হাতের পাঁচ
একদা কোনো এক বনে প্রকাণ্ড এক সিংহ ছিল। তার ছিল খুব রাগ। একদিন তার খুব ক্ষিধে পেয়েছিল। সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে গেল। তবু সে খাদ্যের সন্ধান পেল না। বনের সব জীবজন্তুগুলো গেল কোথায়। সব শুনশান। মনে মনে সে বেশ রেগে উঠলো। আর ওদিকে তার পেটের ভিতর ক্ষিধেয় চোঁ চোঁ করছিল। কিন্তু তার খাদ্য নেই।
এইসব সাত পাঁচ ভাবছিল সিংহ। হঠাৎ সে দেখতে পেল একটা খরগোশ জঙ্গলের ওই দিকটা দিয়ে ছুটে যাচ্ছে। সিংহ দৌড়ে গিয়ে খরগোশটাকে খপ্ করে ধরে ফেলল। তারপর যেই না সিংহ খরগোশটাকে খেতে যাবে এমন সময় সে দেখল একটা হরিণ তার প্রায় পাশ দিয়ে ছুটে পালাচ্ছে প্রাণভয়ে। সিংহ তখন মনে মনে ভাবল, এই ছোট্ট খরগোশটায় তার পেটের এক কোণাও ভরবে না। হরিণটা খেতে পারলে তার পেটের জ্বালা মিটবে। এই ভেবে সে খরগোশটাকে ছেড়ে হরিণটাকে ধরতে ছুটলো। আর এই সুযোগে খরগোশটা প্রাণ পেয়ে ছুটে পালালো।
এদিকে ক্ষুধার্ত সিংহ হরিণের পিছন পিছন ছুটেও তাকে ধরতে পারল না। কারণ হরিণটা প্রাণভয়ে ক্ষিপ্রগতিতে ছুটে পালিয়েছিল।
অগত্যা সিংহকে হতাশ হয়ে ফিরে আসতে হলো। আবার সে ভাবলো যাকগে, এখন এই ছোট্ট খরগোশটা খেয়েই পেট না ভরুক অন্ততঃ খিদের জ্বালা মেটানো যাক্। অতএব সিংহ যেখানে খরগোশটাকে ফেলে এসেছিল সেখানে এসে হাজির হলো। কিন্তু একি, খরগোশটা কই? সিংহ এখন বেশ বুঝতে পারলো নিশ্চয়ই পালিয়েছে। দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা। আর, সিংহ কি করে মজা দেখাবে? খরগোশটা যে পগার পার। সিংহের হাতের নাগালের বাইরে। অতএব যতোই সিংহ রাগে গরগর করুক, সে কিছুতেই আর খরগোশের নাগাল পেলো না। ফলে সে মনের রাগ মনে চেপে রেখে বললো – উচিত শিক্ষাই আমার হয়েছে। মুখের গ্রাস ফেলে রেখে আমি বেশির আশায় ছুটেছিলাম। তাই আমার এই দশা।
কিন্তু আমার ক্ষিধের কি হবে? এই জায়গায় তো আর কোনো জন্তুই আসবে না। খরগোশটা গিয়ে সবাইকে বলে দিয়েছে। অতএব হ্যাঁ, আমাকে এখন বেশ কিছুটা দূরে গিয়ে খাদ্য খুঁজতে হবে।
হাতের পাঁচ গল্পটির উপদেশ
হাতের পাঁচ গল্পটির উপদেশ হল “প্রয়োজনের সময় হাতের কাছে যা পাওয়া যায় তাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়”।
একসাথে ঈশপের গল্পগুলির উপদেশ বা নীতি কথাগুলি পড়ুন-