ঈশপের গল্প সমগ্র থেকে শিয়ালের শিক্ষা গল্পটি এবং শিয়ালের শিক্ষা গল্পটির উপদেশ দেওয়া হল। যা পাঠ করলে তোমরা অনেক আনন্দ পাবে ও সেই সাথে গল্পটির উপদেশ জানতে পারবে।
শিয়ালের শিক্ষা
একদা কোনো এক বনে সিংহ, শিয়াল আর গাধা অন্যান্য জীবজন্তুদের সঙ্গে থাকতো। একদিন সিংহ শিয়াল আর এক গাধাকে সঙ্গে করে শিকারে বের হলো। শিকারে বেরোবার সময় সিংহ সবাইকে বলে দিয়েছিল, আমরা তিনজনে যখন একত্রে থাকছি তখন শিকার যা পাবো তিনজনেই সমান ভাবে ভাগ করে নেব। সিংহের প্রস্তাব সকলেই মেনে নিল।
জঙ্গলের ভেতরে কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করবার পর শিকার মিলে গেল। একটা নাদুস নুদুস হরিণ। তিনজনে মিলেই হরিণটাকে মারল। তখন সিংহ গাধাকে বলল, ভাই গর্দভ, হরিণটাকে তুমিই আমাদের মধ্যে ভাগ করে দাও।
গাধা তখনই মাংস ভাগ করতে বসল। সে অনেকক্ষণ ধরে হরিণটাকে সমান তিন ভাগে ভাগ করল। তারপর সিংহকে বলল, নাও ভায়া, এর যে কোনো এক ভাগ পছন্দ করে নাও ।
গাধার কথা শুনে আর মাংসের ভাগ দেখে সিংহ তো রেগে কাঁই। সে হুংকার ছেড়ে তক্ষুনি গর্জন করে গাধার ঘাড়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল। তার খাবার এক চাপড়েই গাধা মরে গেল। রাগ কিছুটা ঠান্ডা হয়ে এলে সিংহ শিয়ালের দিকে তাকাল। বলল, পণ্ডিত ভাগটা এবারে তুমিই করে ফেল। তুমি তো আর গাধার মতো বোকা নও।
শিয়াল এতক্ষণ কাণ্ড দেখছিল আর সবকিছুর অর্থ বোঝবার চেষ্টা করছিল। দেখেশুনে ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরে গেছে যে মাংস ভাগ করবার ব্যাপারটা সিংহের একটা ছল মাত্র। সিংহ মুখে সমান ভাগের কথা বলছে বটে কিন্তু নিজের ভাগ অপছন্দ হলেই এই কথা তার মনে থাকবে না। তার তুলনায় সিংহের গায়ে জোরও বেশি। সে যা করবে তাই তাকে মেনে নিতে হবে।
শত হোক শিয়াল পণ্ডিত বলে কথা। গাধাকে চোখের সামনে মরতে দেখে তার শিক্ষা না হবার কথা নয়। সে সিংহের ভাগে সমস্ত মাংস সাজিয়ে দিল আর সামান্য এক টুকরো নিজের জন্য রাখল। সিংহ শিয়ালের ভাগ দেখে বেজায় খুশি। মুখে আর হাসি ধরে না তার। সিংহ হাসিমুখে বলল, বন্ধু সত্যিই তুমি শিয়াল পণ্ডিত। তুমি যেভাবে মাংস ভাগ করে দিয়েছে, এমনটি আর কেউ করতে পারত না।
শিয়ালের শিক্ষা গল্পটির উপদেশ
শিয়ালের শিক্ষা গল্পটির উপদেশটি হল- “অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা করতে হয়।”
একসাথে ঈশপের গল্পগুলির উপদেশ বা নীতি কথাগুলি পড়ুন-