও দাঁতের
রোগে সতর্কতার সাথে অভ্যাস করা প্রয়োজন।